ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

সন্তানকে যে ৬ কথা শোনাবেন না!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:২৭, ২৪ জুন ২০১৮

সন্তানকে শাসন করার দায়িত্ব পরিবারের। তাই বলে শাসন করতে গিয়ে যা ইচ্ছা তাই বলে দিলে এর বিপরীত ঘটতে পারে। তাই শাসন করার সময় ঠিকঠাক বাক্য ব্যবহার করাই শ্রেয়। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক যে ৬ কথা নিজের সন্তানকে শোনানো উচিৎ নয়-

১) সব সময়  বড়দের কথা শোনে চলবে

এ কথা শুনে সন্তানরা যা ভাবে : সব বড়রাই নিশ্চয়ই ভালো এবং সৎ। তারা যা বলবে আমাকে তাই করতে হবে। ফলে দেখা যাবে, বাচ্চারা অপরিচিত কাউকে সৎ ভেবে তার কথা শুনতে গিয়ে বিপদে পড়ছে।

তাই যা বলা উচিৎ : এই উক্তিটি না বলে বরং বলা উচিৎ- মা ও বাবার কথা শুনতে হয়। এই বাক্যটি আপনার বাচ্চা চিন্তা করতে বাধ্য করবে এবং অপরিচিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলা উচিৎ সেটা শেখার আগ্রহ থাকবে।

২) এখনি কান্না বন্ধ করো

কথাটি শুনে সন্তানরা যা ভাবে : বাচ্চারা যখন কাঁদে তখন ধমক সুরে বলা হয় যে, এখনি কান্না বন্ধ করো। ফলে সে এক ধরনের নীরবতার মাঝে বড় হয়ে উঠবে। তখন আবেগ বস্তুটাই হারিয়ে ফেলবে অথবা এক সময় এই আবেগগুলোই রাগের মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।

যা বলা উচিৎ : যদি বাচ্চারা পড়ে গিয়ে ব্যথা পায়, তাহলে বলা উচিৎ ‘তুমি কি ব্যাথা বা ভয় পেয়ে কাঁদছ?’ এ ধরনের কথা আপনার সন্তানকে আবেগ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা দেবে।

৩) এই দুষ্টুমি কার কাছে শিখেছ?

কথাটি শুনে সন্তানরা যা ভাবে : ‘আমার মা-বাবা তো জানে না আমি এই দুষ্টুমি কেন করেছি।’ এই কথাটি বলার কারণে আপনার বাচ্চা শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য নিজের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপানো শিখবে।

যা বলা উচিৎ : ‘কেন তুমি এটা করেছ?’ এই বাক্যটি আপনার বাচ্চাকে বলতে সাহায্য করবে যে দুষ্টুমিটা সে নিজে থেকে করেছে নাকি কারো উৎসাহে করেছে। তাকে তার দোষ স্বীকারের যথেষ্ট সুযোগ দিতে হবে।

৪) দেখো তোমার চেয়ে ওই কত মেধাবী

কথাটি শুনে সন্তানরা যা ভাবে : ‘আমি অন্যদের চেয়ে খারাপ। আমি যাই করি না কেন, এটা অন্যদের মতো ভালো হবে না।’ অন্য শিশুর সঙ্গে নেতিবাচকভাবে তুলনা করলে এর প্রভাব বাচ্চার আত্মসম্মানবোধের ওপর পড়ে। এর ফলে বাচ্চা ভাবতে থাকে, তাকে দিয়ে বড় কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়।

যা বলা উচিৎ : ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমিও এই বাচ্চাটির মতো হতে পারবে।’ কথাগুলো বলার পাশাপাশি আপনার সন্তানের সামর্থ্যগুলো খুঁজে বের করুন এবং তাকে বুঝিয়ে দিন যে তার ওপর আপনার বিশ্বাস আছে। মনে রাখবেন, আপনার শিশুটি তার নিজের প্রতিভায় অন্যদের থেকে আলাদা।

৫) দাঁড়াও! যা বলার বাসায় গিয়ে বলব

কথাটি শুনে সন্তানরা যা ভাবে : ‘বাসায় গিয়ে মা-বাবা আমার গায়ে হাত তুলতে পারে। আমি আর বাসায় যেতে চাই না।’ এই কথাটি বলার সঙ্গে সঙ্গে মা-বাবার প্রতি ভালোবাসাটা হুমকিতে রূপ নেয় এবং বাচ্চারা বাসাটাকে শাস্তির জায়গা হিসেবে মনে করতে থাকে।

যা বলা উচিৎ : ‘শোন তোমাকে বলি, কেন আমি তোমার ওপর মর্মাহত হয়েছি।’ এই কথাটি শোনার পর বাচ্চারা আপনার আবেগকে মূল্য দেবে এবং ভবিষ্যতে কোনো দুষ্টুমি করার আগে বিবেচনা করবে।

৬) তোমাকে সব উত্তর শুনতে হবে না

কথাটি শুনে সন্তানরা যা ভাবে : যদি আপনার সন্তান আপনাকে অস্বস্তিকর কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে এবং যথাযথ জবাব না পায়, তাহলে অন্য কোনো উৎস থেকে সে তার প্রশ্নের উত্তর খুঁজবে এবং তার খুঁজে পাওয়া ব্যক্তিটি প্রশ্নটির উপযুক্ত উত্তর না দিয়ে ভুল তথ্যও দিতে পারে।

যা বলা উচিৎ : ‘আমি এখন তোমার প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না। আমার কিছুটা সময় লাগবে।’ আপনার সন্তানকে নিরাশ করবেন না। যদি সে আপনাকে কোনো প্রশ্ন করে, তার জবাব দেওয়ার চেষ্টা করুন। এই পদ্ধতিতে তার ওপর আপনার কর্তৃত্ব বজায় থাকবে এবং সেও আপনার ওপর বিশ্বাস হারাবে না।

কেএনইউ/ এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি