ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ক্লান্ত লাগলেই করোনা ভেবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৩, ২৭ জুলাই ২০২০

বর্তমান পরিস্থিতি মানুষের চিন্তা বাড়িয়ে দিয়েছে। দীর্ঘদিন লকডাউন শেষে যাবতীয় কাজকর্ম শুরু হয়েছে। একদিকে অফিসের কাজের চাপ, রাস্তাঘাটে চলাফেরা জনসমাগমের মধ্য দিয়ে করতে হচ্ছে। তার সঙ্গে রয়েছে নিরন্তর অনিশ্চয়তা। এসব মিলেই ক্লান্ত করে তুলছে আমাদের অনেককে। এ রকম অবস্থায় মনে বাসা বাঁধে করোনা হয়নি তো! কেননা কোভিডেও তো ক্লান্তির শেষ থাকে না বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের মতে, ক্লান্ত লাগলেই কোভিড ভেবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কারণ ক্লান্তির পেছনে যদি করোনার হাত থাকে, তাহলে এর সঙ্গে আরও কিছু না কিছু উপসর্গ থাকবেই। হালকা জ্বর বা একটু গলাব্যথা বা শুকনো কাশি বা অন্য কিছু। এসব কিছুই নেই, শুধু দিনের পর দিন ক্লান্তি তাহলে কোভিড হওয়ার আশঙ্কা নেই। 

এক্ষেত্রে আপনাকে ভাল করে বিশ্রাম নিতে হবে। পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে এবং নিয়ম মেনে চলতে হবে। তাতে ক্লান্তি অনেকটাই কমে যাবে। আর তাতেও না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কখন কী খেলে, খাওয়ার কোন নিয়ম মেনে চললে ক্লান্তি কমবে তা এবার জেনে নিন..

• সময়মতো খাওয়াদাওয়া করুন। বহু ক্ষণ খালিপেটে থাকলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গিয়ে ক্লান্ত লাগতে পারে।

• আধা ঘণ্টা অন্তর কয়েক চুমুক পানি খান। সারাদিনে যেন আড়াই-তিন লিটার খাওয়া হয়। ঠিকঠাক পানি না খেলে পানিশূন্যতার জন্য দেখা দিতে পারে ক্লান্তি।

• কফি-কোলা জাতীয় পানীয় বেশি খেলে পানিশূন্যতার আশঙ্কা বাড়ে। সেই সঙ্গে ক্লান্ত শরীরে মুড সুইং হতে থাকে ঘন ঘন। আবার বিকেলের দিলে চা-কফি বেশি খেলে ঘুম কমে যায়। সে কারণেও ক্লান্ত লাগতে পারে। কাজেই দিনে ২-৩ কাপের বেশি চা-কফি খাবেন না। ঘুমের সমস্যা থাকলে বিকেলের পর থেকে আর নয়, বিশেষ করে কফি।

• দিনের প্রতিটি খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত প্রোটিন খান। ডিম, দুধ, দই, মাছ, মাংসের পাশাপাশি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনও খাবেন প্রচুর। যেমন ডাল, ছোলা, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, বিনস ইত্যাদি। এতে পুষ্টি ঘাটতি যেমন কমবে তেমনি ক্লান্তিও কমবে। অল্প খাবারে পেট ভরবে ও বেশিক্ষণ পেট ভরা থাকবে এমন খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে। নচেৎ অম্বল-বদহজম থেকেও ক্লান্তি বাড়তে পারে।

• ক্লান্তির বড় কারণ হল রক্তাল্পতা। তাই আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। সবরকম আমিষ খাবারেই আয়রন থাকে। থাকে সবুজ শাকসব্জিতে। ভাতে লেবু তথা ভিটামিন সি খেলে সেই আয়রন ভালভাবে শোষিত হয়। খাওয়ার পর ফ্রুট স্যালাড খেলেও একই কাজ হবে। চা-কফি-কোলা আয়রন শোষণে বাধা দেয়। কাজেই খাওয়ার এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে এসব খাবেন না।

• ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে ক্লান্তি বাড়তে পারে। এ বিপদ এড়াতে কলা, বাদাম, ছোলা, সবুজ শাকসব্জি খান ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে।

• মিষ্টি বেশি খেলে সাময়িকভাবে তরতাজা লাগে। কিন্তু আখেরে তাতে ক্ষতিই হয়। বেশি শর্করা জাতীয় খাবার খেলে তাকে প্রশমিত করতে বেশি ইনসুলিনের প্রয়োজন হয়। এর ফলে শরীরে নানান রোগ দেখা দিতে পারে। কাজেই চিনি, মিষ্টি যত কম খাওয়া যায় তত ভাল। তাতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতারও উন্নতি হবে।

• ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল খান পর্যাপ্ত। যে কোনও ফলেই তা আছে। বেশি আছে আমলকি, সবেদা, পেয়ারা, লেবু ও যে কোন টকজাতীয় ফলে।

নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করুন
অনিয়মিত, অগোছালো জীবনে ক্লান্তি বেশি আসে। কাজেই নিয়ম মেনে চলার অভ্যাস তৈরি করুন। সকালে নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে উঠুন। হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়ামে হরমোন ক্ষরিত হয়। ফলে ক্লান্তি দূর হয় তাড়াতাড়ি। স্ট্রেস কমিয়ে মন ভাল রাখতেও ব্যায়াম অদ্বিতীয়। তার পাশাপাশি চেষ্টা করুন ভাল করে ঘুমাতে। ঘুমের ক্ষতি হয় যা যা করলে, সেসব থেকে দূরে থাকুন।
সূত্র : আনন্দবাজার
এএইচ/ এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি