বাড়ির দখল ফিরে পেতে আদালতেই কেটেছে ৩০ বছর! (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:০০, ৪ নভেম্বর ২০২২ | আপডেট: ১২:০১, ৪ নভেম্বর ২০২২
দেশে বিচারাধীন প্রায় ৪০ লাখ মামলার অধিকাংশই দেওয়ানি মামলা। যুগের পর যুগ আদালতে ঘুরলেও শেষ হয় না মামলা। বাদী-বিবাদী কেউই জানেন না এর শেষ কখন। তবে এর জন্য পুরোনো আইনকে দুষছেন আইনজীবীরা। জানান, বিচারক স্বল্পতা, আইনজীবী ও পক্ষগণের আন্তরিকতার অভাবে মামলার দীর্ঘসূত্রিত হয়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চে বিচার কাজ চলার শেষ মুহূর্তে আদালতের ডায়াসে গিয়ে হাজির হন রোকেয়া নামে একজন বিচারপ্রার্থী। তখন প্রধান বিচারপতি তার কাছে জানতে চান, কিসের মামলা। রোকেয়া জানান, বাড়ির মামলা। পূর্ত মন্ত্রণালয়, ম্যাজিস্ট্রট কোর্ট, জজ কোর্ট এর পর হাইকোর্ট হয়ে ৩০ বছর ধরে চলছে মামলা।
একসময় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহীনীতে চাকরি করা দিনাজপুরের রোকেয়া বেগম এখন অসুস্থ। ১৯৯০ সালে সরকার থেকে বরাদ্দ পাওয়া বাড়ির দখল ফিরে পেতে আদালত বারান্দায় ঘুরেই কেটেছে ৩০ বছর।
রোকেয়া বলেন, "নিম্ন কোর্টে আমি জিতেছি, জজ কোর্টেও জিতলাম, হাইকোর্টেও আমি জিতছি, ওরাতো হেরে যায় আর কেস করে।"
রোকেয়া বেগমের মত অনেকের জমি উচ্ছেদ দখলরে মামলা চলছে যুগের পর যুগ ধরে। দেশে বিচারাধীন প্রায় ৪০ লাখ মামলার অধিকাংশই দেওয়ানী মামলা। আইনজীবীরা বলছেন, পুরাতন আইন সংশোধন হলে পক্ষভুক্তদের ডিজিটাল পদ্ধতিতে সমন দিলে কমবে জট।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, "এই সমনের জন্যই একটা মামলা দুই তিন বছর চলে যায়। এই যে দুই পক্ষ্রের টানাটানি, এক পক্ষ আসে কোর্টে, আরেক পক্ষ আসেনা। এক্ষত্রে প্রত্যেক বিবাবদীর নামের সাথে মোবাইল নম্বর দিয়ে দেবে, মোবাইলে দুই তিনটা মেসেজ দিয়ে দেবে।"
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, "কথায় কথায় যে এতো আপিল এতো রিভিশন, এই জায়গাগুলোকে সংশোধন প্রয়োজন।"
মামলার ধীরগতির কারণে বিচারপ্রার্থীদের কাছ থেকে নেয়া অর্থ অনেক সময়ই মানসিক পিড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়, বলছেন আইনজীবীরা।
মানবাধিকার কর্মী এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ফৈৗজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, "আমি অপরাধবোধে ভুগি, আমরা মনে করি বিচার দিয়ে দিব, অনেকে আছেন যারা জানেন যে রায় টা আপনার পক্ষে হবে কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আপনি লক্ষে পৌঁছাতে পারছেন না।"
মামলাজট কমাতে প্রধান বিচারপতি এরই মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তবে দ্রুত আইন সংশোধন করে যুগোপযোগি করার উপর জোড় দেন আইনজ্ঞরা।
এসবি/
আরও পড়ুন