ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে বিআইবিএমের এমবিএম কোর্স
প্রকাশিত : ১৬:০১, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২০:৩৭, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
দেশে দিনে দিনে বাড়ছে ব্যাংকিং লেনদেন। শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকও এখন ব্যাংকিংয়ের আওতায়। এতে একদিকে বাড়ছে দেশে ব্যাংকের সংখ্যা ও পরিধি। অন্যদিকে বাড়ছে ক্রমবর্ধমান এ খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা। আর চাহিদাকে ঘিরে এ খাতে চাকরি পেতে শিক্ষিত বেকারদের যেন দৌঁড়ঝাপেরও শেষ নেই। তবে এ প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যেতে ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স(এমবিএম)কোর্সের মাধ্যমে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) থেকে কোর্সটি সম্পন্ন করে পাওয়া যেতে পারে চাকরি নামক সোনার হরিণের ছোঁয়া।
আর্থিক খাত বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও পরামর্শ সেবা প্রদানের এক আদর্শ প্রতিষ্ঠানের নাম(বিআইবিএম)। পোশাদারী ব্যাংকিং বিষয়ে শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান এটি। বলা হয়ে থাকে, ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালিত মাস্টার্স ইন ব্যাংক ম্যনেজমেন্ট (এমবিএম) বর্তমান সময়ে ব্যাংকার হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করা তরুণদের কাছে বিআইবিএমের একটি জনপ্রিয় সাবজেক্ট। যে কোন ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন গ্রাজুয়েট ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স (এমবিএম) করে সহজেই ব্যাংকে চাকরি পেয়ে যাচ্ছেন। এমবিএম এর শিক্ষা পদ্ধতি বহুলাংশে প্রায়োগিক হওয়ায় এর শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিংয়ে দক্ষ হওয়ার সুযোগ বেশি পান।
জানতে চাইলে বিআইবিএমের মহাপরিচারক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী বলেন, একজন শিক্ষার্থী এমবিএমে ভর্তি হলে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে তাকে সুযোগ্য ব্যাংকার হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এ কারণে হাই কোয়ালিটির এসব মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে সব সময় অগ্রাধিকার পায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রায়োগিক এবং তাত্ত্বিকের সমন্বয় করে পড়ানো হয়। সাধারণ এমবিএ করার চেয়ে এমবিএ মেজর ইন ব্যাংকিং করা চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে এগিয়ে রাখবে। আর ব্যাংকগুলোর কাছে বিআইবিএমের এমবিএম কোর্সের রয়েছে বাড়তি কদর।
ঢাকা স্কুল অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (ডিএসবিএম) আওতায় পরিচালিত হয় এমবিএম কোর্স।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসবিএমর পরিচালক মোহাম্মদ মহীউদ্দি সিদ্দিকী বলেন, গবেষণা ও প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে বিআইবিএম ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত। এমবিএম কোর্স করিকুলামে তা প্রয়োগ করা হয়। এতে শিক্ষার্থীরা ব্যাংকিংয়ের বাস্তব জ্ঞান এবং দক্ষতা পায়, যা পরবর্তী চাকরি জীবনে সাফল্য বয়ে আনে।
বিআইবিএমের এমবিএমের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে উচ্চপদে কর্মরত এবং এমবিএম অ্যালামনাই সোসাইটির সভাপতি এস এম ওয়ালী উল মোর্শদ বলেন, এমবিএমের কারিকুলাম ওয়েল ডিজাইন্ড। এখানে শিক্ষার্থীরা রিস্ক ম্যানেজমেন্ট, কমার্শিয়াল ব্যাংকিং, ট্রেড সার্ভিস, ইন্টারন্যাশনার পেমেন্টের মতো বিষয় পড়ে আসে। এ কারণে চাকরির ক্ষেত্রে নিয়োগ দাতা ব্যাংকের কাচে বিশেষ গুরুত্ব পায়।
শুরুতে ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ রূপে গড়ে তোলাই ছিলো বিআইবিএমের লক্ষ্য। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই লক্ষ্যের বিস্তার হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি উঠতি ও উদ্যমী শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান।
কাদের জন্য কোর্সটি?
যেকোনো বিষয়ে স্নাতক উত্তীর্ণরা ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তবে ভর্তির আবেদনের জন্য শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে একটি প্রথম বিভাগ থাকতে হবে এবং কোনো তৃতীয় বিভাগ থাকতে পারবে না। স্নাতকদের প্রথম বিভাগ ধরা হবে সিজিপিএ ৩.৫০ থেকে আর এসএসসি ও এইচএসসির ক্ষেত্রে ৪.০০-এর ওপরে প্রথম বিভাগ এবং ৩.০০ থেকে ৪.০০ পর্যন্ত দ্বিতীয় বিভাগ ধরা হবে।
ভর্তি পদ্ধতি: আবেদনের পর প্রার্থীকে দেড় ঘণ্টার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।এই দেড় ঘণ্টার মধ্যে ৩০ মিনিট এমসিকিউ বা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন এবং ৬০ মিনিট লিখিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এমসিকিউ অংশের প্রশ্ন করা হবে `ইংলিশ প্রফিসিয়েন্সি` এবং `ম্যাথমেটিক্যাল অ্যানালিটিক্যাল অ্যাবিলিটি` অংশ থেকে। আর লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থীর ইংরেজি লেখার ওপর দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। অ্যাডমিশন টেস্ট থেকে প্রথম ২০০ প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রথম ৫০ জনকে ভর্তি করা হবে। থাকবে অপেক্ষমাণ তালিকাও।
কোর্সটিতে যা থাকছে: ৩২ মাসের কোর্সটিতে ৭২ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হবে। এর মধ্যে কোর্স ওয়ার্ক, প্রজেক্ট পেপার ও মৌখিক পরীক্ষা রয়েছে।
মেয়াদকাল: বছরে দুবার এমবিএম প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। মে মাসে হয় ইভিনিং প্রোগ্রাম এবং জানুয়ারি মাসে ডে প্রোগ্রাম। ইভিনিং এমবিএম প্রোগ্রামে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী মাসে। তাই নিয়মিত পত্রিকা দেখা ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইট দেখতে পারেন। আর প্রথমে অনুষ্ঠিত হবে ভর্তি পরীক্ষা। ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রথম ২০০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে। এখান থেকেই চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হবে ৫০ জনকে।
প্রশিক্ষণ ফি: অনাবাসিক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অ্যাডমিশন ফি, টার্ম ফি, সেন্টার ফি ইত্যাদি বাবদ প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা খরচ হবে। আবাসিক প্রার্থীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সিট ভাড়া ও খাবার খরচ দিতে হবে।
আরকে// এমজে
আরও পড়ুন