ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

পুষ্টিগুণে ভরপুর পাতাযুক্ত শাকসবজির ‘গ্রিন জুস’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:০১, ১৪ জানুয়ারি ২০২৩

সুস্থ কর্মব্যস্ত দীর্ঘজীবনের জন্যে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসবজি। কারণ পুষ্টিগুণের আধার ঘন সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজিতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ল্যুটিন এবং জিয়াক্স্যানথিনের মতো ফাইটোকেমিকেলস। যা আমাদের দেহকোষকে সুরক্ষা দেয়, ছানি পড়া থেকে চোখকে বাঁচায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। 

বিশেষ করে ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা, পালং শাক, ব্রকোলি ও বাঁধাকপি এর মধ্যে এসব উপাদান বিদ্যমান। তাই তো এই ঘন সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজিকে বলা হয় ‘নিউট্রিশনাল পাওয়ারহাউজ’!

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এগুলোতে থাকা ক্লোরোফিল রক্তকে অ্যালকালাইন বা ক্ষারীয় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এর মধ্যে থাকা ফলিক এসিড হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করে। ভিটামিন ই এবং সি ত্বককে করে উজ্জ্বল, মসৃণ ও আকর্ষণীয়। 

এখন প্রশ্ন আসতে পারে কীভাবে খাবেন?

সবুজ শাকসবজির গুণাগুণ সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ কমই আছে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সেগুলো অনেকেই রাখেন। তবে স্রেফ রান্না বা প্রক্রিয়াকরণের ভুলে এই খাবারগুলোর পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই হারিয়ে যায়। আসলে শাকসবজি সেদ্ধ করলে এগুলোতে থাকা এনজাইম, ফাইটোকেমিকেল, ভিটামিন, মিনারেলসহ পুষ্টিগুণের একটা বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলো খাওয়া উচিৎ অর্ধসেদ্ধ অবস্থায়। তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি সবুজ শাকপাতা সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। কাঁচা পাতার বিস্বাদ বা গন্ধ এড়াতে এগুলোকে জুস হিসেবেও খেতে পারেন। 

গ্রিন জুস
‘গ্রিন জুস’ পরিচিত পানীয়। এ গ্রিন জুসে রয়েছে অটুট পুষ্টিগুণের নিশ্চয়তা! পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানীয় হচ্ছে এই গ্রিন জুস। সুস্থ কর্মব্যস্ত দীর্ঘজীবনের জন্য এখন অনেকেই একে রাখছেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের, বিশেষত হার্ট ও ডায়বেটিসের রোগীদের এখন ডাক্তাররা পরামর্শ দিচ্ছেন গ্রিন জুস পানের। সুস্থ-সবল মানুষেরাও এই জুস পান করে হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে পারেন, লাভ করতে পারেন স্বাভাবিক সুস্থতা ও প্রাণবন্ততা। 

যা লাগবে গ্রিন জুস তৈরিতে
ঘরে বসে খুব সহজেই বানাতে পারেন গ্রিন জুস। এ জন্য লাগবে- ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা, পালং শাক, সজনে পাতা থেকে ৩/৪ ধরণের টাটকা পাতা। জনপ্রতি ৩-৪টি আমলকি, আদা, জিরা, হিমালয়ান সল্ট/বিট লবণ (পরিমাণমতো), পানি (পরিমাণমতো), লেবুর রস, মধু বা গুড় (ঐচ্ছিক)।

প্রস্তুতপ্রণালী
পরিমাণমতো পাতা কয়েক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে ক্ষতিকর কেমিকেল বেরিয়ে যাবে, হজমও হবে সহজে। এবার পাতাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে ব্লেন্ডারে নিন। আমলকি ধুয়ে বীজ ফেলে পাতার সাথে যোগ করুন। পরিমাণমতো পানি নিন। অল্প আদা, জিরা, হিমালয়ান সল্ট/বিট লবণ দিন। ব্লেন্ডিং শেষে ছেঁকে নিন। ব্যস, হয়ে গেল গ্রিন জুস! চাইলে স্বাদ বাড়াতে এতে যোগ করতে পারেন অল্প লেবুর রস, মধু বা গুড়। 

গ্রিন জুস পানে যে উপকার 
- এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- ভিটামিন এ, কে, সি এবং আয়রনের দারুণ উৎস এই জুস এনার্জি বুস্ট করে। ফলে বাড়ে সতেজতা ও প্রাণবন্ততা।
- শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করার মাধ্যেমে রক্তকে পরিশোধন করে।
- হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং সব ধরনের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ বলে অন্যান্য রোগব্যাধি কমাতেও সাহায্য করে।
- বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করে।
- ত্বকের লাবণ্যভাব বৃদ্ধি করে। 

কখন খাবেন?
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন এক গ্লাস গ্রিন জুস। তবে বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক পান করাই উত্তম। গ্রিন জুস ব্লেন্ড করার পর সাথে সাথে খাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। একবার বানিয়ে ফ্রিজে রেখে অনেকদিন খাওয়ার চেয়ে ভালো হয় যদি বানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খান। 

এই অসাধারণ পুষ্টিদায়ক পানীয় থেকে এত চমৎকার উপকার আপনি পাবেন, যার জন্যে প্রতিদিন একটু সময় আলাদা করে রাখালেই সম্ভব।
এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি