কমলাপুরে রনির অবস্থান: খোঁজ নিতে বললেন হাইকোর্ট
প্রকাশিত : ১১:৫৮, ২০ জুলাই ২০২২
রেলের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মহিউদ্দিন রনির বিষয়ে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে রনির বিষয়ে তথ্য জানাতে বলেন।
সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ বসার পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিকের কাছে রনির অবস্থানের কারণ জানতে চান আদালত।
তখন মানিক বলেন, “আমরাও পত্রিকা ও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি, রেলপথে টিকিটবাণিজ্য ও অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন ওই ঢাবি শিক্ষার্থী।”
এ সময় আদালত বলেন, “ঘটনা কী, খোঁজ নেন। কমলাপুর রেলস্টেশনে একজন ছেলে দিনের পর দিন অবস্থান করছেন, পত্র-পত্রিকা, ফেসবুক, ইউটিউব সবখানে বিষয়টি ভাইরাল এবং আলোচনা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখুন সমস্যা সমাধান করা যায় কি না।”
জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। গত মাসে রেলের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার পর ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অনশন শুরু করেন রনি। ১০ জুলাই ঈদের দিনও তিনি স্টেশনে এই কর্মসূচি পালন করেন।
গত ১৩ জুন বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে ঢাকা-রাজশাহী রুটের ট্রেনের আসন বুক করার চেষ্টা করেন মহিউদ্দিন। কিন্তু মুঠোফোনে ভেরিফিকেশন কোড (যাচাইকরণ কোড) দিয়ে তার পিন কোড (গোপন কোড) ছাড়াই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। মহিউদ্দিন ট্রেনের কোনও আসন পাননি, এমনকি কেন টাকা নেওয়া হল, সে বিষয়ে কোনও ডকুমেন্টও (রসিদ) তাকে দেওয়া হয়নি। সেদিন কমলাপুর রেলস্টেশনে সার্ভার কক্ষে অভিযোগ জানালে সেখান থেকে তাকে ‘সিস্টেম ফল’ করার কথা বলা হয় এবং ১৫ দিনের মধ্যে টাকা না পেলে আবার যেতে বলা হয়। কিন্তু ওই মুহূর্তে ওই কক্ষে থাকা কম্পিউটার অপারেটর ৬৮০ টাকার আসন ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ মহিউদ্দিনের।
এরপর ছয় দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন মহিউদ্দিন। দাবিগুলো হল-
- টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সহজ ডটকম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকিট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।
- অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করতে হবে। সেইসঙ্গে অনলাইন-অফলাইনে টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
- যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
- ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
- ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এসএ/
আরও পড়ুন