ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

হোটেলে বিছানার চাদর-বালিশ সাদা হওয়ার কারণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:২২, ১৮ জুন ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

হোটেলে থাকেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। কিন্তু লক্ষ্য করেছেন কি, হোটেলের বিছানার চাদর এবং বালিশের ওয়ার— সব সময়ই সাদা। কিন্তু কখনও মনে প্রশ্ন জেগেছে কি, এরকম কেনও করা হয়? হয়ত আপনি ভাবছেন এ আবার কী কথা! কিন্তু না, এর পিছনে রয়েছে যুক্তিগ্রাহ্য কারণ।

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ হোটেল ম্যানেজমেন্ট (আইআইএইচএম) কলকাতা’র ‘হাউস কিপিং’- এর অধ্যাপক তরুণ সরকার জানান, নয়ের দশকের শুরুতে ওয়েস্টিন হোটেল গ্রুপ তাদের হোটেলের ঘরগুলোতে সাদা বালিশ-চাদর-তোয়ালের ব্যাপক ব্যবহার শুরু করে। তিনি আরও জানান, ১৯৭০-’৮০ সালেও ইউরোপ এবং আমেরিকার বেশ কয়েকটি নামি হোটেলে সাদা চাদর-বালিশ ব্যবহারের চল ছিল। তবে ১৯৯০-এর গোড়ায় ওয়েস্টিন এবং শেরাটন হোটেলের ডিজাইন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিন হুভারই ওয়েস্টিন হোটেল গ্রুপের ঘরগুলোতে সাদা চাদর-বালিশ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি যুক্তিও দিয়েছিলেন হুভার।

ওয়েস্টিন এবং শেরাটন হোটেলের ডিজাইন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট এরিন হুভার।

এরিন হুভার-এর যুক্তি ছিল, সাদা চাদর-বালিশ হোটেলের অতিথিদের মনে পরিচ্ছন্নতার অনুভূতি তৈরি করে। এনে দেয় মানসিক তৃপ্তি। এরিন হুভারের যুক্তি মেনে এই পদ্ধতির ব্যবহারের ফলে ওয়েস্টিনের হোটেলগুলোর ব্যবসা অনেকটাই বেড়েও যায়। অতিথিদের পছন্দের হোটেলের তালিকার জায়গা করে নেয় ওয়েস্টিনের হোটেলগুলো। পরবর্তীকালে প্রায় সবাই এই পন্থা অনুসরণ করতে শুরু করেন।

এ কথা আমরা প্রায় সবাই জানি যে, সাদা রং অনেক বেশি আলোর প্রতিফলন ঘটায়। তাই সাদা চাদর-বালিশ, পর্দা ব্যবহারের ফলে হোটলের ঘরগুলো আরও উজ্জ্বল বলে মনে হয়। তাছাড়া সাদা চাদর-বালিশ, পর্দা ময়লা হলে সবকটি এক সঙ্গেই ধুয়ে নেওয়া যায়। অন্যান্য যে কোনও রঙের ক্ষেত্রে এক রঙের কাপড়ের থেকে আরেকটায় রং লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। তাই সাদা রঙের চাদর ব্যবহারে আখেরে হোটেলেরই সাশ্রয়। এছাড়া সাদা রঙ যে দেখতেও ভাল লাগে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ফলে এরিন হুভারের যুক্তি গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠে সবার কাছে।

হোটলের ঘরগুলোর দেওয়ালের রং ঘন ঘন পাল্টানো সম্ভব নয়। আর ঘরের দেওয়ালের রঙের সঙ্গে বিছানার চাদর-বালিশ বা পর্দার রং না মিললে দেখতেও ভাল লাগে না। তাছাড়া ঘন ঘন মানানসই রঙের চাদর-বালিশ আর পর্দা পাওয়া মুসকিল। বানাতে দেওয়াও বেশ খরচসাপেক্ষ। তাই সাদা রঙের চাদর-বালিশ বা পর্দার ব্যবহারে এই সমস্যাগুলোর সমাধান হতে পারে অনায়াসে।

হাউস কিপিং-এর অধ্যাপক তরুণ সরকার আরও জানান, নামি হোটেল গ্রুপগুলো সর্বত্র তাদের ঘরগুলোর গুণমান (স্যান্ডার্ড) অপরিবর্তিত রাখার জন্য সাদা চাদর-বালিশ বা পর্দা ব্যবহার করে থাকে। কারণ সাদা রঙের চাদর-বালিশ বা পর্দা অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং সহজলভ্যও।

‘ব্যতিক্রমী কিছু সৃষ্টি করতে চাইলে, খুঁটিনাটি বিষয়েও নিখুঁত পর্যবেক্ষণ জরুরি’— এই মতাদর্শকেই সামনে রেখে এরিন হুভারের এই পদক্ষেপ হোটেল ব্যবসায় আমূল পরিবর্তন এনে দেয়। সামান্য চাদর-বালিশের রং হোটেল ব্যবসার ক্ষেত্রে বা হোটেলের অতিথিদের ভাবনা চিন্তায় কতটা প্রভাবিত করতে পারে তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন হুভার। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শতাধিক নামি হোটেলে এমনই আরও নানা খুঁটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে ব্যবহার করা হয় সাদা রঙের চাদর-বালিশ। তবে এরিন হুভারের যুক্তি বা ব্যাখ্যাগুলোই সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য।

সূত্র: জিনিউজ

একে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি