ঢাকা, বুধবার   ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

পারিবারিক মামলায় নানা ভোগান্তি, নতুন আইনেও নেই পূর্ণ স্পষ্টতা (ভিডিও)

শাকেরা আরজু

প্রকাশিত : ১১:২২, ২ অক্টোবর ২০২৩ | আপডেট: ১৫:০৪, ২ অক্টোবর ২০২৩

দেনমোহর ও সন্তানের ভরণপোষণের মামলায় বছরের পর বছর ঘুরতে হয় ভুক্তভোগী নারীদের। সময় যায় কিন্তু নিষ্পত্তি হয়না মামলার। নতুন পারিবারিক আইনে ই-মেইলে সমন জারি, ডিজিটাল সাক্ষ্যগ্রহণ, কোর্ট ফি বাড়ানোসহ বেশ কয়েকটি সংশোধনী আনা হয়েছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবকাঠামো উন্নয়ন, ডিভোর্সের আগে দেনমোহর পরিশোধ ও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়ে স্পষ্টতার প্রয়োজন ছিল আইনে। 

২০২০ সালে দেনমোহর ও সন্তানের ভরণপোষণের জন্য ঢাকার ১৩ নম্বর পারিবারিক আদালতে মামলা করেন তানিয়া। মামলার প্রথম দিকে বিবাদী হাজির হয়নি। পরে যখন আদালতে হাজিরা দেন তখন সময় আবেদন করে মামলা পেছাতে লাগলেন তিনি। বর্তমানে মামলা সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। এই ৩ বছর ধরে দেনমোহর ও ভরণপোষণ বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় বিপাকে বাদি তানিয়া।

তানিয়ার মত অনেকে পারিবারিক আদালতে পারিবারিক পাঁচটি সমস্যা নিয়ে মামলা করতে যান। বিবাহবিচ্ছেদ, দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার, দেনমোহর, খোরপোশ ও শিশুসন্তানের অভিভাবকত্ব ও তত্ত্বাবধান। এই আদালতের উদ্দেশ্য হলো অল্প খরচে ও কমসময়ে নারীদের অধিকার দ্রুত নিষ্পত্তি করা। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, “৮০ শতাংশ বিচারপ্রার্থী হচ্ছেন নারীরা। আইন যদি স্ট্রিকট না হয় তাহলে তাদের পুরোপুরি রিলিফ দেওয়া সম্ভব নয়। এখানে কোনো ধরনের টাইম লিমিট নাই, যদি উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে মাধ্যমে ৬ মাস হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ৬ মাসে মামলা শেষ হয়না।”

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হওয়ায় সম্প্রতি ফ্যামিলি কোর্টস অর্ডিন্যান্স ১৯৮৫ বাতিল করে বাংলায় নতুন বিল আনা হয়। সংশোধিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো জেলাতে আপিলের জন্য অতিরিক্ত মামলা থাকলে জেলা জজ পর্যায়ের অন্য যে জজরা আছেন, তাদেরও আপিল আদালত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। আর্জি দাখিলের ক্ষেত্রেও সংশোধনী এসেছে নতুন বিলে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, “সমন জারির ক্ষেত্রে বাদি ইচ্ছা করলে ই-মেইল নম্বর দিয়ে  সমন জারি করতে পারবেন। ই-মেইলটা কতোটা কার্যকরী আমার কাছে মনে হচ্ছেনা, কারণ বাংলাদেশের প্রান্তিক মানুষ এখনও ই-মেইল আইডি খুলতে পারেনা।”

আইনজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক আইনে বেশ কিছু জায়গায় স্পষ্টতা প্রয়োজন।

আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, “যে কোনো কোর্টের চেয়ে সবচেয়ে বাজে পরিবেশ হচ্ছে ফ্যামিলি কোর্টগুলোতে। প্রতিটা ডিফোর্সের আগেই যদি দেনমোহর ও ৩ মাসের খরপোষের বিষয়ে আইন থাকতো তাহলে ডিফোর্স দেয়ার ক্লিয়ারেন্স পেতো না। এতে মামলাও কমতো।”

অধিকার আদায়ের সর্বশেষ অবলম্বন হিসেবে ভুক্তভোগী আশ্রয় নেন পারিবারিক আদালতে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতা, মামলা চালানোর অর্থাভাব, অন্যপক্ষ থেকে মানসিক চাপ সেই ভুক্তভোগীকে নিতে হয়। সুবিচার পাওয়ার প্রক্রিয়ার দ্রুত সনাতন পদ্ধতিগুলোর আধুনিক সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি