ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ব্রাজিলে লকডাউন নিয়ে গভর্নর-প্রেসিডেন্ট দ্বন্দ্ব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫০, ১৫ মে ২০২০

অবহেলা আর অসেচতনতায় প্রতিদিনেই আক্রান্তের নতুন রেকর্ডে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। কম নয় প্রাণহানিও। ইতিমধ্যে যার শিকার হয়েছেন ২ লাখের বেশি মানুষ। মারা যাচ্ছেন রেকর্ড সংখ্যক। 

এমন পরিস্থিতিতেও ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে লকডাউনের পথে যেতে নারাজ প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। যা নিয়ে এক গর্ভনরের সঙ্গে রীতিমতো দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন তিনি। 

বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, ব্রাজিলে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৭৬১ জন মানুষ করোনার শিকার হয়েছেন। যাতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ প্রায় ৩ হাজারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৩৫ জন। এতে করে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৯৩ জনে পৌঁছেছে। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন প্রায় সাড়ে ৭৯ হাজার মানুষ। 

বিশেষজ্ঞদের মতে এ বৈশ্বিক ভাইরাসে ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশটি করোনার হটস্পট হিসেবে ধরা হচ্ছে।  

তবে, এসব কিছুতে এখন পর্যন্ত পাত্তাই দিচ্ছে ব্রাজিল সরকার। উল্টো যেসকল গর্ভনর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের নির্দেশনা জারি করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। 

গত বৃহস্পতিবার যেসব রাজ্য ও স্থানীয় সরকার অর্থনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে তাদের বিরুদ্ধে সমাবেশ করেছেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সে করা ওই সমাবেশে উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতাদের সাও পাওলো গভর্নরের সঙ্গে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান।

দেশটির অন্যতম জনবহুল রাজ্য সাও পাওলো। ফলে, সেখানকার সেলুন চালু রাখার নির্দেশনা দেন প্রেসিডেন্ট বোলসোনারো। তবে, সে ডিক্রি কার্যকর করতে অসম্মতি দেন স্থানীয় গর্ভনর জোয়াও ডোরিয়া। 

এ বিষয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মাত্র একজন মানুষ সাও পাওলোর ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তিনি ব্রাজিলের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সসম্মানে বলছি, গভর্নরের সঙ্গে আপনাদের কঠোর হতে হবে। কারণ এটা খুবই গুরুতর ইস্যু, এটা একটা যুদ্ধ। ব্রাজিল বিপদে আছে।’

ব্রাজিলের এক-তৃতীয়াংশ অর্থনৈতিক লেনদেন হয় সাও পাওলোর মাধ্যমে। দেশটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমিত হয়েছে এ অঞ্চলেই। ইতোমধ্যেই রাজ্যটির হাসপাতালগুলো রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

এ কারণে সাও পাওলোর গভর্নর স্থানীয়দের ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন এবং অনাবশ্যক সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগামী ৩১ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। ডোরিয়ার মতো আরও অন্তত ১০ গভর্নর বোলসোনারোর ডিক্রি না মানার ঘোষণা দিয়েছেন।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মানুষ মারা যাবে? দুর্ভাগ্যজনকভাবে, যাবে। লকডাউন থাক বা না থাক প্রাণহানি চলবেই। লকডাউনের কারণে অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলায় যত মানুষ প্রাণ হারাবে তার সংখ্যা আরও বেশি হবে।’

এদিকে ওয়াশিংটনে এক ব্রিফিংয়ে প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের সংক্রমণ রোগ বিভাগের প্রধান মার্কোস স্পিনাল বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে নিশ্চিতভাবে তা উদ্বেগজনক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, দেশটিতে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা করা হচ্ছে। 

গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক জরিপে বলা হয়, ব্রাজিলে সরকারিভাবে ঘোষিত সংখ্যার চেয়ে দেশটিতে করোনায় প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ গুণ বেশি হতে পারে। 

এআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি