চার সপ্তাহের মধ্যে চামড়া শিল্প নগরীর নির্মাণ শেষ করার নির্দেশ
প্রকাশিত : ১৭:২৮, ১২ অক্টোবর ২০১৭
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি)সহ অবকাঠামোগত সব নির্মাণ কাজ চার সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। একইসঙ্গে কঠিন বর্জ্য যাতে তরল বর্জ্যের সঙ্গে মিশ্রিত না হয়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রইস উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।
পরে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, হাজারীবাগের দূষণ যেন সাভারে না হয়, সেজন্য বারবার আদালতে আসা। আদালত এবিষয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) আদেশে বলা হয়েছে, সিইটিপি চার নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন প্রতি ঘণ্টায় মনিটর করে ১২ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, তরল বর্জ্যে যেন কঠিন বর্জ্য না যায়, তার জন্য প্রত্যেক কারখানার পাইপে যেন বায়োস্ক্রিন লাগানো হয়, সে ব্যাপারেও নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী রইস উদ্দিন বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে শিল্প মন্ত্রণালয় ও বিসিকের পক্ষে কিছু প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরপর আদালত পরিবেশ সম্মতভাবে কাজ চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করতে প্রত্যেক ফ্যাক্টরিতে বার বসাতে হবে। এছাড়া, অসম্পন্ন কাজ চার সপ্তাহের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, বর্জ্য শোধনাগারের মনিটরিং প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলেছেন। এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে বুড়িগঙ্গার মতো ধলেশ্বরী নদীর দূষণ ঠেকাতে সাভারের ট্যানারি পল্লীর বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
আবেদনে সাভারের ট্যানারি পল্লীর পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণকারী কার্যক্রম (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক) রিকোভারি ইউনিট, লবণাক্ত দূষণ প্রতিরোধক এবং কঠিন বর্জ্য পরিশোধকের সর্বশেষ অবস্থা জানতে চাওয়া হয়।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০১ সালে ট্যানারি শিল্প হাজারীবাগ থেকে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর দীর্ঘদিন ধরে ওই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় অন্য এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাজারীবাগের ট্যানারি শিল্প অন্যত্র সরিয়ে নিতে ২০০৯ সালের ২৩ জুন হাইকোর্ট ফের নির্দেশ দেন।
সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরে ওই সময়সীমা কয়েক দফা বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।
কিন্তু এ সময়ের মধ্যেও স্থানান্তর না হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা করেন পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মনজিল মোরসেদ। এরপর আদালতের নির্দেশে ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাজারীবাগের সব ট্যানারির ইউটিলিটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
আরকে/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন