প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে ন্যূনতম যোগ্যতা স্নাতক হচ্ছে
প্রকাশিত : ১৯:৪৫, ৪ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ২৩:১৪, ৪ অক্টোবর ২০১৮
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। পুরোনো নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬০ শতাংশ শিক্ষক নারী। নিয়োগের ক্ষেত্রে এতোদিন তাদের (নারী) শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হতো উচ্চ মাধ্যমিক। এখন যোগ্যতা বাড়িয়ে স্নাতক করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে তৈরি করা হয়েছে একটি খসড়া নীতিমালা। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র এমন তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরাসরি সহকারী শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০শতাংশ বিজ্ঞান শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। এছাড়া নারী-পুরুষ সবারই শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করা হচ্ছে স্নাতক বা সমমান। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করায় নিয়োগের ক্ষমতা সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) আওতায় চলে যায়।
এতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়টি পিএসসির এখতিয়ারভুক্ত করা হয়। এই কারণে ২০১৩ সালের সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের প্রয়োজন পরে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বিধিমালাটি সংশোধনের প্রস্তাব পাঠায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করে। কমিটি সংশোধনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়।
প্রস্তাব অনুমোদনের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, `প্রস্তাবিত বিধিমালাটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগে (২০১৩ সালের বিধিমালা অনুযায়ী) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পুরুষ প্রার্থীর নূ্যনতম যোগ্যতা ছিল স্নাতক বা সমমান। আর নারীর ক্ষেত্রে নূ্যনতম যোগ্যতা ছিল এইচএসসি বা সমমান। নতুন বিধিমালায়, নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই নূ্যনতম যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ বিজ্ঞান শিক্ষক হওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। কিন্তু এবার তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।এবিষয়ে সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, `২০ শতাংশ বিজ্ঞান শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে নতুন বিধিমালায়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের বিধিমালা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো সরাসরি। আর প্রধান শিক্ষক পদে ৩৫ শতাংশ সরাসরি এবং ৬৫ শতাংশ পদ সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে পদোন্নতি দিয়ে পূরণ করা হতো। কিন্তু বিগত ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধান শিক্ষকের পদমর্যাদা তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করে এ মন্ত্রণালয়। এর পর থেকে ৩৫ শতাংশ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে পিএসসির মাধ্যমে। আর সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে সরাসরি। তাই ২০১৩ সালের বিধিমালা সংশোধন করে নতুন বিধিমালা করে এবিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।
এদিকে, `চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প`-এর আওতায় আগামী বছর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঁচ হাজার ১০৬ জন সঙ্গীত ও শরীরচর্চা বা ক্রীড়া বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেবে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এর আগে জানিয়েছিলেন, সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরচর্চা শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর প্রক্রিয়া হিসেবে প্রকল্পের আওতায় আপাতত অল্প সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয় জরিপ-২০১৭ অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মোট এক লাখ ৩৩ হাজার ৯০১টি। এসব স্কুলে পাঁচ লাখ ৫৭ হাজার শিক্ষক কর্মরত, যার মধ্যে নারী শিক্ষক তিন লাখ ৫১ হাজার ৮৬৩ জন।
টিআর / এআর
আরও পড়ুন