ঢাকা, বুধবার   ১৩ নভেম্বর ২০২৪

যে ৯ খাবারে শরীরে রক্তের ঘাটতি দূর হয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০১, ২৯ এপ্রিল ২০১৮

শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা যখন কমতে শুরু করে তখন সেই রোগকে অ্যানিমিয়া বলা হয়। প্রসঙ্গত, লোহিত রক্ত কণিকার মধ্যে থাকে হিমোগ্লোবিন নামে এক ধরনের প্রোটিন, যা শরীরে প্রতিটি কোণায় অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে থাকে। এবার বুঝতে পেরেছেন তো শরীরে লহিত রক্ত কণিকার ঘাটতি দেখা দিলে কতটা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

এক্ষেত্রে এই খাবারগুলি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে অল্প সময়ের মধ্যেই শরীরে রক্তের ঘাটতি দূর করা সম্ভব।

দই এবং হলুদ

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের উপর লেখা একাধিক বইয়ে এমনটা দাবি করা হয়েছে, এক কাপ দইয়ে ১ চামচ হলুদ মিশিয়ে যদি সকাল-বিকেল খাওয়া যায়, তাহলে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না। তাই শরীরকে বাঁচাতে দয়া করে প্রতিদিন এই ঘরোয়া টোটকাটিকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন!

খেজুর

শরীরে আয়রণের ঘাটতি দূর করার পাশপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে প্রতিদিন খেজুর খাওয়া শুরু করুন। এক্ষেত্রে এক কাপ দুধে মাত্র ২ টি খেজুর ফেলে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে সেই খেজুর মেশানো দুধ খালি পেটে খেয়ে নিন। কয়েকদিন এমনটা করলেই দেখবেন অ্যানিমিয়া দূরে পালাবে।

লেবু

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরে ভিটামিনের মাত্রা বাড়তে থাকলে একদিকে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, তেমনি দেহের ভেতরে আয়রনের শোষণ বেড়ে যায়। ফলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। এই কারণেই তো প্রতিদিন লেবু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

বিটরুট

এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ, যা শরীর এই খনিজের ঘাটতি দূর করে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, শরীরে জমে যাকা টক্সিক উপাদান বরে করে দিয়ে আরও সব রোগের হাত থেকে বাঁচাতেও এটি বিশেষ কাজে লাগে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো বিটরুটের সঙ্গে তিনটে গাজর এবং অর্ধেক রাঙা আলু ব্লেন্ড করে সেই রস প্রতিদিন খেতে হবে। আর যদি এই রস খেতে ইচ্ছা না করে তাহলে রান্না করেও বিটরুট খেতে পারেন। তাতেও সমান উপকার পাবেন।

কলা

শরীরে শুধুমাত্র পাটাশিয়ামের ঘাটতি দূর করতেই নয়, আরও নানা উপকারে লাগে এই ফলটি। আসলে কলায় উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরী উপাদান শরীরে হিমোগ্লবিনের ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি লহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দিনে দুবার করে একটা কলা, ১ চামচ মধুর সঙ্গে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।

তিল বীজ

আয়রণ সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে এটি দারুন কাজে দেয়। এক্ষেত্রে একটা কাপের এক চতুর্থাংশ পরিমাণ তিল বীজ, দৈনিক আয়রনের চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশের যোগান দেয়। তাই তো রক্তাল্পতা দূর করতে এই ঘরোয়া পদ্ধতিটিকে এতটা গুরুত্ব দেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, পরিমাণ মতো জলে দু চামচ তিল বীজ, কম করে ২-৩ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখুন। সময় হয়ে গেলে পানিটা ফেলে দিয়ে বীজগুলি সংগ্রহ কর সেগুলি বেটে নিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার সেই পেস্টে ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিন। দিনে দুবার করে এই মিশ্রনটি খেতে হবে। তবেই রোগ সারবে।

পালং শাক

অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে পালং শাকের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত আয়রণ এবং ভিটামিন বি১২ শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার ঘাটতি দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে পুষ্টির অভাব যাতে দেখা না দেয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন আমাদের শরীরে যে পরিমাণ আয়রণের প্রয়োজন পরে, তার প্রায় ৩৫ শতাংশ পূরণ করতে পারে হাফ কাপ পালং শাক। প্রসঙ্গত, রক্তাল্পতা দূর করতে প্রতিদিন যদি দিনে দুবার করে পালং শাকেরে রস খেতে পারেন তাহলে দারুন উপকার পাওয়া যায়।

ডালিম

এই ফলটিকে রক্তবীজ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। কেনও এমন নামে ডাকা হয় জানেন? কারণ শরীরে লহিত রক্ত কণিকার ঘাটতি দূর করতে এই ফলটি দারুন কাজে আসে। আসলে ডালিমে উপস্থিত প্রচুর মাত্রায় আয়রণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন সি রক্তের ঘাটতি দূর করার পাশপাশি সার্বিকভাবে শরীরের গঠনেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে এক কাপ ডালিমের রসের সঙ্গে একটা চামচের এক চতুর্থাংশ দারচিনি পাউডার এবং ২ চামচ মধু মিশিয়ে ব্রেকফাস্টের সময় খেলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। আর যদি এই মিশ্রনটি খেতে না চান, তাহলে শুধু ডালিম ফলও খেতে পারেন। তাতেও একই ফল মেলে।

আপেল

আপনি কি রক্তাল্পতায় ভুগছেন? তাহলে প্রতিদিন কম করে একটা আপেল খাওয়া শুরু করুন। তাহলেই দেখবেন অল্প দিনেই আপনার রোগ সেরে যাবে। আসলে এই ফলটিতে প্রচুর মাত্রায় আয়রণ রয়েছে, যা শরীরে এই খনিজের ঘাটতি দূর করে লহিত রক্ত কমিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে// এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি