ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

‘‘ছাত্রলীগ শুধু মিছিল মিটিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না’’

প্রকাশিত : ০০:০৪, ২৩ মে ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসু`র সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসিফ তালুকদার। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময় টিএসসিসহ নানা ইস্যুতে গণমাধ্যমের আলোচনায় এসেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন। ডাকসু`র প্রাপ্তি কী, ছাত্রলীগের সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে কী কাজ করবেন, শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনের সাথে। উঠে এসেছে ডাকসু ভিপি নুর প্রসঙ্গ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইন প্রতিবেদক আলী আদনান।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ ডাকসু নির্বাচনের পর কয়েকমাস অতিবাহিত হল। আপনার জায়গা থেকে এই সময়ের মধ্যে আপনাদের প্রাপ্তি কী বলে মনে করছেন?
আসিফ তালুকদারঃ দীর্ঘ আঠাশ বছর পর অচলায়তন ভেঙ্গে ডাকসু যাত্রা শুরু করল। দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র-ছাত্রীদের অভাব অভিযোগের ভিত্তিতে যে দাবিগুলো উঠেছিল আমরা চেষ্টা করছি সেগুলো নিয়ে কাজ করতে।
বিশেষ করে গত দু`আড়াই মাসে যে কাজগুলো হয়েছে আমি আমার জায়গা থেকে খুব সন্তুষ্ট। যেহেতু দীর্ঘদিন ডাকসু ছিলনা তাই ছাত্রছাত্রীদের মাঝে নানা চাওয়া পাওয়া, মান অভিমান জমা হয়েছে।
আমাদের মেয়াদ মাত্র এক বছরের। এই এক বছরে সব সমস্যার সমাধান করা বাস্তবিক অর্থেই সম্ভব না। যেহেতু ডাকসু নির্বাচন হয়েছে, ডাকসু কার্যকর হয়েছে, তাই আমরা চাচ্ছি এই কেবিনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ইতিবাচক কাজের ভিত্তি স্থাপন করা যার মাধ্যমে ডাকসু`র ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
আগামীতে যারা ডাকসু নেতৃত্বে আসবেন তারা নিশ্চয় আরো ভাল কাজ করতে পারবেন।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ ডাকসু`র নেতৃত্বে শুরু হয়েছে এমন কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজের কথা বলুন যেগুলোতে ডাকসু`র সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে আপনি ভূমিকা রেখেছেন।
আসিফ তালুকদারঃ বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভর্তি ফি নেওয়া হত। এটা দীর্ঘদিনের অভিযোগ। আমরা বিভাগগুলোর সাথে কথা বলে ফরমের দাম কমানো ও ভর্তি ফি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছি।
সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করেছে। আমার নিজ উদোগে টিএসসি কেন্দ্রীক কিছু কাজ হয়েছে। আমি চেষ্টা করছি টিএসসি কেন্দ্রীক যে সকল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো রয়েছে তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করতে। তাদের যেসকল অনুষ্ঠানগুলো থাকে সেসকল অনুষ্ঠানগুলোতে সহায়তা করতে এবং সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের তার সাথে সম্পর্কিত করতে। আমরা ইতোমধ্যে কিছু অনুষ্ঠান করেছি।

টিএসসি কেন্দ্রীক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো যখন যে কাজে সহযোগিতা চাচ্ছে আমরা তাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছি। আপনি টিএসসির বাউন্ডারিটা দেখেছেন। এই লাইনটা অনেক ছোট। মেইন গেইট বন্ধ থাকলেও অনেক পথশিশু দেওয়াল টপকে ভেতরে চলে আসে।

দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র-ছাত্রী ভাই বোনেরা অভিযোগ করে আসছে তারা এখান থেকে মোবাইলসহ বিভিন্ন জিনিস সুযোগ পেলে চুরি করে নিয়ে যায়। সেজন্য খুব শীঘ্রই আমরা বাউন্ডারি লাইনের কাজ শুরু করতে যাচ্ছি।
টিএসসিসহ আশেপাশে যতোগুলো বিদ্যুতের লাইন আছে সবগুলো খুব পুরনো। বর্তমানে অগ্নিকান্ডের সমস্যা খুব ভয়াবহ। আগুনের কথা মাথায় রেখে বিদ্যুতের সংযোগ খুব দ্রুত সংস্কারে আমরা হাত দিতে যাচ্ছি।
টিএসসি অডিটোরায়ামে ব্যাপক সংস্কার আনতে যাচ্ছি। শব্দ ও আলোকসজ্জা, আনা হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অডিটোরিয়ামটিতে ডেকোরেটার্সেও আসবে পরিবর্তন। আসা করছি রমজান মাসের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে পারব।

আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে দুটো দিয়েছিল। একটি হলো টিএসসিকে ধূমপান মুক্ত করা। যদিও টিএসসি আগে থেকেই ননস্মোকিং জোন ছিল তথাপি তদারকির অভাবে বা আমাদের সচেতনতার অভাবে সবাই আবার ধূমপান শুরু করেছিল। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ডাকসু`র পক্ষ থেকে পায়ে হেঁটে হেঁটে ফুল নিয়ে চকলেট নিয়ে আমরা আহবান জানিয়েছি টিএসসির ভেতরে যেন কেউ ধূমপান না করে।
এ প্রচারনায় আমরা যথেষ্ঠ সাড়া পেয়েছি। এখন টিএসসি ধূমপান মুক্ত। আরেকটি বিষয় হলো আগে শুক্র-শনিবার টিএসসির গেইট সবসময় বন্ধ করে রাখা হতো। এটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল। যে সারা সপ্তাহ ক্লাস করার পরে, টিউশানি করার পরে ছুটির দিনে টিএসসিতে আসার সুযোগ পেতনা। শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি।

দাবি জানিয়েছিলাম, সপ্তাহে সাত দিন যেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য টিএসসি অবমুক্ত রাখা হয়। সেই দাবির প্রেক্ষিতে টিএসসিতে এখন সাতদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। আরেকটি কথা না বললেই নয়। রমজান মাসে টিএসসি প্রাঙ্গনে শিক্ষার্থীরা ইফতার করে থাকে। অন্যান্য বছর দেখা গেছে ইফতার পরবর্তী সময়ে টিএসসি প্রাঙ্গন খুব অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে। আসলে কাউকে দোষ দেওয়ার সুযোগও ছিল না। কারন, ময়লা ফেলার কোন ব্যবস্থা ছিল না।
তাছাড়া ইফতারের পরপর সবাই নামাজ পড়তে যায়। অল্প সময়ে বাইরে প্যাকেট ফেলা সম্ভব ছিল না। এবার আমরা ডাকসু`র নেতৃত্বে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহযোগিতায় মাঠে বেশ কিছু বিন দিয়েছি। ইফতারের আগে কিছু অস্থায়ী বিন দেওয়া হয়। ফলে ইফতারের পরে শিক্ষার্থীরা খাবারের প্যাকেট, পানির বোতল, খোসা সব বিনে ফেলতে পারছে। সবকিছু মিলিয়ে একটি আন্তরিক, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ডাকসু এগিয়ে যাচ্ছে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর একটি ভিন্ন ব্যানার থেকে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। সেই জায়গা থেকে তার সাথে কাজ করতে গিয়ে কোন রকম দ্বন্দ্ব বা বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে কিনা?
আসিফ তালুকদারঃ নুর ডাকসু`র নির্বাচিত ভিপি। তার আলাদা রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে। সেটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির প্রশ্নে যে যেই দল বা সংগঠন থেকেই আসুক না কেন সবাই এক ও অভিন্ন মতামত রাখতে বাধ্য। কারণ, আমরা নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য ডাকসুতে আসিনি।
আমরা ডাকসুতে এসেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতাল্লিশ হাজার শিক্ষার্থীর অধিকার নিয়ে কথা বলতে।
আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু মিটিং করেছি। আমার কাছে মনে হয়েছে মিটিংগুলো বেশ সফল। মাননীয় উপাচার্য মহোদয় জাপান যাচ্ছেন। তিনি জাপান থেকে ফিরে এলে আমরা ফাইনাল বাজেট মিটিংটা করব।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ সম্প্রতি আপনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন। এ দায়িত্বটা আপনি কীভাবে পালন করবেন তা নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
আসিফ তালুকদারঃ আমার বড় পরিচয় আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন কর্মী। আমাদের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন বলেই আমি ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার সুযোগ পেয়েছি। আর ডাকসুতে নির্বাচিত হয়েছি বলেই আপনার বা গণমাধ্যমের সামনে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি।
আমি অত্যান্ত খুশী কারণ আমার শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী আমাকে মূল্যায়ন করেছেন, ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারন সম্পাদক আমাকে মূল্যায়ন করেছেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমাদের আবেগের জায়গা। এই সংগঠনের জন্য আমি রাজপথে স্লোগান ধরি, হাতে কলম তুলে নেই।
দুঃসময়ে রাজপথে সক্রিয় থাকি। সবকিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমার আত্মার সাথে জড়িত। আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেটি হলো সাহিত্য সম্পাদক। এ পদটি আমার কাছে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সাহিত্য সম্পাদক পদটি এবারই প্রথম সৃষ্টি করা হয়েছে। আগে সাংস্কৃতিক সম্পাদক এই কাজ করতেন। কিন্তু যেহেতু এর পরিমন্ডলটা অনেক বড় তাই আলাদাভাবেই সাহিত্য সম্পাদক পদটি করা হল। এই পদকে ঘিরে আমার কিছু ইচ্ছা ও পরিকল্পনা রয়েছে। আমি আমার কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করব ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা শুধু মিছিল মিটিংয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে না।
মেধাভিত্তিক চর্চার মাধ্যমে সোনার ছাত্রলীগ গড়ার যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন সেই মেধাভিত্তিক ছাত্রলীগ গড়তে, মেধাভিত্তিক রাজনীতি গড়তে, নেতাকর্মীদের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশে, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশে যে ধরনের সাহিত্য নির্ভর কর্মসূচী নেওয়া প্রয়োজন আমি আমার জায়গা থেকে তা করার চেষ্টা করব।
সামনে আগস্ট মাস আসছে। আমাদের জাতীয় জীবনে শোকের মাস। এ মাসকে ঘিরে আমাদের পরিকল্পপনা রয়েছে। আগষ্টে একটি বড় স্মারক গ্রন্থ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
আমি যতোদিন দায়িত্বে থাকব ততোদিন নিয়মিত একটি সাহিত্য কাগজ করার পরিকল্পনা আছে। যখন আমি বা আমরা দায়িত্বে থাকব না তখন যারা আসবে তারাও যেন এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সেই প্রত্যাশা থাকবে।
যেহেতু আমি ডাকসু`র সাংস্কৃতিক সম্পাদক সেহেতু সার্বজনীন ভাবে আমার দায়িত্বটা আরো বেশী। বিভিন্ন দিবস ভিত্তিক কর্মসূচী, ঋতু ভিত্তিক কর্মসূচী পালনের পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি।


একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ সম্প্রতি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হল। নবগঠিত কমিটির অনেকের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। সেই কমিটির একজন হিসেবে অভিযোগগুলোকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
আসিফ তালুকদারঃ উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। প্রায় চল্লিশ লক্ষ নেতা কর্মী সংগঠনটির সাথে জড়িত।
প্রত্যেকটি সম্মেলনের পরেই যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হয় তখন কিছু মান অভিমান তর্ক বিতর্ক এসে যায়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবাধ সম্প্রসারনের ফলে অনেক ছোট বিষয়গুলো বড় অাকার ধারন করে। এটা একটা বড় সমস্যা। যে অভিযোগগুলো আসছে সেগুলো কিন্তু আমাদের ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হচ্ছে না। বলা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে সেসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদেরকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেখানে যোগ্যদের জায়গা করে দেওয়া হবে।
যদি ছাত্রলীগ অভিযোগ অস্বীকার করত, বলত ছাত্রলীগ সকল ভুলের উর্দ্ধে তাহলে না হয় কথা ছিল। তাছাড়া ছাত্রলীগ একটি পরিবার। এখানে নেতাকর্মীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝি, মান অভিমান আছে। বড় পরিবারে ভুল বুঝাবুঝি থাকবেই।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনের মাধ্যমে আমি সকল নেতাকর্মী ভাইবোনদের আহবান করব, সবকিছু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে আলাপ করা আমাদের জন্য একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কিছু কিছু বিষয় আমরা সংশোধনের জন্যই আলাপ করে থাকি। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে সেই আলাপ বা সমালোচনা যেন গঠণমূলক হয়ে থাকে।
সমালোচনা যেন শুধু সমালোচনার মাঝেই সীমাবদ্ধ না থাকে। সমালোচনার ভাষা যদি সমালোচিত হয়ে যায় তাহলে সেই সমালোচনা কার্যত ভাল কিছু বয়ে আনে না।
পাশাপাশি আমি ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারন সম্পাদকের কাছে দাবি জানাব, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মতামত প্রকাশের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন। যেখানে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে গঠণমূলক কথা বলার সুযোগ পাবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ মুজিব বর্ষ নিয়ে ছাত্রলীগ কেমন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে?
আসিফ তালুকদারঃ মুজিব বর্ষ নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে। কৌশলগত কারণে আপাতত সেই পরিকল্পনা বলতে চাচ্ছি না। `মুজিব বর্ষ` আমাদের জন্য আবেগময় একটি সময়। নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে সরকার গঠন করেছে । ডাকসুতে আমরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে মুজিব বর্ষ একটি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। মুজিব বর্ষ আমাদের জন্য সৌভাগ্যের একটি ব্যাপার। আমরা অবশ্যই ব্যাতিক্রম ভাবে ও স্মরনীয়ভাবে মুজিব বর্ষ পালন করব।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন হলো। একদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অন্যদিকে ডাকসু। কাজ করতে গিয়ে নেতৃত্বের এই জায়গাটা সাংঘর্ষিক মনে হয় কী?
আসিফ তালুকদারঃ যখন ডাকসু ছিলনা তখনো ছাত্রদের অধিকার আদায়ের নানা বিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সক্রিয় ভূমিকা রেখেছে। বিভিন্ন সময়ে ছাত্রদের পাশে ছিল ছাত্রলীগ। গত দশবছরে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ অনেক কাজ করেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো গণমাধ্যমে কর্মরত ভাই বোনেরা কেন যেন ছাত্রলীগের ইতিবাচক কাজগুলো এড়িয়ে যায়। দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন।
এর আসল কারণ কী তা আমাদের বোধগম্য নয়। এই ডাকসু নির্বাচন হওয়ার পেছনেও ছাত্রলীগের বড় একটি ভূমিকা আছে আমরা চেয়েছি ডাকসু কার্যকর হোক। যাতে আমরা স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারি। আমাদের বড় পরিচয় আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ডাকসু ভিপি নুরু তার নিজের একটি ব্যানার থেকে এসেছে। আমরা পারষ্পরিক একটি মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করছি। সব মিলিয়ে কোথাও আমাদের নেতৃত্ব বা সম্পর্ক সাংঘর্ষিক নয়।

একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ সাম্প্রতিক সময়ে আপনার পদ পদবী ও রাজনৈতিক পরিচিতিতে বড় পরিবর্তন এসেছে। একদিকে ডাকসু`র সাংস্কৃতি সম্পাদক নির্বাচিত হলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পেলেন। এই ধারাবাহিকতায় আগামীতে আপনি নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চান?
আসিফ তালুকদারঃ আমি যখন ডাকসু নির্বাচন করছিলাম তখন আমার আলাদা কোন নির্বাচনী ইশতেহার ছিল না। আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষার্থীদের যেসব অভাব অভিযোগ আছে তাই আমার ইশতেহার। আমি নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চাই তা নিয়ে কখনোই ভাবিনি।
বরং যে দায়িত্বটা পেয়েছি তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পালন করতে চাই। দিনশেষে নিয়তি আমাকে বলে দিবে আমার কোথায় যাওয়া উচিত।

আআ//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি