ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিচার শুরুর আগেই কেটে যায় বছরের পর বছর (ভিডিও)

শাকেরা আরজু, একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩০, ৫ নভেম্বর ২০২২

ফৌজদারী মামলার প্রতিটি ধাপেই লাগছে দীর্ঘ সময়। পুলিশের কাছে মামলা ফাইল হওয়া থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে লাগছে বছরের পর বছর। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মামলা না নেয়া, পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দিতে দেরি হওয়া, সাক্ষী হাজির না হওয়া, বার বার তারিখ পেছানো একটি মামলাকে স্থবির করে দেয়।

২০১৪ সালে আশুলিয়ায় একটি বাড়ি থেকে জেসমিন আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় একমাত্র আসামি করা হয় জেসমিনের প্রেমিক রাজ্জাককে। ২০১৬ সালে নিম্ন আদালত রাজ্জাককে মৃত্যদণ্ডের রায় দেয়। সেই থেকে রাজ্জাক কনডেম সেলে।  

মৃত্যদণ্ড অনুমোদনের জন্য মামলাটি উচ্চ আদালতে আসে। প্রায় ৮ বছর বিচারাধীন থাকার পর হাইকোর্ট রাজ্জাককে যাব্বজীবন কারাদণ্ড দেয়। এই ৮ বছর রাজ্জাক কনডেম সেলে মৃত্যুর প্রহর গুণেছেন। আর বাদীপক্ষ বিচার কার্যকরে বিলম্বে হয়েছে হতাশ। 

ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞ এস এম শাজাহান বলেন, “যত শীঘ্র সম্ভব এটা করা উচিত। কারণ, যে লোকটা কনডেম সেলে থাকে সেখানে তার সাফারিং সাঙ্গাতিক। বিচারপ্রার্থীরাও হন হতাশ “

ক্রিমিনাল কেইস বা ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে পুলিশের কাছে মামলা ফাইল হওয়া থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ধাপে লাগে লম্বা সময়। অনেক ভুক্তভোগির অভিযোগও থানায় মামলা নিতে চায় না।

এক ভুক্তভোগি জানান, “মামলাটি হয়নি, থানায় যখন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়েছি তখন তাদের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। ওনারা তখন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে কোর্টে মামলা করা হয়।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, “১৫ দিন-২ মাসে কেন মামলার তদন্ত কার্যক্রমটা সম্পন্ন হচ্ছে না সেটার জন্য জবাবদিহি বা কঠোরতার প্রয়োজন আছে।”
     
ডিএমপি ডিসি (মিডিয়া) ফারুক বলেন, “বলা আছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলার তদন্ত শেষ করতে হবে। আবার কিছু কিছু আইন নতুন তৈরি হয়েছে নারী নির্যাতন, মাদক, অস্ত্র আইন। এসব মামলায় একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। এ সময়ে তথ্যগুলো যুক্ত করে চার্জশিট বা ফাইনাল পর্যায়ে যেটাই হোক সেটা শেষ করতে একটু সময় লেগে যায়।”

পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপরে ঠিক সময়ে সাক্ষী হাজির না হওয়া, অসংখ্যবার তারিখ নেয়া এবং আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তি না হওয়ায় মামলা ঝুলে বছরের পর বছর। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, “এটা ডকুমেন্টস প্রমাণ করবে, মেডিক্যাল রিপোর্ট প্রমাণ করবে বা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রমাণ করবে। এই সমস্ত সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আমি মনে করি এটা ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সে নেওয়া সম্ভব।”

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, “আমরা একটা মামলা ২০ বছর ধরে পেইন্ডিং, সাক্ষী গেলে তার সঙ্গে অসদাচরণ করা হয়। এদিকে যারা ক্রাইম করে তারা ক্রমাগত চাপে রাখে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী না দেওয়ার জন্য।”
       
সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হলে তাও দেখা যায় তা বছরের পর বছর চলছে। আদালতের বাইরে নিষ্পত্তি সম্ভব এমন অনেক ঘটনাও মামলায় গড়ায়। মামলাজট নিরসনে প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন। যার ফলে ২০১৬ সালের ডেথ রেফারেন্স এখন নিষ্পত্তি করছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি