হলি আর্টিজান মামলার রায় : নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার
প্রকাশিত : ০৯:৩৪, ২৭ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ০৯:৫৫, ২৭ নভেম্বর ২০১৯
আজ রায় হতে যাচ্ছে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার। ১৭ নভেম্বর, রবিবার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। এই রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
রায়কে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার সকাল থেকে রায় উপলক্ষে আদালত এলাকায় র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা দেখা গেছে ঢাকা আদালত এলাকায়।
শুধু আদালত নয়, পার্শ্ববর্তী এলাকায়ও সতর্ক অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রায়সাহেব বাজার মোড় থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পুরো সড়কে বাড়তি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে পুলিশ। সেসঙ্গে সাদা পোশাকে তৎপর রয়েছেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
বুধবার সকাল থেকেই পুরো আদালত এলাকা খালি করে রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া আদালতে প্রবেশে তল্লাশি চালাচ্ছেন র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।
জানা গেছে, সকাল ১০টা নাগাদ আসামিদের প্রিজনভ্যানযোগে কারাগার থেকে আদালতে আনা হতে পারে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ ডিভিশনের (ডিসি) মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, হলি আর্টিজান রায়কে কেন্দ্র করে আদালতপাড়া ও এর আশ-পাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন রয়েছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণজুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রাঙ্গণে জনসাধারণের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। যারা প্রবেশ করবেন সবাইকে তল্লাশির মাধ্যমে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান, আগামী কয়েক দিন র্যাব সতর্ক অবস্থায় থাকবে।
র্যাবের মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক জঙ্গিবাদ পরাস্ত না হওয়া পর্যন্ত দেশে-বিদেশে জঙ্গিবাদের ঝুঁকি থেকেই যাবে। তবে বাংলাদেশে কখনোই পরিপূর্ণ জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। দেশের মানুষ জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। তারপরও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ক্রমাগতভাবে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘হোলি আর্টিজানে হামলার পর অনেক বড় দেশ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। তারা বাংলাদেশ দেশ থেকে বিনিয়োগ ফিরিয়ে নিতে চেয়েছিল। তখন বাংলাদেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দর বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সেই অবস্থার উন্নতি ঘটেছে। যখনই জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে, তখনই তাদের নস্যাৎ করে দেয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কের পাশে অবস্থিত হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হামলা চালান। অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করেন জঙ্গিরা। ওই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা রবিউল করিম ও সালাউদ্দিন খান নিহত হন। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৩১ সদস্য ও র্যাব-১ এর তৎকালীন পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদসহ ৪১ জন আহত হন। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডোদের অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন। পরে পুলিশ ১৮ বিদেশিসহ ২০ জনের লাশ উদ্ধার করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান একজন রেস্তোরাঁকর্মী। অভিযানের আগে ও পরে ৩২ জনকে উদ্ধার করা হয়।
এসএ/
আরও পড়ুন