পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণার বৈধতার রিট খারিজ
প্রকাশিত : ১৪:২১, ৮ জুন ২০২১
লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা ও আসনটিতে উপ-নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আনা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামাংল হোসেন মোল্লা সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণা ও উপ-নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে রিট সরাসরি খারিজ করে আজ আদেশ দেন।
আসনটির সংসদ সদস্য ছিলেন শহিদ ইসলাম পাপুল। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হন তিনি। ঘুষ লেনদেনের দায়ে কুয়েতের আদালতে তিনি দন্ডিত হলে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয় এবং উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়।
আসনটি শূন্য ঘোষণা ও আসনটিতে উপ-নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন পাপুলের বোন নুরুন্নাহার বেগম এবং ওই আসনের বাসিন্দা পাপুলের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী শাহাদাত হোসেন। সোমবার রিটের শুনানি শেষে আজ আদেশের জন্য ধার্য ছিল।
আইনজীবীরা জানান, রিটটি খারিজ আদেশের ফলে লক্ষ্মীপুর-২ আসন শূন্য ঘোষণা ও উপ-নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল বহাল থাকলো।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিষ্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে জাতীয় সংসদ সচিবালয়। নির্বাচন কমিশন ওই আসনে উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ৪ মার্চ। ঘোষিত তফসিল অনুসারে ১১ এপ্রিল ওই নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে করোনা সংক্রমণ জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তা পিছিয়ে আগামী ২১ জুন নির্ধারণ করা হয়।
ঘুষ লেনদেনের মামলায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পাপুলকে গত ২৮ জানুয়ারি সাজা দেন কুয়েতের ফৌজদারি আদালত। বিচারক রায়ে তাকে ৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের পাশাপাশি ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো সংসদ সদস্য বিদেশের মাটিতে ফৌজদারি অপরাধে দন্ডিত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। গত বছরের ৬ জুন রাতে কুয়েতের বাসা থেকে আটক করা হয় তাকে। কুয়েতে মানব পাচার ও ভিসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল টাকার মালিক হন পাপুল। পাপুল নিজেসহ স্ত্রী সেলিনা ইসলামও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন চলতি সংসদে।
কুয়েতে গ্রেফতার হওয়ার পর দেশেও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের পৃথক দুই মামলায় পাপুলসহ ৬ জনের ৬৭০টি ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। মানব পাচার ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পাপুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর মামলা করে সিআইডি। আসামিদের মধ্যে তাঁর মেয়ে, ভাই ও শ্যালিকাও রয়েছেন। এর আগে ১১ নভেম্বর মানব পাচারে জড়িত থাকার অভিযোগে পাপুল ও তাঁর স্ত্রী সেলিনার বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পাপুলের আসন শূন্য ঘোষণার গেজেটে বলা হয়, কুয়েতের ফৌজদারি আদালতের গত ২৮ জানুয়ারি ঘোষিত রায়ে নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে চার বছর সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুর-২ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শহিদ ইসলাম বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য নন। সেই কারণে সংবিধানের ৬৭(১) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রায় ঘোষণার তারিখ ২৮ জানুয়ারি থেকে তার আসন শূন্য হয়েছে।
এসএ/
আরও পড়ুন