ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় নুসরাতের খুনিদের কুমিল্লায় নেয়া হচ্ছে আজ
প্রকাশিত : ০৯:৪০, ১২ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১০:৪৭, ১২ নভেম্বর ২০১৯
ফেনী কারাগারে কনডেম সেল না থাকায় কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছে নুসরাত হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ১৬ আসামিকে। এদের মধ্যে আজ মঙ্গলবার কুমিল্লায় পাঠানো হবে ১২ আসামিকে। ফেনী কারাগারের জেলার দিদারুল আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফেনী জেলা কারাগারে পৃথক কনডেম সেল ও ফাঁসির মঞ্চ না থাকায় নুসরাত হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন)।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের জানান, ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১৪ জনকে কুমিল্লা ও দুইজন মহিলা আসামিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।
তিনি আরও জানান, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজউদ দৌলার ১৩ নভেম্বর আদালতে নুসরাতকে যৌন হয়রানির মামলার দিন ধার্য আছে। এ জন্য আদালতের কার্যক্রম শেষে তাকে ওই দিনই কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে। সেইসঙ্গে আরেক আসামি মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীনকেও ওইদিন কুমিল্লায় পাঠানো হবে। আর বুধবার মহিলা আসামি কামরুন নাহার মনি ও উম্মে সুলতানা ওরফে পপিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হবে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- অধ্যক্ষ সিরাজউদ দৌলা, নূর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদ আলম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, হাফেজ আব্দুল কাদের, আবছার উদ্দিন, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা, আব্দুর রহিম শরীফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন ওরফে মামুন, মোহাম্মদ শামীম, মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি রুহুল আমীন ও মহিউদ্দিন শাকিল।
গত ২৪ অক্টোবর আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলার ১৬ আসামির সবাইকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নির্দেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। আসামিদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ দৌলাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।
ফেনী জেলা কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদের আরও বলেন, যে সব আসামির দীর্ঘ মেয়াদি শাস্তি ও মৃত্যুদণ্ড হয়, সে সব আসামিদের জেলা কারাগারে না রেখে নিরাপত্তা জনিত কারণে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর জন্য কারাবিধিতে নির্দেশনা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগারগুলোতে জনবল ও কনডেম সেলের সংখ্যা বেশি। তাদের পরিচালনার জন্য যা যা প্রয়োজন সব সেখানে রয়েছে। ফেনী জেলা কারাগারে ফাঁসির কোনও মঞ্চ নেই, সেখানে সব রয়েছে।
একে//
আরও পড়ুন