ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

১১ খাবারে দূর হবে মানসিক অবসাদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৩৮, ১১ জুলাই ২০১৮

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বহুদিন ধরে মন খারাপের মতো সমস্যার শিকার হলে শরীরের প্রতিটি অংশের উপর বিরূপ প্রভাব পরতে শুরু করে,  এর ফলে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়াসহ ব্রেনে পাওয়ার কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

সেই সঙ্গে ইনসমনিয়ার মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠেতে পারে। তবে এখানেই শেষ নয়,  সম্প্রতি ল্যান্সেট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে,দীর্ঘ সময় ধরে ডিপ্রেশনের মতো রোগে ভুগলে ব্রেনের ভেতরে প্রদাহের মাত্রা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন সেলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। আর এমনটা হতে থাকলে অ্যালঝাইমারস, ডিমেনশিয়া এবং পার্কিসনের মতো জটিল মস্তিষ্ক ঘটিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

এখন প্রশ্ন হল বর্তমান সময়ে সিংহভাগ জীবনই এত মাত্রায় স্ট্রেসফুল যে মানসিক অবসাদের থেকে দূরে থাকাটা সম্ভাব নয়। তাই তো কম বয়সীদের এই লেখা পড়া দরকার। কারণ এই লেখায় এমন কিছু খাবারের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে, যেগুলোকে রোজ ডায়েটে রাখলে মন খারাপ তো ধারে কাছে ঘেঁষতেই পারে না। সেই সঙ্গে একাধিক মরণ রোগের প্রকোপ কমাতে সময় লাগে না। ফলে আয়ু বাড়ে,

এখন প্রশ্ন হল মনকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়েতে কী কী খাবারকে রোজের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে?

১. দই: স্কুল থেকে ফেরার পর প্রতিদিন যদি আপনার বাচ্চাকে এক বাটি করে দই খাওয়াতে পারেন, তাহলে তাদের শরীরে সরোটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার ব্রেন পাওয়ার বেড়ে গেলে অ্যাংজাইটির মতো সমস্যা কো কমেই, সেই সঙ্গে পড়াশোনাতেও উন্নতি ঘটে।

২.গ্রিন টি: শরীরকে রোগমুক্ত রাখার পাশাপাশি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে এবং মানসিক অবসাদ কমাতে আনতে গ্রিন টি-এর কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।আসলে এই পানীয়টিতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য উপাকারি উপাদান শরীর থেকে সব টক্সিক উপাদানদের বের করে ব্রেনকে এতটাই চাঙ্গা করে তোলে যে মানসিক অবসাদ কমতে সময় লাগে না।

৩. নারিকেল: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে,নারিকেলে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি ফ্যাট শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের ভেতরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ার এতটা বাড়িয়ে দেয় যে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে।

৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল এবং সবজি: যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে মানসিক অবসাদের প্রকোপ কামতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট নানাভাবে কাজে এসে থাকে। শুধু তাই নয়, মন খারাপ, অ্যাংজাইটি এবং ডিপ্রেশনের মতো ভয়ঙ্কর রোগকে দূরে রাখতেও এই উপাদান বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।তাই এমন স্ট্রেসফুল পরিবেশে নিজের মনকে চাঙ্গা রাখতে চেরি, আঙুর এবং সবুজ শাক-সবজির মতো খাবার বেশি করে খেতে হবে।না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

৫.পুদিনা পাতা: পুরানো দিনের আয়ুর্বেদিক পুঁথি ঘাঁটলেই জানতে পারবেন নার্ভাস সিস্টেম সম্পর্কিত নানা রোগের চিকিৎসায় কিভাবে ব্যবহার করা হত পুদিনা পাতাকে। আসলে এই পাতায় থাকা মেন্থল নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে এর মধ্যে থাকা ভিটামিন এ, সি, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার এবং পটাশিয়াম মানসিক অবসাদ কমানোর পাশাপাশি ইনসমনিয়ার মতো রোগ সারাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৬.পালং শাক: বাঙালির প্রিয় এই শাকটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীরে আয়রন, এবং ফলিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শারীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তাই এবার থেকে যখনই মনটা বেশ খারাপ খারাপ লাগবে পালং শাক খাওয়া শুরু করবেন। দেখবেন উপকার মিলবে।

৭. রসুন: এতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।শুধু তাই নয়, ছোট থেকেই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস করলে হার্টের কর্ম ক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি ডায়াবেটিসের মোতে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

৮. মাছ: প্রতিটি বাঙালি বাড়িতেই এখনও প্রতিদিন মাছ রান্নার রেওয়াজ রয়েছে, যে কারণে খেয়াল করে দেখবেন ব্রেন পাওয়ারের দিক থেকে বাঙালি অনেকের থেকেই বেশ এগিয়ে রয়েছে।আসলে মাছে উপস্থিত ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি, বি৬ এবং বি১২ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।শুধু তাই নয়, এই উপাদানগুলি মানসিক অবসাদের মতো রোগের আক্রমণ থেকে বাচ্চাদের বাঁচাতেও নানাভাবে করে থাকে।

৯.টমেটো: এতে উপস্থিত লাইকোপেন নামক এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর মন খারাপকে সমূলে উৎখাত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে মানসিক অবসাদের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগে না। এই কারণেই তো যাদের খুব স্ট্রেসফুল কাজ করতে হয়, তাদের প্রতিদিন একটা করে কাঁচা টমাটো খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

 ১০.বাদাম: এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন বি২, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ক।এই সব কটি উপাদান সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বার করে দেয়। ফলে কোন ভাবেই স্ট্রেস ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

 ১১. লেবু: পাতি লেবু, কমলা লেবু এবং মৌসাম্বি লেবুর মত সাইট্রাস ফলের শরীরে মজুত রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রকৃতিক সুগার, যা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ তো কমায়ই, সেই সঙ্গে মানসিক অবসাদকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো বাচ্চাদের প্রতিদিন এক বাটি করে ফল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

(সুত্রঃবোল্ড স্কাই)

কেআই/  

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি