ঢাকা, রবিবার   ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মলদ্বারে সুই রেখে সেলাই: বিচার চালানোর নির্দেশ     

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:০৩, ২৮ মে ২০১৮

রোগীর মলদ্বারে সুই রেখে সেলাইয়ের ঘটনায় দুই চিকিৎসকের নাম অভিযোগপত্রে আসামির তালিকায় যুক্ত করে নতুন করে বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত দিয়েছে হাই কোর্ট। ছয় বছর আগে চট্টগ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

সোমবার (২৮ মে) বিচারপতি আব্দুল হাকিম ও এস এম মুজিবুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ একটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে ই রায় দেয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাপরোস্কিপ, কলোরেক্টাল সার্জন মো. সুরমান আলী এবং বেসরকারি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক জি এম জাকির হোসেনকে হাকিম আদালত এ মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেছিলেন রোগী আমিনুল ইসলামের মা দেলোয়ারা বেগম।

ওই আবেদন শুনে দুই বছর আগে হাই কোর্ট যে রুল জারি করেছিল, তা যথাযথ ঘোষণা করেই সোমবার এ রায় হল।

আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন রানা দাসগুপ্ত। আসামিপক্ষে ছিলেন সৈয়দ মিসবাউল আনোয়ার ও সৈয়দ আসগর আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. হারুন-অর-রশিদ।

রানা দাসগুপ্ত বলেন, ২০১২ সালে অস্ত্রোপচারের পর ভেতরে সুই রেখে সেলাই করার ঘটনায় করা মামলার অভিযোগ থেকে দুই চিকিৎসককে অব্যাহতি দিয়েছিল চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক।

২০১৪ সালের ২৭ অগাস্ট ওই আদেশের পর তা চ্যালেঞ্জ করে এবং অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া দুই চিকিৎসককে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার আরজি জানিয়ে ২০১৬ সালে হাই কোর্টে এই রিট মামলা করেন রোগী আমিনুলের মা।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন-অর-রশিদ বলেন, “হাই কোর্ট তার রায়ে বিচারিক আদালতের আদেশটি বাতিল করেছে। দুই চিকিৎসককে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে।”

রানা দাসগুপ্ত বলেন, “প্রথমত আদালত এ সংক্রান্ত জারি করা রুলটি যথাযথ ঘোষণা করেছেন। দ্বিতীয়ত দুই চিকিৎসককে আসামি হিসেবে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি আবার বিচারকাজ শুরু করতে বলা হয়েছে রায়ে।”

মামলা থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ৩০ মে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে রোগী আমিনুল ইসলামের মলদ্বারে অস্ত্রোপচার করেন সুরমান আলী ও জাকির হোসেন। রোগীর ব্যাথা না কমায় দ্বিতীয় দফায় অস্ত্রোপচার করেন তারা।

তারপরও ব্যাথা থাকায় অমিনুলকে কলকাতায় অ্যাপোলো হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট দেবাশীষ দত্ত অস্ত্রোপচার করেন। পরে সেখানে একটি সুই পাওয়া যায়।

দেশে ফিরে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন আমিনুলের মা দেলোয়ারা বেগম। আদালত তা মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য পাঁচলাইশ থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। ওই থানার এসআই রহুল আমিন ২০১৩ সালের ৩০ মে দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন। একই বছরের ৩ জুন আসামি সুরমান আলীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

পরদিন থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এবং চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা ব্যক্তিগত ও বেসরকারিভাবে পরিচালিত ক্লিনিকগুলোতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চিকিৎসা বন্ধের ঘোষণা দেন। এর দুইদিন পর ৬ জুন আদালতের নির্দেশে ‍সুরমান আলী জামিন পেলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন চিকিৎসকরা।

এই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ২৭ অগাস্ট চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী চিকিৎসক সুরমান আলী ও জাকির হোসেনকে অব্যাহতি দেন।

এর আগে আসামি পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে নয় দফায় মামলাটির শুনানির তারিখ পেছানো হয়।

এসি   

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি