ভিটামিন ডি-র অভাব কতটা বিপজ্জনক
প্রকাশিত : ২১:১১, ১৯ আগস্ট ২০২০
শরীরের অন্যতম জরুরি একটি ভিটামিন, ভিটামিন ডি। এটি যে কেবল হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য ভাল রাখে এমন নয়, যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে ও শরীরের প্রতিরোধী ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে তার বিরাট ভূমিকা রাখে।
ত্বকে নিয়মিত নির্দিষ্ট সময় ধরে রোদ লাগলে ভিটামিন ডি তৈরি হয় ঠিকই, কিন্তু সমীক্ষা বলে গরম ও রং কালো হয়ে যাওয়ার ভয়ে বেশির ভাগ মানুষই রোদ থেকে দূরে থাকেন। ব্যবহার করেন ছাতা, টুপি, সানগ্লাস, সানস্ক্রিন। ফলে দিনে ৩০-৪০ মিনিট খোলা শরীরে রোদ লাগানোর নিয়ম মানলে সমস্যা মেটে, তা হয় না। মাঠে বা পার্কে হাঁটাহাটি করলে কিছুটা কাজ হয়। সেটাও হয়ে ওঠে না। কারণ স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ জিমে ব্যায়াম করাই বেশি পছন্দ করেন। একটু অসাবধানতার কারণেই শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি হচ্ছে না, মানুষ জন নানা সমস্যায় ভুগছেন। যেমন-
প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়া
ভিটামিন-ডি আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বার বার অসুস্থ হয়ে পড়া শরীরে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতির সঙ্কেত হতে পারে।
হাড় এবং পিঠে ব্যথা
ভিটামিন-ডি শরীরে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যদি নিয়মিত শরীরে হাড় বা পিঠে ব্যথা বোধ করেন, তাহলে বুঝবেন এটা ভিটামিন-ডি’র অভাবের কারণে ঘটতে পারে।
শরীরের ঘা শুকাতে দেরি হলে
গবেষণায় দেখা গেছে ভিটামিন-ডি শরীরে নতুন চামড়া গজাতে সাহায্য করে। শরীরের যে কোনো অংশে হওয়া ঘা শুকানোর ব্যাপারেও বিশেষভাবে সাহায্য করে। তাই ঘা শুকাতে দেরি হলে বুঝবেন শরীরে ভিটামিন-ডি’র অভাব।
হাড় ক্ষয় হতে শুরু করলে
ক্যালসিয়ামের এভাবে শরীরের হাড় ক্ষয় হতে শুরু করে। ক্যালসিয়াম সংশ্লেষণের ক্ষেত্রে ভিটামিন-ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৃদ্ধ বয়সে যারা হাড়ের সমস্যাতে ভোগেন, তাদের ক্যালসিয়ামসহ বেশ কিছু খনিজের অভাব পূরণ করতে বলা হয়, সেই সঙ্গে ভিটামিন-ডি’র দিকেও বিশেষ নজর বলে থাকেন চিকিৎসকরা।
মাংসপেশিতে ব্যথা
ভিটামিন-ডি’র অভাবে শরীরের মাংসপেশিতে ব্যথা যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। এই ভিটামিন শরীরের মাংসপেশিকে দৃঢ়তা প্রদান করে, যার ফলে ব্যথা যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ক্লান্ত বোধ করা
সুস্থ জীবনধারা ও গভীর ঘুম হওয়ার পরেও যদি আপনি ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি হচ্ছে। এই বিষয়টি কখনই এড়িয়ে যাবেন না, সেক্ষেত্রে কীভাবে এই ঘাটতি পূরণ করা যায় সেদিকে নজর দিন।
অবসাদ বোধ
ভিটামিন-ডি’র অভাবে আপনার মনে অবসাদের সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, অবসাদগ্রস্থ ব্যক্তিকে সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার পর সে অনেকটাই সুস্থ বোধ করেন।
চুল পড়া
অতিরিক্ত চুল ঝরা মানে, অবশ্যই আপনার শরীরে পুষ্টির অভাব আছে। শরীরে ভিটামিন-ডি’র অভাবে আপনার চুল বেশি মাত্রায় ঝরতে পারে।
কীভাবে ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি পূরণ করবেন?
আপনি যদি প্রতিদিন ১০ মিনিট সূর্যের আলোর নিচে বসতে পারেন তাহেল ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি পূরণ হবে। এছাড়া ভিটামিন-ডি’র ঘাটতি পূরণের জন্য খেতে পারেন ফল, ছোট মাছ, পনির, ডিমের কুসুম, মাশরুম ও দুধ। জরুরি প্রয়োজনে নির্ধারিত মাত্রায় ভিটামিন-ডি’র ওষুধ নিতে পারলে এর ঘাটতি পূরণ হতে পারে।
করোনা সংকটকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকাটাই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে যাতে কোন কিছুর অভাব না ঘটে সে দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত।
এসইউএ/এসি