পরিবার থেকে শুরু করুন শুদ্ধাচার
প্রকাশিত : ০৯:২৪, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
একজন মানুষের আসল রূপ প্রকাশ পায় পরিবারে, ঘরোয়া পরিবেশে। কিন্তু সাধারণভাবে ঘরেই শুদ্ধাচারের অনুশীলন হয় সবচেয়ে কম। ঘরে যত শুদ্ধাচারী হবেন, সদাচারী থাকবেন, পরিবারে প্রশান্তি তত বাড়বে। বাইরেও আপনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে সুন্দর আচরণ করতে পারবেন। শুদ্ধাচারের এ পর্বে রয়েছে পরিবারে ও পারস্পরিক সম্পর্কে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং আচরণের দিক নির্দেশনাসহ আনুষঙ্গিক কিছু উদাহরণ।
> প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙতেই সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাতে পারেন একটি সুন্দর দিন উপহার দেয়ার জন্যে।
> পরিবারে ছোট-বড় সবার সাথে কুশল বিনিময়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
> বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সম্ভব হলে মা-বাবা, স্বামী/ স্ত্রী এবং অন্য সদস্যদের বলে বের হোন। কোথায় যাচ্ছেন, কখন ফিরবেন তাও বলুন।
> বাসায় ফিরে আগে সবার খোঁজখবর নিন।
> ঘরে ঢুকেই বা কেউ ঘরে ফেরার সাথে সাথেই কোনো অভিমান-অভিযোগ প্রকাশ করবেন না।
> যত ব্যস্ততাই থাকুক, দিনে অন্তত একবেলা পরিবারের সঙ্গে খাবার খান।
> পারিবারিক অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করুন।
> প্রত্যেকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তাকে শ্রদ্ধা করুন। অনুমতি ছাড়া কারো মোবাইল ফোন ধরবেন না। ডায়েরি, চিঠি খুলে দেখবেন না; সামনে খোলা থাকলেও পড়বেন না।
> পারিবারিক বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে চেষ্টা করুন। মত না মিললেও অধিকাংশ সদস্যের মতামতকে গুরুত্ব দিন এবং সেভাবে কাজ করুন।
> পরিবারে কোনো বিষয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। খুঁটিনাটি বিষয়ে অনড় অবস্থান নেবেন না। নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় এসি চালানো, ফুল স্পিডে ফ্যান ছাড়া, ফুল ভলিউমে গান শোনা, অন্ধকার ঘরে ঘুমানো, অতিরিক্ত ঝাল খাওয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ছাড় দিতে আন্তরিক হোন।
> পরিসর যত ছোটই হোক, পরিবার একটি সঙ্ঘ। তাই অপরের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় রাখুন।
> কাউকে হেয় করে বা খোঁচা দিয়ে কথা বলা, কূটতর্ক ও নেতিবাচক মন্তব্য করা পুরোপুরি বর্জন করুন।
> গালিগালাজ, অশ্লীল ও মন্দ কথার চর্চা পারিবারিক অশান্তির অন্যতম কারণ ও আলোকিত পরিবার গঠনে অন্তরায়। তাই পরিবারে সবসময় ভালো কথা বলার অভ্যাস করুন।
> কখনো কারো রান্নার নিন্দা বা সমালোচনা করবেন না।
> নিজের কাজ নিজেই করার চেষ্টা করুন। ঘরের কাজে সাধ্যমতো সহযোগিতা করুন।
> পরিবারের সদস্যদের বিশেষ দিনগুলো মনে রাখুন ও শুভেচ্ছা জানান।
> নৈতিক শিক্ষার আলোকে পারিবারিক মূল্যবোধ গড়ে তুলুন এবং পারিবারিকভাবে সেগুলোর চর্চা করুন।
> বারান্দা থেকে ফেরিওয়ালার সঙ্গে দরদাম না করে বাইরের দরজায় আসতে বলুন।
> নিচতলার বাসিন্দাদের অসুবিধা হতে পারে−এমন শব্দ যেন আপনার বাসার মেঝেতে না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকুন।
> বারান্দায় কাপড় শুকাতে দিলে খেয়াল রাখুন যেন তা নিচতলার বারান্দা ঢেকে না ফেলে।
> ভেজা কাপড় চুঁইয়ে পড়া কিংবা ছাদ পরিষ্কারের পানি নিচতলার বারান্দায় বা পথচারীর গায়ে যেন না পড়ে। ছাদ বা বারান্দায় রাখা গাছের টবে পানি দেয়ার সময়ও সচেতন থাকুন।
> প্রতিবেশীর সমস্যা হয়−এমন শব্দে অডিও প্লেয়ার বা টিভি, কম্পিউটার/ লাউডস্পিকার চালাবেন না।
> বাড়িতে/ ছাদে কোনো পারিবারিক বা সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে প্রতিবেশীদের সুবিধা-অসুবিধা মাথায় রাখুন। আবাসিক এলাকায় উচ্চস্বরে গানবাজনা ও ডিজে পার্টি আয়োজন করা থেকে বিরত থাকুন। এটি একটি সামাজিক অনাচার।
> বাসায় (রান্নাঘর, শোবার ঘর, বসার ঘর, খাবার ঘর) পর্যাপ্ত ময়লা ফেলার ঝুড়ি/ বিন রাখুন। নির্দিষ্ট স্থানেই ময়লা ফেলুন।
> রান্নাঘরের সবরকম উচ্ছিষ্ট ময়লার ঝুড়ি/ বিনে রাখা পলিব্যাগের ভেতরে ফেলুন। ময়লা সংগ্রহকারী এলে তারপর তা বাইরে বের করুন। ভর্তি বা খালি বিন সিঁড়িঘরে/ বাসার সামনে রেখে দুর্গন্ধ ছড়াতে দেবেন না। ময়লা সংগ্রহকারী আসার আগেই বিন বাইরে রেখে আসতে হলে পলিব্যাগের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করুন।
> বৃষ্টির দিনে সদর দরজার বাইরে বাড়তি একটি পাপোশ রাখুন। এতে ঘর কাদা থেকে মুক্ত থাকবে।
এমএম//