প্রতিদিনই বাড়ছে মাদক মামলা, গতি নেই বিচারে (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:১৩, ১৩ জুন ২০২২
মাদক মামলা নিষ্পত্তিতে বড় বাধা সাক্ষীর অভাব। ফলে উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্বেও দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে না মাদকের মামলাগুলো। দ্রত নিষ্পত্তি করতে রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে, আসল দোষীকে দিতে হবে সাজা, মত আইনজ্ঞদের।
২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর হিলি থেকে ছেড়ে আসা বগুড়াগামী বাস থেকে পারভীন বেগম শায়লাকে গ্রেফতার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। শায়লার কাছে পাওয়া যায় ৫০০ গ্রাম হেরোইন। সেই মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে প্রথম কোন নারীকে মাদক মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় আদালত।
মামলাটি উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্সর জন্য আসে। তবে এখনই শুনানী হচ্ছে না আলোচিত মামলাটির। পুরোনো মামলাগুলোর নিষ্পত্তির পর শুরু হবে নতুন মামলা।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, “সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ যে শুনানি করে এটা ক্রমানুসারে হয়। সেই অনুযায়ী এটার শুনানি হবে চারটি বেঞ্চে, আশা করি দ্রুত শেষ হবে।”
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ৪ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৩টি মামলার বিচার চলছে। শুধু আপিল বিভাগে মাদকসংক্রান্ত মামলার বিচার চলছে ১৫শ’র মতো। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার হিসেব বলছে, সারাদেশে ২০০৯ থেকে ২২ সাল পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৯ লাখ ১২ হাজার ৫০টি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা ১১ লাখ ৬৫ হাজার ১০৩ জন।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন অফিসার) কুসুম দেওয়ান বলেন, “পশ্চিমা দেশগুলোতে এ সংক্রান্ত মামলাগুলো ছয় মাস কা এক বছরের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে যায়। আমরা চাইছি এরকম আলাদা বেঞ্চ গঠন করে এগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করতে।”
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমন দিলেও হাজির হচ্ছেন না সাক্ষীরা।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “তদন্ত করে রিপোর্টটা দিতে সময় লাগার কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়। কেননা সকল সাক্ষীকে দেখে রিপোর্ট দিতে হয়। মাদক মামলার আরেকটা বিষয় হচ্ছে মাদকটাকে পরীক্ষা করাতে হয়। যে মাদকটা ঠিক আছে কিনা, এর পরিমাণ কত। এসব কারণে কিছুটা দেরি হয়।”
ময়মনসিংহ জজ কোর্টের পিপি কবির উদ্দিন ভুইয়া বলেন, “যখনই কোন মাদক উদ্ধার করা হয় তখন আশপাশে রিক্সাওয়ালা, সিএনজিওয়ালা পাওয়া যায় আসল যথাযথ জিনিস পাওয়া যায় না। এরপর যখন ট্রায়ালে আসল তখন সাক্ষীদের পাওয়া যায় না।”
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মাদক মামলা দ্রত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছিল।
সিনিয়র আইনজীবী ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ বলেন, “মামলা কবে শুরু হবে কি অবস্থা সেটা বলা যাবে না। সার্চশিট জমা দেওয়ার পর মামলা যখন কোর্টে উঠবে, চার্জ ক্লেইম হবে তখন থেকে ছয় মাসের কথা বলা হয়েছে।”
প্রতিদিনই পুরনো মামলার সাথে বাড়ছে নতুন মামলা। বাড়ছে আসামির সংখ্যাও সেক্ষেত্রে বিচারে নেই তেমন গতি।
এএইচ
আরও পড়ুন