ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ১০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ ও হত্যায় ৩ যুবকের মৃত্যুদণ্ড

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:০২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৫৯, ৩ অক্টোবর ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বাকাকুড়া গ্রামের ব্র্যাক স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী বীনা আক্তারকে (১৫) গণধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার দায়ে তিন যুবককে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্তদের এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানাল আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মামলার ১নং আসামী বাকাকুড়া গ্রামের ফজল হকের ছেলে আমান উল্যাহ্ (২৩), মৃত মজিবর রহমানের ছেলে কালু (৩০) (পলাতক), হাবিবুর রহমানের ছেলে নূরে আলম (২৮)।

এছাড়াও আদালতে দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর ৩ আসামী হারুন-অর-রশিদ (৩৬), সুন্দরী বেগম (৩৬), আনোয়ার হোসেন আনুকে (১৮)বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। 

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইগাতী উপজেলার সীমান্তঘেষা বাকাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল সেকের কন্যা ব্র্যাক স্কুলের ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া বীনা আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের প্রতিবেশী ফজল হকের ছেলে আমান উল্যাহর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে আমান উল্যাহ্ বিনাকে বিয়ে করতে চাইলে তার বাবা মা বাঁধসাধে। এ ঘটনার পর বীনার বাবা মাসহ তারা ঢাকায় চলে যায় এবং গার্মেন্টেসে চাকরি নেন। পরবর্তীতে বেশকিছু দিন পর বীনা আক্তার ও তার বাবা-মা গ্রামের বাড়ি বাকাকুড়া গ্রামে ঈদ করতে আসেন। ঈদ শেষে কিশোরী বীনা আক্তারকে তার নানীর কাছে রেখে তার বাবা মা পুনরায় ঢাকায় চলে যায়।

এ দিকে, ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই রাত ৮টার দিকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আসামী কালু বীনার নানী বাড়ি থেকে কৌশলে তাকে (বীনা) ডেকে নিয়ে যায়। পরে মামলার ১নং আসামী আমান উল্যাহ্, নূরে আলম, কালুসহ বীনা আক্তারকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এবং ধর্ষণ শেষে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা শেষে বিনার লাশ যাতে কেউ চিনতে না পারে এ জন্য হত্যাকারীরা তার মুখমন্ডলে এসিড দিয়ে ঝলসে দেয়, পরে তার যৌনাঙ্গে একটি গাছের ডাল ঢুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে বীনার লাশ বাকাকুড়া এতিমখানার পশ্চিম পার্শ্বে শিলঝুড়া খালে ফেলে দেয়। এ দিকে, বিনার নানীসহ আত্মীয় স্বজন অনেক খোঁজাখুজির দুইদিন পর ২১ জুলাই স্থানীয় এক ইউপি সদস্য বীনার লাশ ওই খালে ভাসতে দেখে বিনার পরিবারের কাছে খবর দেয়। আত্মীয় স্বজন ঘটনাস্থল গিয়ে বীনার জামা কাপড় দেখে তার লাশ সনাক্ত করে।

খবর পেয়ে বিনাইগাতী থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় বীনা আক্তারের মা সবুজা খাতুন আমান উল্যাহ্ (২৩), কালু (৩০), নূরে আলম (২৮), হারুন-অর-রশিদ (৩৬), সুন্দরী বেগম (৩৬), আনোয়ার হোসেন আনু (১৮)সহ ৬ জনকে চিহ্নিত করে ২১/৭/১৬ইং তারিখে ঝিনাইগাতী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার পর পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রেমিক আমান উল্যাহ্ ও সহযোগী নূরে আলমকে গ্রেফতার করলেও এ ঘটনার পর থেকেই অপর আসামী কালু পলাতক থাকে।

মামলা তদন্তকারী অফিসার উপ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম তদন্ত শেষে ৬ আসামীর বিরুদ্ধে বিগত ২০/১০/২০১৬ ইং তারিখে আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। মামলার ১৬ জনের সাক্ষী গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুানাল আদালতের পিপি এড. গোলাম কিবরিয়া বুলু ও আসামি পক্ষে ছিলেন এড. হরিদাস সাহা। 

একে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি