‘দুই ভাগ মানুষের জন্য ৫৬ শতাংশ কোটা মানি না’ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১৩:২৬, ৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২৭, ৪ মার্চ ২০১৮
কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে শতকরা ১০ ভাগে নিয়ে আসার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে উত্তাল শাহবাগ। আজ সকাল ১০ টা থেকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয় চাকরিপ্রার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের হাতে শোভা পাচ্ছে ‘কোটার সংস্কার চাই’,‘নাতিপুতি কোটা মানি না’ইত্যাদি লেখা ফেস্টুন।
আন্দোলনকারীদের দাবি দেশের শতকরা ২% মানুষের জন্য ৫৬% কোটা, আর বাদবাকি ৯৮% মানুষের জন্য ৪৪% নিয়োগ- এটি এক ধরণের বৈষম্য। দিনের পর দিন এটি মেনে নেওয়া যায় না। এটি যৌক্তিক সংস্কার করে ১০% এ নামিয়ে আনতে হবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা প্রথা বাতিল নয়, বরং এর সংস্কার চাচ্ছি আমরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন ও মোহছিনা পারভিন বলেন, দেশে ২৫৮ রকমের কোটা চালু আছে। একদিকে বিপুল সংখ্যক তরুণের কর্মসংস্থানের অভাব, অন্যদিকে বিশাল সংখ্যক কোটা পদ্ধতির কারণে চাকরি ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে যোগ্য প্রার্থীরা। তাই অনতিবিলম্বে কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে।
ক্ষোভের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেওয়া পারভেজ শিকদার বলেন, একবার মুক্তিযোদ্ধা মানেই সারাজীবনের মুক্তিযোদ্ধা নন। এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন, যাদের নাতি পুতিরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের সঙ্গে বিরোধিতা করেন। তাহলে তারা কেন কোটা সুবিধা ভোগ করবে?
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে ১০ ভাগ কোটার প্রচলন। যোগ্যপ্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে মেধাভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া, নিয়োগ পরীক্ষায় একজন কোটাধারী একাধিকবার সুযোগ না দেওয়া, বিশেষ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা, চাকরি ক্ষেত্রে সবার জন্য অভিন্ন কাটমার্কস ও অভিন্ন বয়স সীমা নির্ধারণ।
শুধু কোটা পদ্ধতির কারণে বিসিএসের মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় অনেক মেধাবীর ঠাই হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনে অংশ নেওয়া ফয়সাল আরাফাত। তিনি বলেন ২৮, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ তম বিসিএসে কোটার কারণে প্রায় অনেকগুলো পদ খালি রয়ে যায়। কারণ, বিধান হচ্ছে সেই পদগুলোতে কোটা থেকে আবেদন করতে হবে। যেহেতু আবেদন করার মত কেউ ছিলনা, তাই শেষ পর্যন্ত পদগুলো শুন্য থেকে যায়। বিশেষ করে ৩২ তম বিসিএসে এমন শুন্য পদের সংখ্যা অনেক।
পারভেজ শিকদার আরো বলেন, সম্প্রতি ফায়ার সার্ভিস নিয়োগ পরীক্ষায় শুধু কোটাধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দেশে যেখানে সবার সমঅধিকার সেখানে এই বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল ইসলাম বলেন, এমনও আছেন যে কারো বাবা মুক্তিযোদ্ধা। তার সাত সন্তান কোটা সুবিধা পাচ্ছেন। শুধু তাই নয়। তারা বারবার সবক্ষেত্রে এই সুবিধা ভোগ করছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা বাবার কারণে সাতজন সন্তান সবগুলো নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা পাবে এটা কী প্রহসন নয়?
মিথিলা পারভীন বলেন, সংবিধানের ২৮ (৪) অনুচ্ছেদে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে রাষ্ট্রীয় সুবিধা দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু আমাদের দেশে যারা কোটা সুবিধা পাচ্ছেন তারা কেউ কিন্তু অনগ্রসর নন। সত্যিকার অর্থেই যারা অনগ্রসর তারা কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না।
কোনো প্রতিষ্ঠানে একজন নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোটা আছে, ১০০ জন নিয়োগের ক্ষেত্রেও কোটা আছে। এটাও চাকরির ক্ষেত্রে বড় দুর্বলতা বলে মনে করেন মোহসীন মন্টু নামে এক চাকরিপ্রার্থী।
ভিডিও দেখুন :
/ এআর /
আরও পড়ুন