দলীয় সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব: কলিমউল্লাহ
প্রকাশিত : ২০:১৪, ১ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৪৮, ৬ মার্চ ২০১৮
অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে সুপরিচিত। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে। সবশেষ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এর উপ-উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক এই চেয়ারম্যান জাপান স্টাডি সেন্টারের পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেন। এছাড়া তিনি ইংরেজি দৈনিক ‘এশিয়ান এইজ’ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
চলতি বছরের শেষে দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। আগামী নির্বাচনের বিষয়ে একুশে টেলিভিশন অনলাইনের মুখোমুখি হন নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। বর্তমান সংবিধান অনুসারে দলীয় সরকারের অধীনেই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে করা সম্ভব বলে মনে করেন বেসরকারি সংস্থা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ (জানিপপ) এর এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মোহাম্মদ রুবেল।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা যায়?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: আপতত একাদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহযোগ্য করতে নতুনভাবে ১৯৭২ এর গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ বা আরপিওর কোনো সংস্কার করার প্রয়োজন নেই বলেই আমি মনে করি। এখনও পর্যন্ত আরপিও-তে যা আছে তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে বর্তমান সংবিধান অনুসারেই সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্যভাবে অনুষ্ঠান করা সম্ভব।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী কিভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করা হলো নির্বাচন কমিশনের কাজ। আর সংবিধান অনুসারে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের হাতে রয়েছে। সেই ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে শক্তভাবে প্রয়োগ করতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নয়; ভোটারদের জন্যও সমতল মাঠ তৈরি করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী নিয়োগ করতে হবে। মাঠপর্যায় থেকে আসা সকল অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ আইন কতটা প্রয়োজন আছে বলে আপনি মনে করেন?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: এখনও পর্যন্ত যেভাবে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তার যথেষ্ট গ্রহণ যোগ্যতা রয়েছে। তাই নতুন করে আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইনের প্রয়োজন নেই।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: একাদশ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড তেরি করতে নতুনভাবে সীমানা নির্ধারণের প্রয়োজন রয়েছে কী?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: নতুন করে সংসদীয় আসনের জন্য সীমানা নির্ধারণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে আমি মনে করি না। যা করতে হবে তা হলো শুধু রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য নয়; বরং ভোটারদের জন্যও সমতল মাঠ তৈরি করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ আইন শৃঙ্খলা-বাহিনী নিয়োগ করতে হবে যাতে সহিংসতা এড়িয়ে যাওয়া যায়। সাংবিধানিকভাবে সকল আইন শক্তভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: একজন নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব বলে আপনি মনে করেন কী?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: সারা দুনিয়ায় দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাহলে আমাদের দেশে হলে সমস্যা কোথায়? আরপিও অনুসারে আইন প্রয়োগ করলেই সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: তাহলে কি একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আরপিওর কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: এই মুহূর্তে আর কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই বলেই আমি মনে করি।
একুশে টেলিভিশন অনলাইন: একজন নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?
নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ: মনে রাখতে হবে আর যাতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি না হয়। তাই নির্বাচন কমিশনকে অবশ্যই ওয়ান ভয়েসে কথা বলতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য নয়, সবাইকে একই বক্তব্য তুলে ধরতে হবে। যাতে রাজনৈতিক দলগুলো কোনভাবেই বিতর্ক আবিষ্কার করতে না পারে।
টিকে
আরও পড়ুন