বিচারের দাবিতে সাংবাদিক পত্নীর ২৮ বছরের লড়াই (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১০:৪০, ২৫ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১২:৫৭, ২৫ এপ্রিল ২০১৮
রাজপথে গাড়ি চাপা পড়ে মারা গেছেন স্বামী। এরপর ২৮ বছর ধরে বিচারের দাবিতে একাই লড়াই করে চলেছেন স্ত্রী। শেষ পর্যন্ত রায় মিলেছে, কিন্তু সেই রায় কার্যকর করতে শুরু হয়েছে আরেক লড়াই। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মন্টু’র স্ত্রীর একাকী লড়াইয়ের চিত্র উঠে এসেছে একুশের প্রতিবেদনে।
১৯৮৯ সালের ৩রা ডিসেম্বর। নয়াপল্টনে আনন্দভবনের সামনে, উল্টোপথে চলা পেপসিকোলা কোম্পানীর কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় আহত হন দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন মন্টু। হাসপাতালে ১৩ দিন বাঁচা-মরার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত হেরে যান তিনি।
দুই শিশু পুত্রের লালন-পালন, আর স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে লড়াই শুরু করেন, নিহত সাংবাদিক পত্নী কলেজ শিক্ষিকা রওশন আক্তার। গাড়িটির মালিক বাংলাদেশ বেভারেজ কোম্পানীর বিরুদ্ধে মামলা করেন, ক্ষতিপূরণের দাবিতে। শিক্ষকতা পেশার আয় আর পেনশনের পুরো অর্থই ব্যায় করেছেন এই দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ে।
ন্যায় বিচার পেতে, নিম্নআদালতের বারান্দায় হেঁটেছেন ১৪টি বছর। আদেশে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, ক্ষতিপূরণের ডিক্রি দেয় বিচারিক আদালত। বিবাদি পক্ষ, হাইকোটে আপিল করলে ৫ বছর পর রায়ে ক্ষতিপূরণ, দিতে বলা হয়, ২ কোটি ১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। তারও ৬ বছর পর ২০১৬ সালে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, রায়ে কোম্পানীটিকে, ১ কোটি ৭১ লাখ ৪৭ হাজার টাকা দেবার চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়।
ক্ষতিপূরণ দেবার সার্মথ্য নেই-এমন গরিমশির কারণে আবারো ডিক্রি এক্সিকিউশন বা জারি মামলায় যেতে হয়, বাদীকে। রওশন আক্তার চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর অর্থকড়ি সবই শেষ, আইনি লড়াইয়ে ভাড় পড়ে দ্বিতীয় প্রজন্মের ঘাড়ে, মায়ের সাথে পথে নামেন পুত্ররা। এত কিছুর পরও মিলেনি প্রাপ্য ক্ষতিপূরনের টাকা।
আদালতের নির্দেশে, কোম্পানীটির ক্রোক হওয়া ৫ বিঘা জমি বিক্রি করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। কিন্তু জমি বিক্রি করা যাচ্ছে না, কারণ প্রভাবশালী প্রতিপক্ষ সমস্যা তৈরী করছেন সব জায়গায়। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ২৮ বছর লড়াই শেষে ক্ষতিপূরণ পেতে এই যখন বাস্তবতা, তখন নিঃস্ব পরিবারের প্রশ্ন আর কি করার আছে তাদের।
আরও পড়ুন