ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

দাড়ি না কাটার ৯ উপকার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৪৭, ২৮ জুন ২০১৮

ছবি: প্রতীকী

ছবি: প্রতীকী

বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, অল্প অল্প দারি রাখার অভ্যাস করলে বাস্তবিকই একাধিক উপকার পাওয়া যায়। বিশেষত আলট্রাভায়োলেট রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব যাতে ত্বকের উপর সরাসরি না পরে,সেদিকে খেয়াল রাখে দাড়ি। ফলে কোনও ধরনের ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। প্রসঙ্গত, দাড়ি-গোঁফ রাখার স্টাইল কিন্তু আজকের নয়। ইতিহাস ঘাঁটে জানা যায়, ১৮০০ শতকের পর থেকেই দাড়ি রাখা হয়ে ওঠে একটা নতুন ফ্যাশন। তার পর থেকে সময় যত এগিয়েছে, তত এই ফ্যাশনের পালে হাওয়ার তেজ বেড়েছে। আর আজকের দিনে তো এই স্টাইল একবারে দাবানলের চেহারা নিয়েছে। যার আঁচ থেকে এক সময়ে বাদ যাননি আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিরাও। আব্রাহাম লিঙ্কন হোন কি এস গ্রান্ট, অনেক মার্কিন প্রেসিডেন্টই দাড়ি রাখতে বেজায় ভালবাসতেন। তবে ধীরে ধীরে এই ট্রেন্ডে ভাটা পরতে শুরু করে দ্বিতীয় বিশ্বের সময়। আসলে সে সময় যুদ্ধের পরিবেশে ক্লিন শেভ রাখার চল শুরু হয়। তাই তো ১৯৪০ সাল পর্যন্ত সমকালীন পুরুষদের মধ্যে দাড়ি রাখার প্রবণতা সেভাবে চোখে পরেনি। তবে ক্লিন শেভ লুক বেশিদিন চলেনি। বার বার ফিরে এসেছে সেই দাড়ি রাখার চলই। আর এখন তো কোনও কথাই নেই। ইয়ংস্টারদের মতে দাড়ি মানে মাচো ম্যান, দাড়ি মানে বেশ কতক ফিমেল ফ্যান! দাড়ি রাখলে যে কেবল মাচো লাগে, তা নয়, সেই সঙ্গে একদল বিজ্ঞানী, একাধিক গবেষণার পর একথা প্রমাণ করে ছেড়েছেন যে দীর্ঘদিন দাড়ি রাখলে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়। যেমন ধরুন...

গুরুত্বপূর্ণ সময় বেঁচে যায়

সত্তরের দশকে করা এক স্টাডিতে দেখা গেছে, প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষেরা তাদের সারা জীবনে গড়ে ৩ হাজার ৩৫০ ঘণ্টা সময় দাড়ি কাটার পিছনে ব্যয় করেন। যার অর্থ সারা জীবনে আমরা প্রায় ১৩৯ দিন এভাবেই নষ্ট করে ফেলি। কিন্তু যদি দাড়ি রাখা শুরু করা যায়, তাহলে এই দিনগুলোতে আমরা করতে পারি কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাই ভেবে দেখুন, দাড়ি রাখবেন না ১৩৯ দিন নষ্ট করবেন!

গলার কোনও ধরনের রোগ হয় না

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, দাড়ি লাগলে পরিবেশে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ারা মুখ হয়ে শরীরের ভেতরে পৌঁছাতে পারে না। ফলে গলার কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি আরও নানাবিধ রোগও ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

ঠাণ্ডার মার থেকে রক্ষা করে

তাপমাত্রা যখন কমতে থাকে, তখন শরীরকে গরম রাখতে দাড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক কেস স্টাডি করে বিজ্ঞানীদের মনে আর কোনও সন্দেহ নেই যে, শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে বিয়ার্ড বাস্তবিকই সাহায্য করে। তাই খেয়াল করে দেখবেন ক্লিন শেভ থাকেন যারা তাদের তুলনায় দাড়িওয়ালারা কম রোগে ভুগে থাকেন।

স্কিন ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না

সম্প্রতি প্রকাশিত বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দাড়ি থাকলে আলট্রাভায়োলেট রশ্মি ত্বকের সেভাবে ক্ষতি করতে পারে না, যতটা ক্লিন শেভ থাকলে করে থাকে। আর একথার নিশ্চয় সবাই জানেন যে ‘ইউ ভি’ রশ্মির সংস্পর্শ থেকে ত্বক যত দূরে থাকবে, তত ত্বকের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।

ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে

স্কিন স্পেশালিস্টরা লক্ষ করে দেখেছেন, দাড়ি থাকলে ত্বকের আদ্রতা সহজে হারায় না। কারণ এক্ষেত্রে দাড়ি অনেকটা রক্ষাকবচের কাজ করে থাকে। ফলে সহজে স্কিন ড্রাই হয়ে যায় না। তাই তো যারা সারা বছরই কম-বেশি ড্রাই স্কিনের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তারা দাড়ি রাখার কথা ভাবতেই পারেন।

অ্যালার্জির প্রকোপ কমে

আপনি কি প্রায়শই ডাস্ট অ্যালার্জিতে ভুগে থাকেন? তাহলে দাড়ি রাখার কথা ভাবতেই পারেন। কারণ পরিবেশ উপস্থিত ডাস্ট পার্টিকালসগুলো যাতে নাকের মাধ্যমে শরীরের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে দাড়ি। আসলে দাড়ি হল একটা প্রতিরোধ ব্য়বস্থা, যাকে ভেদ করে ধুলো-বালির পক্ষে শরীরে প্রবেশ করা সম্ভব হয় না। এখানেই শেষ নয়, বিজ্ঞানীরা লক্ষ করে দেখেছেন অ্যাস্থেমার মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও গোঁফ এবং দাড়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

সংক্রমণের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে

আমরা দাড়ি কাটি কীভাবে? কীভাবে আবার রেজার দিয়ে। একেবারেই! আর দাড়ি কাটতে গিয়ে কেটে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা, তাই না? সমস্যাটা হল এই ক্ষত থেকে মারাত্মক সংক্রমণ এবং তা থেকে মৃত্যু পর্যন্তও ঘটে থাকে। ভাববেন না একটুও বাড়িয়ে বলছি। গুগলে সার্চ করেও দেখতে পাবেন। এমন অনেক মানুষের নাম পাবেন যারা এমনভাবেই সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাই দাড়ি রাখবেন কি রাখবেন না, এই সিদ্ধান্ত আপনাদের! তবে দাড়ি রাখলে যে উপকার হয়, সে বিষয়ে নিশ্চয় আর কোনও সন্দেহ নেই।

বয়স কম লাগে

অনেকেই মনে করেন দাড়ি রাখলে বুড়োটে লাগে। এই ধরণা কিন্তু একেবারে ভুল। বরং একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে! আলট্রাভায়োলেট রশ্মির আঘাত কম লাগার কারণে যাদের দাড়ি রয়েছে, তাদের ত্বকের ক্ষয় কম হয়। ফলে কম বয়সীদের মতো দেখতে লাগে। তাই বেশি দিন পর্যন্ত যদি ত্বকের বয়স ধরে রাখতে চান, তাহলে দাড়ি রাখাটা মাস্ট কিন্তু!

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি