বাসচাপায় রাজীব-দিয়া হত্যার মামলার রায় আজ
প্রকাশিত : ০৯:৪৩, ১ ডিসেম্বর ২০১৯
বহুল আলোচিত রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব-দিয়া হত্যা মামলার রায় আজ।
রোববার (১ ডিসেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের দিন (আজ) ধার্য করেন আদালত। দুর্ঘটনার ১ বছর ৪ মাস ১ দিন পর এ রায় হচ্ছে। এ মামলায় ৪১ জনের মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
গত বছরের ২৯ জুলাই বাসচাপায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মীম (১৬) নিহত হন। আহত হয় অন্তত ১০ জন।
এ ঘটনায় ওই দিনই নিহত দিয়ার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ওই সময় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, হত্যা বলে বিচার দাবি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির মুখে নিরাপদ সড়ক আইন করা হয়।
জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল গণমাধ্যমকে জানান, ‘চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করা হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ সক্ষম হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছি।’
নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মীমের মা রোকসানা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ে যদি রাস্তা পার হওয়ার সময় অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) হতো, তাহলে মনে এতটা দুঃখ থাকত না। মনে করতাম, হয়তো আমার মেয়েরই ভুল ছিল। হয়তো মেয়েই দেখে রাস্তা পার হতে পারেনি।
কিন্তু আমার মেয়ে গাড়িতে ওঠার জন্য রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিল। যেখান থেকে যাত্রীরা গাড়িতে ওঠে, সেখানেই দাঁড়িয়েছিল। ড্রাইভারটা যদি একটু সাবধানে গাড়ি চালাত, তাহলে আমার মেয়ে মারা যেত না। আদালতের কাছে আমরা ন্যায়বিচার প্রার্থনা করি।’
আদালত সূত্র জানায়, গত বছরের ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষিতে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ১০ জন আহত হন।
২৫ অক্টোবর এ মামলায় জাবালে নূরের মালিকসহ ওই ছয় আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন আদালত। এরপর গত বছরের ১ নভেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যান। আসামিদের মধ্যে কাজী আসাদ পলাতক রয়েছে। আর আসামি শাহাদাত হোসেনের পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় তার অংশ বাদ দিয়ে বিচার কার্যক্রম চলেছে। বাকি চার আসামি কারাগারে আছেন।
এআই/
আরও পড়ুন