ব্যায়াম ও ভালো খাবার স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়
প্রকাশিত : ১৬:০৪, ২১ জুন ২০১৯
বর্তমান যুগে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। এই ব্যয় নির্বাহের জন্য মানুষ অতিরিক্ত পরিশ্রম করে থাকেন। মানুষ বিশ্রাম, ব্যায়াম অথবা ঘুমানোর সময় কমিয়ে অতিরিক্ত আয়ের জন্য কর্মক্ষেত্রে সময় বাড়িয়েছে। এভাবে বছরের পর বছর চলছে। কিন্তু ফ্রান্স ও আমেরিকার গবেষকরা বলছেন কাজের চাপ স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার অন্যতম কারণ।
এছাড়া গবেষকরা আরো বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
সম্প্রতি ফ্রান্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতিবছর কমপক্ষে ৫০ দিন যদি ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা হয় তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়। এক দশকেরও বেশি সময় যাবত যারা দীর্ঘ সময় কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি।
তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দীর্ঘ সময় কাজ করলেও শারীরিক ব্যায়াম এবং ভালো খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে।
১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের তথ্য সংগ্রহ করেছেন ফ্রান্সের গবেষকরা। এই তথ্যের মধ্যে রয়েছে বয়স, ধূমপানের ইতিহাস এবং কর্মঘণ্টা। এদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ রয়েছেন যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেছেন। এছাড়া ১০ শতাংশ মানুষ ১০ বছর যাবত দীর্ঘ সময় কাজ করে আসছেন। এদের মধ্যে এক হাজার দুই শত চব্বিশ জন স্ট্রোকে আক্রান্তের তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত লেখায় গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, যেসব মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ২৯ শতাংশ বেশি। যারা ১০ বছরের বেশি সময় যাবত দীর্ঘ সময় কাজ করছেন তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা ৪৫ শতাংশ বেশি।
যারা খণ্ডকালীন কাজ করেন কিংবা যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করার আগেই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের এই গবেষণা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
গবেষণা দলের প্রধান ড. অ্যালেক্সিস বলেন, যাদের বয়স ৫০ বছরের কম কিন্তু ১০ বছর যাবত দীর্ঘ সময় কাজ করেন এদের স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। এই ফলাফল অপ্রত্যাশিত। এর জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন আছে।
তিনি আরও বলেন, এই গবেষণায় স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যার উপর বেশি জোর দেয়া হয়েছে। স্ট্রোকের কারণের দিকে নজর দেয়া হয়নি।
অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেন, সিইও এবং ম্যানেজাররা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলেও তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি কম। কিন্তু যারা অনিয়মিত শিফটে কাজ করেন, রাত্রিকালীন কাজ করেন কিংবা কাজের চাপ বেশি এদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা দলের প্রধান ড. রিচার্ড ফ্রান্সিস বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, ব্যায়াম, ধূমপান ত্যাগ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম স্বাস্থ্যের উপর বড় প্রভাব রাখতে পারে। এ বিষয়গুলো মেনে চললে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আসতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিবিসি বাংলা অবলম্বনে
এএইচ/