ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ডিম খাওয়ার সঙ্গে কোলেস্টেরল বৃদ্ধির কী সম্পর্ক? 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৯, ৬ ডিসেম্বর ২০২২

রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিমের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা চলবে না। কেন? 

ডিম কার না পছন্দের জিনিস। খাবার পাতে একটা ডিমসিদ্ধ কিংবা ডিমভাজা হলেই মনটাই ফুরফরে হয়ে যায়। ডিম খান না এমন মানুষ আছে না কি? নেহাতই হাতে গোনা ক’জন। তাও শরীরের সমস্যা আছে বলেই কন্ট্রোল করেন অনেকে। বিশেষত, রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে কিংবা বেশি হয়ে যাবে এটা ভেবে অনেকেই ডিম এড়িয়ে যান। সত্যিই কি কোলেস্টেরল বৃদ্ধির সঙ্গে ডিম খাওয়ার সরাসরি সম্পর্ক আছে?

খাদ্যাভ্যাস ও কোলেস্টেরল

রক্তে গুড কোলেস্টেরল (এইচডিএল) ও ব্যাড কোলেস্টেরল (এলডিএল ) দু’প্রকার কোলেস্টেরলই (Cholesterol) রয়েছে। এই কোলেস্টেরল ৯০ শতাংশই শরীর মেটাবলিজমের মাধ্যমে তৈরি করে। বাকি ১০ শতাংশ কোলেস্টেরল ডায়েট থেকে আসে। একজনের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হওয়ার অনেক কারণ হতে পারে।

প্রথমত, মেটাবলিজমের সমস্যা, যেমন- ডায়াবেটিস ইত্যাদি অসুখ এই সমস্যা ডেকে আনে,
দ্বিতীয়ত, বংশগত কারণে বা পারিবারিক সূত্রে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকে, তৃতীয়ত, খাদ্যাভ্যাসও দায়ী। বিশেষত যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে তাদের জন্য খাদ্যাভ্যাস খুব একটা সমস্যা নয়। যাদের মাত্রা বেশি থাকে বা মাত্রা বেশি হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় তাদের জন্য রোজ কী খাচ্ছেন সেটা নিয়ে ভাবা জরুরি। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। সেই লিস্টে ডিম অবশ্যই রয়েছে।

ডিম কি কোলেস্টেরলের শত্রু?
যে যে খাবারে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তার মধ্যে সর্বাধিক কোলেস্টেরল রয়েছে ডিমে। একটা ডিমে মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা ১৮৬ মিলিগ্রাম। যেখানে সারাদিনে একজন সুস্থ মানুষের মোট কোলেস্টেরল গ্রহণ করার স্বাভাবিক মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম, সেখানে একটা ডিম খেলেই এতটা কোলেস্টেরল শরীরে পৌঁছে যায়। ফলে অতিরিক্ত ডিম খেয়ে কোলেস্টেরল শরীর জমতে থাকলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। যা থেকে হার্টের সমস্যা বা আরও অন্যান্য সমস্যা বৃদ্ধি পায়।

তাই যাদের রক্তে ব্যাড কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি তাদের ডিম খাওয়ার ব্যাপারে কিছু নিয়ন্ত্রণ জরুরি। যেমন, ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে খাওয়া ভাল, কারণ কুসুমেই কোলেস্টেরল থাকে আর সিদ্ধ ডিম (ডিমের সাদা অংশ) খেলেই বেশি উপকার।

যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক তারা সপ্তাহে ২-৩ দিন ডিম খেতেই পারে। তবে বেশি ডিম বা রোজ ডিম না খাওয়াই ভাল। হয়তো সুস্থ মানুষের রোজ ডিম খেলে অল্পবয়সে কোনও সমস্যা হয় না, বয়সকালে এর খারাপ প্রভাব শরীরে পড়তে পারে। কিন্তু যাদের রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বেশি কিংবা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেতে হয় তাদের ক্ষেত্রে ডিম খেলেও  কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশ খেতে হবে।

বাদের লিস্টে আরও অনেক কিছু

শুধু ডিম নয়, যাদের কোলেস্টেরল বেশি তাদের জন্য আরও কিছু খাবার রয়েছে যেগুলি ডায়েটে না থাকলেই ভাল। যেমন, স্যাচুরেটেড ফ্যাট যা রান্নার তেলে থাকে, ঘি, মাখন এগুলি যতটা সম্ভব কম খেতে হবে। এছাড়া, রেড মিট বা মাটন, পর্ক, চিংড়ি মাছ, চিজ, চিকেন খুব বেশি খেলে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। আর বেশি মিষ্টি ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেলেও কোলেস্টেরল বাড়তে পারে।

কোলেস্টেরলের খারাপ দিক

এলডিএল বা লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (ব্যাড কোলেস্টেরল) শরীরের রক্ত ধমনিতে জমে। অ্যাথেরোস্ক্লোরোসিস হয়ে ধমনিগুলি সরু হতে থাকে। ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। যা থেকে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরি। সঙ্গে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও ঠিক রাখতে হবে। আর গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা স্বাভাবিক রাখাও দরকার। গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেমন- ফিশ অয়েল, ডায়েট মেনে খাওয়া দাওয়া, জীবনশৈলী ঠিক রাখা, এক্সারসাইজ করা জরুরি শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখতে।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি