নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় থেকে বাঁচার উপায়
প্রকাশিত : ১৪:০৭, ২২ মার্চ ২০১৮
হাসি পাচ্ছে, কিন্তু হাসতে গেলেই বিপদ। আশপাশে থাকা বন্ধুরা সরে দাঁড়াবে! অনেকের নিঃশ্বাসেই দুর্গন্ধ আছে। সঙ্গে আছে দাঁত, জিভ আর মাড়ির সমস্যা।
মুখ, মাড়ি, দাঁত ও জিভ পরিচ্ছন্ন রাখুন
মুখগহ্বরের সমস্যার মূল কারণ দু’টি। এক. ঠিক ভাবে মুখ ও দাঁত পরিষ্কার না করা। আর দুই. তামাক চিবোন সমেত মদ্যপান ধূমপানের নেশা। এ ছাড়া বারে বারে ধারাল দাঁতের আঘাত লেগে মুখগহ্বরের নানা সমস্যা হতে পারে। এর হাত থেকে বাঁচবার একটাই পথ, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা। সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করার অভ্যাস থাকলেও রাতে ঘুমনোর আগে সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করা অনেকেরই অপছন্দ। আমাদের মুখে অনেক জীবাণু থাকে, রাতে ব্রাশ করে ভাল করে মুখ পরিষ্কার রাখলে এই জীবাণুদের সংক্রমণের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। কোনও সমস্যা হোক বা না হোক, বছরে অন্তত দু’বার ডেন্টাল সার্জেনের কাছে গিয়ে মুখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া আবশ্যক। আর কোনও রকম ব্যথাবেদনা বা মুখে ঘা হলে নিজেরা ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ কিনে না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সাংবাদিক, নেতা ও অভিনেতাদের সমস্যা
পান, সুপুরি বা তামাকের নেশা না থাকলেও অনেক সময় ওরাল ক্যাভিটির গুরুতর সমস্যা হতে পারে। সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা, অভিনেতা অথবা জীবিকার প্রয়োজনে যাঁদের বেশি কথা বলতে হয় তাঁদের মুখগহ্বরের সমস্যার ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে কিছুটা বেশি। কথা বলতে বলতে অনেক সময় গালের একই অংশে কামড় পড়ে যায়। তাছাড়া ব্যথার জায়গায় বার বার কামড় লেগে লেগে প্রথমে মুসুর ডালের মত ছোট্ট একটা গ্রোথ হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় এই কিছু দিন পর পর এই গ্রোথ মিলিয়েও যায়। কিন্তু আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। নাগাড়ে তাড়াহুড়ো করে কথা বলা ও দ্রুত খাবার খাওয়া ও খেতে খেতে কথা বলা— এ সবই গালে বা জিভে কামড় পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বার বার একই জায়গায় আঘাত লেগে ও কোনও গ্রোথ বছরাব্যাপী থেকে গেলে তার থেকে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে। তাই এই রকম সমস্যা হলে প্রথমত ওরাল হাইজিন ঠিক রাখতে হবে ও অবশ্যই নিয়মিত ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে। কামড় পড়ে যে গ্রোথ হয়েছে ও বেশ কয়েক মাস ধরে আছে ও আকারে বাড়ছে, তা সার্জারি করে বাদ দিয়ে দ্রুত বায়োপ্সি করানো উচিত। একই সঙ্গে কথা বলা ও খাবার খাওয়ার ব্যাপারে সাবধান হওয়া দরকার। প্রয়োজনে দাঁতের ধার কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে এই ধরনের পেশার মানুষদের মধ্যে অনেকেই ধূমপান ও মদ্যপান করেন। অনেকে আবার একাধিক বার চা-কফি পান করেন। তাই সমস্যার প্রবণতাও বেশি।
হুকা বারও বিপদজনক
তামাকের নেশা যে শরীরের নানা সর্বনাশ ডেকে আনে সে কথা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সিগারেট, বিড়ি ছাড়াও গুটখা, জর্দা পান, দোক্তা, নানান রকমের তামাকের আদ্যোপান্ত খারাপ দিক সম্পর্কে সবাই অবগত। কিন্তু নেশার মোহময় জাল কেটে বেরোনও সহজ নয়। ইদানীং ওয়াই জেনারেশনের মধ্যে হুকা বার অত্যন্ত জনপ্রিয়। অনেক হুকাপ্রেমী আবার এ কথাও রটিয়ে দিয়েছেন, হুকার সুগন্ধি অম্বুরি তামাকে শরীরের কোনও ক্ষতিই নাকি হয় না। কেননা পানির মধ্যে দিয়ে আসে বলে তামাকের ক্ষতিকর দিক জলে বিলীন হয়ে যায়। এ কথা সম্পূর্ণ ভুল। একছিলিম হুকোর টান প্রায় এক প্যাকেট সিগারেটের সমান ক্ষতিকর। মুখের ক্যানসার প্রতিরোধে তামাকের সঙ্গে বিচ্ছেদ একমাত্র পথ।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে// এআর