ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

‘আমরা ব্যথিত, দেশবাসী মর্মাহত’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪২, ১৪ মার্চ ২০১৮

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। সর্বোচ্চ আদালতের এমন সিদ্ধান্তের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের এ আদেশে আমরা ব্যথিত এবং দেশবাসী মর্মাহত। এই আদালতের আদেশের বিষয়ে কী ভাষায় আপনাদের কাছে বর্ণনা করব? আমরা বর্ণনা করতে পারছি না।
সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন রোববার পর্যন্ত স্থগিতের আদেশ দেন। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি কমিশনকে (দুদক) লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলেছেন আদালত।
জয়নুল আবেদীন বলেন, আশা করি, রোববার আদালত উভয় পক্ষকে শুনবেন। অতীতের নজিরগুলো লক্ষ রেখেই আজকে যে আদেশটি দিলেন, তা ভ্যাকেট করবেন। ইনশাআল্লাহ খালেদা জিয়া জনসমক্ষে বের হয়ে আসবেন।
আমরা ধারণা করেছিলাম, চিরাচরিতভাবে আপিল বিভাগ যেটা করেন, উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনেন, তারপর আদেশ দেন। আজকের বিষয়টি হলো, আপিলটি দুদকের আইনজীবী উপস্থাপন করার সঙ্গে সঙ্গে বললেন যে, আগামী রোববার সিপি ফাইল করেন, জামিন আগামী রোববার পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।
আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের কোনো বক্তব্য তিনি শুনলেন না। কোনোরকম আইনগতভাবে এই মামলাটি মোকাবিলা করার জন্য ন্যূনতম সুযোগ আমাদের দিলেন না। না দিয়ে স্টে অর্ডার পাস করলেন।
জয়নুল আবেদীন আরো বলেন, আমরা প্রধান বিচারপতিকে বলেছি যে, মাননীয় আদালত আমাদের কথা না শুনে কোনো অর্ডার পাস এর আগে আমরা কখনো দেখি নাই। এতে করে পাবলিক পারসেপশন খারাপ প্রভাব ফেলবে। তিনি আমাদের কথা শুনলেন না। না শুনে বললেন, আগামী রোববার পর্যন্ত স্টে থাকবে। আগামী রোববার সিপি ফাইল করা হবে।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘আমি একটি কথা বলতে চেয়েছিলাম আদালতকে, আপনি যদি স্টে নাও দেন, তাহলেও খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না। সরকার তাঁকে বের হতে দেবেন না। এরই মধ্যে তারা বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করে রেখেছে। এই অবস্থার মধ্যে যদি আপনারা স্টে দেন, তাহলে পাবলিক পারসেপশনে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। তারপরও আদালত আমাদের কথা শুনলেন না।’
‘আমরা আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, বিচার বিভাগ আমাদের বক্তব্য না শুনে দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই ধরনের আদেশ দিয়েছেন। এই আদেশে আমরা ব্যথিত, এই আদালতের আদেশের বিষয়ে কী ভাষায় আপনাদের কাছে বর্ণনা করব। আমরা বর্ণনা করতে পারছি না।’
খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন বলেন, বিচারপতি মোরশেদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত এ রকম কোনো নজির ছিল না। বিচারপতি মোরশেদের সময় থেকে আমি এই আদালতে আছি। তাঁর সময় থেকে আমি শিখতে শিখতে এসেছি। কোনো বিচারপতির সময় এ ধরনের নজির নাই। এটা নজিরবিহীন আদেশ।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, সেখানে এতগুলো সিনিয়র আইনজীবী ছিলেন, ক্রিমিনাল ল’র সবচেয়ে ভালো আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ছিলেন, এ জে মোহাম্মদ আলী ছিলেন—কারো কোনো বক্তব্য তিনি শুনলেন না। তিনি তো সিনিয়রদের বক্তব্য শুনতে পারতেন। কারো কোনো বক্তব্য শুনলেন না। আমি একজন সিনিয়র আইনজীবী, বারের সভাপতি, একটি কথাও জিজ্ঞাসা করলেন না প্রধান বিচারপতি। এটা দুঃখজনক। আমরা মর্মাহত। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি