ঢাকা, রবিবার   ০২ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

চিকিৎসক স্ত্রী হত্যা: পরিকল্পিতভাবে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছিল রেজাউল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৬, ১২ আগস্ট ২০২২

Ekushey Television Ltd.

রাজধানীর পান্থপথে ফ্যামিলি সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে নারী চিকিৎসক জান্নাতুল নাঈম সিদ্দিকের (২৭) গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তার ‘বন্ধু’ রেজাউল করিম ওরফে রেজাকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকার একটি মেস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। ঘটনার পর কলাবাগান থানায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। র‍্যাব এ ঘটনার পর থেকেই ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জান্নাতুলের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় রেজাউল। সেই মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।’’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার রেজাউলের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০১৯ সালে তাদের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০২০ সালের অক্টোবরে পরিবারের অমতে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। তবে রেজাউলের বিভিন্ন নারীর সাথে সম্পর্ক ছিল, বিষয়টি সম্পর্কে পরবর্তীতে জান্নাতুল জানতে পারে। এ কারণেই তার সাথে প্রতিনিয়ত বাগবিতণ্ডা হতো। তারপরও তার সাথে সম্পর্ক রেখে গিয়েছিল জান্নাতুল। 
মোটিভেশনের মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবন ও সম্পর্ক রাখার জন্য জান্নাতুল কাজ করে আসছিল। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব আরও জানায়, রেজাউলের মোবাইল এবং সামাজিক আইডি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় কুরুচিপূর্ণ মানসিকতা এবং বিকৃত মানসিকতা ছিল। তার সাথে একাধিক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। 

বুধবার (১০ আগস্ট) হত্যার উদ্দেশ্যে সে আবাসিক হোটেলে নিয়ে যায় জান্নাতুলকে। তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। শুক্রবার (১২ আগস্ট) জান্নাতুলের জন্মদিন ছিল। জন্মদিন পালন করার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য তাকে সে হোটেলে নিয়ে যায়। হোটেলে রুমে ঢোকার পর তাদের মধ্যে কথাবার্তার একপর্যায়ে তর্কাতর্কি হয়। তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে রেজা তার সাথে থাকা ব্যাগ থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে জান্নাতুলের শরীরে আঘাত করে। তাকে হত্যা করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে ধারালো ছুরিটি ব্যাগে কয়েকদিন ধরে বহন করে আসছিল রেজাউল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হত্যার পর রক্তমাখা জামা পরিষ্কার করে হোটেলে গোসল সারে রেজাউল। পরে সেখান থেকে বের হয়ে চলে যায়। ধস্তাধস্তির কারণে সে হাতে কিছুটা আঘাত পায়। হোটেল থেকে বের হয়ে প্রাথমিকভাবে একটি ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিয়ে পরে সে চট্টগ্রামে চলে যায়। এক নিকট আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান নেয়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার থেকে কীভাবে বাঁচতে পারে সেজন্য আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করার চেষ্টা করে সে। 

ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ, এমবিএ শেষ করে একটা বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেছিল রেজা। পরে সেখান থেকে চাকরি চলে যায়। বর্তমানে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো।

নিহত জান্নাতুল মগবাজার কমিউনিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে এমবিবিএস পাস করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রী ও গাইনি বিষয়ে কোর্স করছিল।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি