বেদানার রসের ১০ উপকার
প্রকাশিত : ১৪:১৪, ১৮ আগস্ট ২০১৮
বেদানার রসের উপকারের শেষ নেই। মারণ ব্যাধি থেকে শুরু করে ছোট-বড় বহু রোগের টোটকা এটি। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-টিউমার প্রপাটিজের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে একাধিক মারণ তো রোগ তো দূরে থাকেই, সেই সঙ্গে দেহের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনো রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
প্রসঙ্গত, আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশন পত্রিকাটির বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন একটা করে বেদানা বা এক গ্লাস বেদানার রস খাওয়া শুরু করলে বেশ কিছু সুফল মেলে। যা নিন্মরূপ-
১. চুল পড়া কমে: অতিরিক্ত হেয়ার ফলের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে প্রতিদিন বেদানার রস খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন হেয়ার ফলের মাত্রা তো কমবেই, সেই সঙ্গে চুলের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পাবে চোখে পরার মতো।
২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে প্রতিদিনের ডায়েটে বেদানাকে জায়গা করে দিলে ত্বকের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে বলি রেখা অদৃশ্য হতে থাকে। সেই সঙ্গে ডার্ক স্পট এবং ডার্ক সার্কেলেও গায়েব হয়ে যায়। ফলে সৌন্দর্য বাড়ে চোখে পরার মতো।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে: শুনতে আজব লাগলেও একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে নিয়মিত কাঁচা বেদানা অথবা বেদানার রস খাওয়া শুরু করলে ব্লাড ভেসেলে সৃষ্টি হওয়া প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ এতটা বেড়ে যায় যে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি দীর্ঘকাল সুস্থ থাকতে চান, তাহলে এই ফলটিকে সঙ্গী বানাতে ভুলবেন না যেন!
৪. অ্যানিমিয়ার চিকিৎসায় কাজে আসে: ভারতে প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ। এমন পরিস্থিতিতে বেদানা খাওয়ারও প্রয়োজন বেড়েছে অনেক মাত্রায়। কারণ এই ফলটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে রক্তাল্পতার মতো সমস্যা দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো ছোট থেকেই মেয়েদের নিয়মিত বেদানা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৫. দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল প্রপাটিজে পরিপূর্ণ এই ফলটি খাওয়া মাত্র মুখ গহ্বরের অন্দরে উপস্থিত ক্ষতিকর জীবাণুরা সব মারা পরে। ফলে ক্যাভিটির মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
৬. পেটের রোগ দূর করে: বেদানার অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে তাকে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, বেদানার পাতা দিয়ে বানানো চা খেলেও এক্ষেত্রে দারুন উপকারি পাওয়া যায়।
৭. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে: বেদানা খেয়ে দেখুন আপনার জীবনকালে কখনও ডায়াবেটিস বাসা বাঁধতে পারবে না। কারণ এই ফলটি খাওয়া মাত্র শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
৮. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: বেদানার রস শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়ায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে কমে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। প্রসঙ্গত, বেদানার শরীরে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও নানাভাবে হার্টের খেয়াল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯. জয়েন্টের সচলতা বাড়ায়: শরীরে যখন ক্যালসিয়ামের মাত্রা কমতে শুরু করে তখন এমন কিছু ক্ষতিকর এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায় যে জয়েন্টের সচলতা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড় এত মাত্রায় দুর্বল হয়ে পরে যে অস্টিওআর্থ্রাইটিস মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। এক্ষেত্রেও কিন্তু বেদানা নানাভাবে কাজে আসে। কীভাবে? যে এনজাইমের কারণে হাড়ের ক্ষয় হতে থাকে, তার ক্ষরণ কমিয়ে দিয়ে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমাতে এই ফলটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০. ক্যান্সার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না: বেদানায় ফ্লেবোনয়েড নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা রক্তে উপস্থিত ক্যান্সার সৃষ্টিকারি টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে বের করে দেয়। ফলে কোনও ভাবেই দেহের অন্দের ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা থাকে না। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে প্রস্টেট এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারকে দূরে রাখতেও এই ফলটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
সূত্র : বোল্ডস্কাই।
/ এআর /