ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

স্থানীয় আ.লীগ নেতার পরিকল্পনায় টিপুকে হত্যা: র‌্যাব

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৩৩, ২ এপ্রিল ২০২২ | আপডেট: ১৪:৩৪, ২ এপ্রিল ২০২২

Ekushey Television Ltd.

রাজধানীর শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু খুনের পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্থানীয় এক নেতাকে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। তিনি হলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক।

তিনিসহ চারজনকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল-মঈন এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, “আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে টিপু হত্যাকাণ্ড ঘটে।”

গ্রেপ্তার অন্য তিনজন হলেন- নাসির হোসেন ওরফে কিলার নাসির, সালেহ সিকদার ও পলাশ। এর আগে ওই হত্যা মামলায় মাসুম মোহাম্মদ আকাশ ও আরফান উল্লাহ দামাল দুজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ; যারা এখন রিমান্ডে রয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সব মিলিয়ে ছয়জন গ্রেপ্তার হলেন।

ডিবির ভাষ্য, আকাশই টিপুকে গুলি চালিয়েছিল।

২০১৩ সালে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী ও ২০১৬ সালে রিজভি হাসান ওরফে বোচা বাবু - এ দুই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে টিপু হত্যার ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। টিপুর অন্যতম সহযোগী ছিলেন রিজভী হাসান বাবু। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া ৪জন জানিয়েছে, মিল্কী হত্যা মামলায় রেহাই পায় টিপু। এরপর বোচা বাবু হত্যাকাণ্ডের বিচারকার্যে টিপুর প্রভাব বিস্তার করলে তাকে হত্যা করেন তারা।

র‌্যাব মুখপাত্র আল মঈন বলেন, “গ্রেপ্তার চারজন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনায় সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তথ্য দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন যাবৎ মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে টিপু ও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান ছিল।”

হত্যাকাণ্ড দেশে হলেও তার নিয়ন্ত্রণ দুবাইয়ে হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “দেশ থেকে কিলার নাছির, কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন যাবত মুসার কাছে তথ্য প্রেরণ করত। ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে অবহিত করে।”

প্রসঙ্গত, মতিঝিল এলাকার চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, স্কুল-কলেজের ভর্তি বাণিজ্য, বাজার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই গুলশান শপার্স ওয়ার্ল্ড এর সামনে মিল্কী হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়। এর ৩ বছরের ভেতর একই এলাকার বাসিন্দা বোচা বাবু হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।  

গ্রেফতার ফারুক ও পলাশ প্রায় একই রকম তথ্য দিয়ে জানায়, মিল্কী হত্যাকাণ্ডে টিপুর সম্পৃক্ততা রয়েছে মর্মে তারা মানববন্ধন, আলোচনা সভা, পোস্টার লাগানো ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করেও লাভ হয়নি। জাহিদুল ইসলাম টিপু মামলা হতে অব্যাহতি পায়। 

পরবর্তীতে স্বার্থগত দ্বন্দ্বের কারণে টিপুর অন্যতম সহযোগী রিজভী হাসানকে ২০১৬ সালে হত্যা করে গ্রেফতার ওমর ফারুক ও অন্যান্য সহযোগীরা। 

বর্তমানে রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের মাধ্যমে বিচার চলছে।
 
গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানায়, তাদের ধারণা প্রতিপক্ষ টিপুর কারণেই রিজভী হাসান হত্যাকাণ্ডটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে স্থানান্তরিত হয়েছে। ইতোমধ্যে মামলার বাদী রিজভী হাসান বাবুর পিতা আবুল কালামের সঙ্গে ৫০ লাখ টাকায় দফারফা করার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন ওমর ফারুক ও তার সহযোগীরা। 

জাহিদুল ইসলাম টিপুর কারণে তারা ব্যর্থ হয় বলে জানায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা। 

উল্লেখ্য, ঢাকার শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকার রাস্তায় ২৪ মার্চ রাতে অস্ত্রধারীর গুলিতে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪)। ওই সময় গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়ি চালক মুন্না।

এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি