ঢাকা, বুধবার   ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য হাইকোর্টের ১৫ নীতিমালা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৭, ৪ জুন ২০১৮

দেশের সব অধস্তন আদালতের বিচারকদের (বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী হাকিম, আমলে গ্রহণকারী হাকিম ও দায়রা জজদের জন্য) জন্য ১৫ দফা নীতিমালা সংক্রান্ত রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার এ নীতিমালা ঘোষণা করা হয়।

গাইবান্ধার দায়রা জজ আদালতের একটি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদনের রায়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

এ সংক্রান্ত মামলা সঠিকভাবে পরিচালনায় বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী হাকিম (ম্যাজিস্ট্রেট), আমল গ্রহণকারী হাকিম ও দায়রা আদালতের জজদের এ নীতিমালা পালন করতে বলা হয়েছে।

নীতিমালায় সঠিকভাবে বিচারিক আদেশ দেওয়া, রিভিশনাল ম্যাটার ও বিবিধ বিষয়ের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ কর্মঘণ্টা বাঁচানো এবং বিচার বিভাগের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার প্রত্যাশায় এ নীতিমালা (গাইডলাইন) দেওয়া হয়।

রায়ে দেওয়া নীতিমালা সম্পর্কে জানাতে গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজকে ১৫ দিনের মধ্যে ওই জেলার আদালতের সব বিচারক এবং ম্যাজিস্ট্রেটকে (হাকিম) নিয়ে একটি বিচার বিভাগীয় সম্মেলন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে এ নীতিমালা সংবলিত রায়ের অনুলিপি সব জেলা জজ, মহানগর ও দায়রা জজদের মাঝে বিতরণ করতে, অথবা ওয়েবসাইটে প্রকাশের মাধ্যমে জানানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, দায়রা আদালতের বিচারকদের ফৌজদারি রিভিশনের ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অধীনস্থ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনায় শুধু সম্মত বা অসম্মত উল্লেখ করেই দায়িত্ব শেষ করা যাবে না, সংশ্লিষ্ট মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে জড়িত আইনগত প্রশ্নের গভীরে ঢুকে অনুসন্ধান এবং তারপর তাদের মেধা ও দক্ষতা অনুযায়ী নিজস্ব মতামতের প্রতিফলন ঘটাতে তারা কাঠামোগতভাবেই বাধ্য। তাদের অবশ্যই বিচারিক মনোভাবসম্পন্ন হতে হবে এবং যে কোনও আদেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা রিভিশনাল বিষয়গুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে। যাতে করে সাধারণ জনগণ আদালতের দুর্বল ও শ্লথগতির কারণে কোনও মামলার তদন্ত অথবা বিচার বিলম্ব হচ্ছে বলে দোষারোপ করতে না পারেন।

রায়ে বলা হয়, অবসরে যাওয়ার আগে এদেশের অনেক সরকারি কর্মকর্তা তাদের দায়িত্ব পালনের প্রতি অনীহা দেখানোর প্রবণতা ধারণ করেন এবং ঢিলেঢালাভাবে কাজ করেন। বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজদের ওই ধরনের মানসিকতা ধারণ করা যাবে না। উপরন্তু, তাদের দায়িত্বপালনে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। সৎ, মেধাবী, সজাগ এবং দক্ষ অফিসারদের পরিচালনার মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাষ্ট্রের সবচেয়ে গতিশীল ও দেশপ্রেমী অঙ্গ হিসেবে জনগণের স্বীকৃতি আদায়ে তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।

মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) এবং মুখ্য বিচারিক হাকিমের (সিজেএম) সহযোগিতায় সব বিচারক এবং হাকিমদের নিয়ে জেলা/মহানগর দায়রা জজের অফিসে মাসে কমপক্ষে একবার জুডিশিয়াল কনফারেন্স (বিচারিক সম্মেলন) করতে হবে।

বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী হাকিমের জন্য নীতিমালা

নারাজি (আমি রাজি নই) পিটিশনে যেসব সাক্ষীর নাম উল্লেখ করা হয়, তাদের কাছ থেকে বক্তব্য নেওয়া বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী হাকিমের (ম্যাজিস্ট্রেট) প্রাথমিক দায়িত্ব হলেও যেসব সাক্ষী প্রাসঙ্গিক মনে হয়, তাদের বক্তব্যও নিতে হবে।

যদি নারাজি করা হয়, তাহলেও প্রয়োজনীয় মনে হলে বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী হাকিমকে সম্ভব হলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে হবে। বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকালে একজন হাকিমের কাছে যদি কোনও বিষয় গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়, অনুসন্ধান প্রতিবেদনে কোনও মতামত বা ফাইন্ডিংস যোগ করতে হয়, তা হলে ওই হাকিমকে বিচারিক সাক্ষীদের আচরণ/মানসিক অবস্থা রেকর্ড করতে হবে। একজন বিচার বিভাগীয় অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে তার অনুসন্ধান অবশ্যই যথাসম্ভব কম সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি