ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

গোল্ডেন মনিরের সম্পদের তদন্তে দুদক (ভিডিও)

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৪৫, ৫ জানুয়ারি ২০২১

দোকান কর্মচারি থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক। সেই সাথে ঢাকায় রাজকীয় বাড়ি, শপিংমল, দুইশ’রও বেশি প্লট-ফ্ল্যাট রয়েছে তারা। বলছিলাম, র‌্যাবের হাতে আটক স্বর্ণ চোরাকারবারী মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের কথা। মনিরের সম্পদের খোঁজ খবর করছে দুর্নীতি দমন কমিশনও। মূলত: চোরাকারবার দিয়ে বিত্ত বৈভবের শুরু। এরপর রাজউকের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সাথে মিলে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন গোল্ডেন মনির। 

মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির। হঠাৎই আঙুল ফুলে কলা গাছ। যেন আলাদীনের চেরাগ পেয়েছিলেন। গড়ে ওঠে মনিরের সম্পদের পাহাড়। কিন্তু কিভাবে? তার কিশোরবেলার বন্ধুরা শোনালেন সেই গল্প। 

কিশোরবেলার বন্ধুরা জানালেন, সোনাহার ক্রোকারিজে চাকরি করতো। এই সুবাদে ও আলাদীনের চেরাগের মতো বিল্ডিং করতে শুরু করলো। তার বাবা রাজাকার হিসেবে যুদ্ধের পর পলায়ন করে। পলায়নের পর সে মুদি দোকান চালাতো। 

এক পর্যায়ে স্বর্ণ চোরাকারবারে জড়িয়ে পড়েন মনির। চোরাচালানের দায়ে ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একাধিক মামলাও হয়।

স্থানীয়রা জানান, বাড্ডার অনেক ক্ষতিগ্রস্ত প্লট গ্রাহকদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে হোক, জোড় করে হোক, যেভাবে হোক তারা এই প্লটগুলো নিয়েছে। একটা দোকান কর্মচারী হাজার কোটির মালিক হবে, এটা বৈধভাবে কোনভাবেই সম্ভব নয়।

বিএনপির রাজনীতি করা মনির ২০০১ সালে গণপূর্ত ও রাজউক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। শুরু হয় জালিয়াতি। ভূমিদস্যুতা ও প্লট জালিয়াতির হোতা মনির মেরুল বাড্ডার ডিআইটি প্রকল্পে ছয়তলা আলিশান বাড়িটি বানিয়েছেন। এই ডিআইটি প্রজেক্টেই রাজউকের প্রায় দুইশ’ প্লটও হাতিয়ে নিয়েছেন গোল্ডেন মনির।

র‌্যাব পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম শাখা) লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, মূলত স্বর্ণ চোরাকারকারি ব্যবসা শুরু করেই আজ বিপুল বিত্ত-ভৈববের উনি মালিক হয়েছেন। রাজউকের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগে গোল্ডেন মনির বিপুল প্লটের অবৈধ মালিক হিসেবে বনে যান।

মনির আরও যে সম্পদ করেছেন তার মধ্যে আছে- মনির বিল্ডার্স, উত্তরায় গ্র্যান্ড, জমজম টাওয়ারসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। জমজম টাওয়ারে আছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার সম্পদ। বারিধারায় গোল্ডেন গিয়ার নামে গাড়ির যন্ত্রাংশের দোকান। বাড্ডা ১১ নম্বর সড়কে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা মূল্যের দুটি এবং দুই কোটি টাকা দামের প্লট আছে। 

গুলশান, নিকেতন ও উত্তরা এলাকায় তার ৩০টির মতো ফ্ল্যাট রয়েছে। তার আরও কি সম্পদ আছে তার খোঁজ নিচ্ছে র‌্যাব।

লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে। এছাড়াও রাজউক একটি তদন্ত কমিটি করেছে এসকল বিষয়ে। আশা করি, তাদের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া গেলে এ বিষয়ে পরিষ্কার একটি তথ্যচিত্র পাওয়া যাবে।

দুর্নীতি দমন কমিশনও অনুসন্ধান করছে। বিভিন্ন সংস্থায় তার সম্পদ জানতে চিঠিও দিয়েছে সংস্থাটি। 

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, এখন এমন একটা স্টেজ যে তদন্তকারী অফিসারের কাছ থেকে এই মুহূর্তে কিছু জানাও যাচ্ছে না।

যথাযথ তদন্ত করেই মনিরের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিচার হবে বলেই আশাবাদী দুদক।
ভিডিও :

এএইচ/এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি