ঢাকা, সোমবার   ১৪ অক্টোবর ২০২৪

প্রতিবেশীর সঙ্গে আচরণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:১৩, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

প্রতিবেশী, অধস্তন ও গৃহকর্মীর সাথে আচরণ একজন মানুষের জীবনবোধের পরিচায়ক। সেইসাথে সুখী-সুন্দর নীড়ের অন্যতম শর্ত পরিচ্ছন্নতা ও রুচিশীলতা। ব্যক্তিত্বের এ দিকগুলো সবচেয়ে বেশি প্রকাশ পায়  ঘরোয়া পরিবেশে। আজ আমরা জানবো ঘরোয়া পরিবেশে সহজে পালনীয় কিছু শুদ্ধাচার, যা আপনার জীবনকে করে তুলবে আনন্দঘন ও প্রশান্তিময়।

চলুন জেনে আসা যাক...

> আপনার বাসার চারপাশে (ডানে-বামে-ওপরে-নিচে সামনে ও পেছনে) ৪০ ঘর হচ্ছে প্রতিবেশী। সময়-সুযোগ করে তাদের সাথে পরিচিত হোন। যোগাযোগ রাখুন।

> দেখা হলে আগে সালাম দিন। হাসিমুখে কুশল বিনিময় করুন।

> প্রতিবেশীর দেয়া যে-কোনো ছোট উপহার সাদরে গ্রহণ করুন।

> প্রতিবেশীর কাছ থেকে কোনো প্রয়োজনীয় জিনিস তাকে না বলে আনবেন না। যদি অনুমতি নিয়ে কিছু আনতে হয়, তা অক্ষত অবস্থায় দ্রুত ফেরত দিন। ক্ষতি হলে বা হারিয়ে গেলে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করুন এবং সুযোগ থাকলে কিনে দিন।

> সবসময় সচেতন থাকুন ও নিজের জন্যে প্রার্থনা করুন− ‘আমি যেন আমার প্রতিবেশীর কষ্টের কারণ না হই’। প্রতিবেশীর সাথে কোনো ধরনের বিবাদে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকুন।

> ভালো কিছু রান্না করলে অল্প হলেও প্রতিবেশীকে পাঠান।

> নবীজী (স) বলেছেন, ‘প্রতিবেশীকে অভুক্ত রেখে যে পেট পুরে খায়, সে বিশ্বাসী নয়’। প্রতিবার খাওয়ার আগে প্রতিবেশী অভুক্ত আছে কিনা খোঁজ নেয়া সম্ভব নয়। তাই ভাত রান্নার সময় একমুঠো পরিমাণ চাল আলাদা পাত্রে উঠিয়ে রাখুন। মাস শেষে এই চালের সমপরিমাণ অর্থ দান করে দুস্থ ও এতিমদের অন্নের সংস্থান করুন।

> প্রতিবেশীর আনন্দে শরিক হোন। তার সাথে মমতার বন্ধন গড়ে তুলুন। কিন্তু সম্পর্কের সীমা বজায় রাখুন।

> পাশাপাশি অবস্থানের কারণে পরস্পরের দোষ-গুণ সহজে জানার সুযোগ হয়। এ-ক্ষেত্রে প্রতিবেশীর দোষ বলে বেড়ানো থেকে বিরত থাকুন।

> প্রতিবেশীর কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা জনসমক্ষে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। অবশ্য যদি বেআইনি ও সন্দেহজনক কিছু দৃষ্টিগোচর হয়, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানান।

> প্রতিবেশীর মন্দ আচরণের জবাবে আপনি সবসময় ভালো আচরণ করুন।

> নিত্যপ্রয়োজনীয় ছোটখাটো সাহায্য-সহযোগিতায় কখনো বিরক্ত হবেন না।

> নিজের বাড়ি বা জমি বিক্রি করার আগে প্রতিবেশীকে জিজ্ঞেস করতে পারেন তিনি কিনতে আগ্রহী কিনা। আগ্রহী হলে ন্যায্য দামে কেনার সুযোগ দিন।

> কেউ প্রতিবেশীর ক্ষতি করতে চাইলে যথাসম্ভব প্রতিহত করুন। কেননা প্রতিবেশীর ঘরে আগুন লাগলে তা আপনার ঘরকেও ছারখার করে দিতে পারে।

> অসুস্থ হলে দেখতে যান। পথ্য, শুশ্রূষাসহ যে সেবা প্রয়োজন তা সাধ্যমতো তাকে দিন।

> প্রতিবেশী কেউ মৃত্যুবরণ করলে সৎকার-কাফন-দাফনের সাহায্যে এগিয়ে আসুন। জানাজায় অংশ নিন।

> বিপদে-আপদে প্রতিবেশীর প্রয়োজনে এগিয়ে আসুন, সান্ত্বনা দিন। প্রতিবেশীর কল্যাণে আপনাকে যদি কিছু ছাড়ও দিতে হয়, অম্লান বদনে তা করুন। প্রাকৃতিক নিয়মেই দানের উত্তম প্রতিদান আপনি পাবেন।

সচেতনভাবে বিরত থাকুন

> জানালা-খোলা দরজার সামনে দিয়ে চলাফেরার সময় প্রতিবেশীর বাড়িতে উঁকি দেয়া।

> প্রতিবেশীর উঠানে-দরজার সামনে ময়লা ফেলা।

> উচ্চশব্দে গান বাজানো ও টিভি দেখা। কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে হইহল্লা করে প্রতিবেশীর ঘুম বা বিশ্রামের ক্ষতি করা।

> প্রতিবেশীর চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়া।

> প্রতিবেশীর ফসলের ক্ষতি করা কিংবা প্রতিবেশীর গবাদি পশু এসে কিছু নষ্ট করেছে বলে পশুটিকে আঘাত করা।

> প্রতিবেশীর সঙ্গে ঝগড়া করা-প্রতিবেশীকে গালমন্দ করা।

> নিজের বাড়ির-জমির সীমানা পিলার, দেয়াল, জানালা, সিঁড়ি প্রতিবেশীর জমিতে ঢুকিয়ে দেয়া।

> প্রতিবেশীর কাছ থেকে যখন-তখন টাকা বা বিভিন্ন দ্রব্যাদি ধার নেয়া।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি