সোনামনিদের খাবার-দাবার
প্রকাশিত : ১৮:৩৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৪৩, ৭ জুন ২০২১
আমরা সোনামণিদের খাওয়া দাবার নিয়ে অনেক সময়েই চিন্তিত থাকি। কোন খাবারগুলো খাওয়াবো আর কোন খাবারগুলো খাওয়াবো না। শিশুদের খাবারের বিষয়ে আমাদের অবশ্যই পুষ্ঠিগুণ বিচার করে খাদ্য তালিকা তৈরি করা উচিত। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক শিশুদের মেনুগুলো কী কী হওয়া উচিত-
নাস্তার মেনু:
- যে কোনো একটি ফল। আঙ্গুল-আপেল হতে হবে এমন কোনো কথা নই। কারণ আমাদের দেশীয় ফলেও কম গুণ নয়। দেশীয় ফল সস্তা ফলে কম গুণ দিয়েছে আর দামী ফলে বেশি গুণ দিয়েছে, মোটেও তা নয়। কেউ যদি ফল খেতে না পারে তবে ফলের রস খাওয়া যায়। তবে আস্ত ফলে যে আঁশ থাকে তা খুব উপকারী।
- ময়দা খাও চলবে না, আটার রুটি ও তার সাথে এক বা একাদিক সবজির ভাজি।
- সেদ্ধ ডিম, মাঝে মাঝে স্বাদ বদলের জন্য ডিম ভাজা খাওয়া যায়, তবে তেল কম দিয়ে ভাজতে হবে। সাথে মাশরুম কুচি দেওয়া যায়।
- খুব কম তেলে ভাত ভাজা। সাথে সালাদ হিসেবে শসা, গাজর ও টরেটো।
- শসা কুচি, পেঁয়াজ কুচি, মরিচ ও ধনেপাতার সঙ্গে সমপরিমাণ ভেজা চিড়া মিশিয়ে ভর্তা।
- অঙ্কুরিত মুগের ঘুগনি। একইভাবে ছোলা ও মটরশুঁটির ঘুগনিও বানানো যায়। যবের ছাতু বা ওটস গরম দুধে ভিজিয়ে খাওয়া যায়।
- আটার রুটি ও হালুয়া। হালুয়ায় গুড়ের সঙ্গে সুজি, সাগু ও গাজর দেওয়া যেতে পারে।
- সাগুর সাথে ডাল মিশিয়ে খিচুড়ি বানানো যায়।
- ঝাল বা মিষ্টি পিঠা, তবে চিনি নয়, গুড়ের মিষ্টি দেওয়া ভালো।
- টক দই। মিষ্টি করতে হলে সাথে গুড় বা মধু মেশানো যেতে পারে।
- স্মরণশক্তি বাড়ার জন্য সকালে থানকুনির রস ৪ টেবিল চামচ ও মধু খাওয়া ভালো।
স্কুলের টিফিন:
- শসা, গাজর ও কাঁচা পেঁপে।
- দেশি ফল, যেমন-আমলকি, পেয়ারা, আমড়া, জামবুরা, বাংগি, তরমুজ ও কলা।
- ছোলা, মটর ও অংকুরিত মুগের ঘুগনি।
- ভুট্টা সেদ্ধ।
- রুটি-সবজি ভাজি বা ভাত ভাজা।
- সবজির পাকুড়া, ঝাল বা মিষ্টি পিঠা, মমো (ভাঁপে তৈরী সবজি বা মাংসের পুর দেওয়া পিঠা)।
- মাশরুমের পাকুড়া।
- চিড়ার পোলাও।
স্কুল থেকে ফেরার পরে নাস্তা:
- পুদিনাসেদ্ধ পানি বা পুদিনাপাতার চা, ফল, স্পিরিলুনা।
- কাঁচা পাতার রস বা সবজির-যেমন গাজরের-রস।
- টক ফল যেমন- আমড়া, জামবুরা, আনারস, কাঁচা আম, কামরাঙ্গা, জলপাই, জাম ও চালতা।
- তেঁতুল ও আখের গুড়ের শরবত। কাঁচা আমের শরবত।
- লেবু পানি।
- টক দই ও মধু দিয়ে লাচ্ছি।
- এ্যালো ভেরা বা ঘৃতকুমারীর সরবত।
দুপুরের খাবার
- রান্নায় তেল যতোদূর সম্ভব কম ব্যবহার করা উচিত। পরিমিত পরিমাণে জলপাইয়ের তেল হলে ভালো হয়।
- বেশি পরিমাণে কোনো না কোনো শাক।
- দু’তিন রকমের সবজির নিরামিষ বা ভর্তা। থানকুনি পাতার ভর্তা পেটের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
- শসা, টমেটো, কাঁচা পেপে, পেঁয়াজ, মরিচ, ধনেপাতা, লেটুস ইত্যাদির সালাদ ও লেবু।
- মাছ বা মাংসের তরকারি, কিন্তু কোনোটাই দুই টুকরোর বেশি নয়।
- ডাল। বিভিন্ন রকমের ডাল মিশিয়ে কিংবা একেকটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাওয়া ভালো। ডালের সঙ্গে টক ফল ও সবজির টুকরোও মেশানো যায়।
- টক দই, সাথে চারগুণ পানি মিশিয়ে। সেই সাথে গুড় দেওয়া যেতে পারে।
বিকেলের নাস্তা:
- মেমো, ঘুগনি, চিড়া, মুড়ি, পিঠা, গুড়ের পায়েস ও আলুর দম।
- চালের গুঁড়োর তৈরি চাপটি।
- মুগের অঙ্কুর পেঁয়াজ মরিচ দিয়ে মাখা।
- দই-চিড়া।
- শুকনো ফল, যেমন- খেজুর, বাদাম, কিসমিস, শিম বিচি ও মিষ্টি কুমড়ার বিচি।
- যবের ছাতু বা ওটস গরম পানিতে ভিজিয়ে সবজির সাথে বা গরম দুধে ভিজিয়ে পরিজ বানিয়ে খাওয় যায়।
- মাশরুমের সুপ।
রাতের খাবার:
- নানা ধরনের সবজির নিরামিষ, তেল ছাড়া কিংবা জলপাইয়ের তেল দিয়ে। কোনো শাক নয়।
- নরম ভাত, জাউ, আটার রুটি কিংবা যব।
- মাছ-মাংস খুব অল্প পরিমাণে।
- রাতে যে কোনো গুরুপাক খাবার না খাওয়াই ভালো। কিছু সবজি যেমন ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়ো ইত্যাদি সবজি দুপুরে খাওয়াই ভালো।
- দুধ, ছানা, পনির ও গুড় মেশানো টক দইয়ের সরবত।
- শোয়ার আগে খিদে পেলে গম কিংবা যবের তৈরি ডাইজেস্টিভ জাতীয় বিস্কুট ময়দায় তৈরি নয়।
- সবজির সঙ্গে মাশরুম দিয়ে সুপ অথবা নিরামিষ তৈরি করা যায়।
লেখক : স্বেচ্ছাসেবী সমাজ কল্যাণ সংস্থা হীল’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বাংলাদেশ বিমান এর প্রাক্তন পার্সার।
একে/টিকে