ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ায় এই ১২টি খাবার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:২৯, ২৭ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৩০, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

স্মৃতিশক্তি কমার মতো ঘটনা ঘটতে শুরু করলে আগামী সময়ে ডিমেনশিয়ার বা অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন থাকে, তেমনি নানাবিধ ব্রেন ডিজিও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই মনে রাখার ক্ষমতা কমার মতো ঘটনা ঘটলে যত শীঘ্র সম্ভব একটা ‘এম আর আই’ করে নিতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে খাওয়া শুরু করতে হবে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলো। তাহলেই দেখবেন মস্তিষ্ক নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না।

এ ক্ষেত্রে দুইটি প্রশ্ন। এম আর ই কেন করতে হবে এবং এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলো কেন খেতে হবে? প্রথম প্রশ্নের উত্তর হল ওয়াশিংটন ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক স্টাডিতে দেখা গেছে, ‘এম আর আই’ হল একমাত্র একটি পরীক্ষা, যার সাহায্যে লক্ষণ প্রকাশের আনেক আগে থেকেই জেনে যাওয়া সম্ভব কোনও ধরনের ব্রেন ডিডিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে কি-না। আর এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলো খাওয়া শুরু করলে দেহের ভিতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যে তার প্রভাবে ব্রেন পাওয়ার বাড়ে চোখে পরার মতো। আর ব্রেন পাওয়ার বাড়লে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং মস্তিষ্কের কোনও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যে আর থাকে না, তা তো বলাই বাহুল্য! প্রসঙ্গত, যে যে খাবারগুলো খাওয়া শুরু করলে ব্রেনের ক্ষমতা বাড়ে সেগুলো হল-

কফি

ব্রেন পাওয়া বাড়াতে বাস্তবিকই এই পানীয়টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে কফিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের ক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে অ্যালঝাইমারসের মতো রোগ ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে মাথা যন্ত্রণা কমে, শর্ট টার্ম মেমরি জোরদার হয়ে ওঠে এবং পার্কিনসনের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও আর থাকে না। তবে দিনে ২ কাপের বেশি কফি খেতে যাবেন না যেন!

টমাটো

এই সবজিটিতে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড, লাইরোপেন এবং বিটা-ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করার পর ব্রেনে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। সেই সঙ্গে ব্রেনের ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে স্মৃতিশক্তির উন্নতি তো ঘটেই, সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং মনোযোগ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।

ব্রকলি

সালফারাফেন নামক একটি উপাদানে ভরপুর এই সবজিটি খাওয়া মাত্র শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে ব্রেন সেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

আখরোট

এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রা ভিটামিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, কপার, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার নানাভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে কাজে লাগে। সেই সঙ্গে দেহে উপকারি ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যাও বাড়ায়। ফলে সবদিক থেকে মস্তিষ্কের উপকার হয়।

পালং শাক

পালং শাকে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন কে, ফলেট এবং লুটেইন ব্রেনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজে আসে। ফলে নিয়মিত এই শাকটি খেলে স্বাভাবিকভাবেই ব্রেন পাওয়ার চোখ পরার মতো বৃদ্ধি পায়।

হলুদ

এই প্রকৃতিক উপাদানটি ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। আসলে হলুদে উপস্থিত বেশি কিছু কার্যকরি উপাদান একদিকে যেমন মস্তিষ্কের ভিতরে প্রদাহ কমায়, তেমনি অন্যদিকে বুদ্ধির বিকাশেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রায় তিন হাজার বছর পুরানো একটি আয়ুর্বেদিক পুঁথির খোঁজ মিলেছে, তাতেও ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে হলুদ কিভাবে কাজে আসে, সে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

অলিভ অয়েল

দক্ষিণ এশিয়ায় সাধারণত রান্না করতে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু যদি করা হয়, তাহলে দারুন উপকার মিলতে পারে। আসলে এই তেলটিতে রয়েছে পলিফনল নামে একটি উপাদান, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে দারুন কাজে আসে। প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি চলাকালীন বিজ্ঞানীরা লক্ষ করেছেন পলিফেনল নামক উপাদানটি নার্ভ সেলের কর্মক্ষমতা বাড়য়ে দেয়। ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

শতমূলী

এই প্রকৃতিক উপাদনটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং এমন কিছু উপাদান, যা শরীরে মস্তিষ্কের উপকারি লাগে এমন ব্য়াকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ফলেট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি উপাদানও এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

জাম

এই ফলটিতে উপস্থতি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ব্রেন সেল যাতে শুকিয়ে না যায় সে দিকে খেয়াল রাখে। সেই সঙ্গে ব্রেনের ভিতরে প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে অ্যালঝাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো মস্তিষ্কের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা যদি প্রতিদিন জাম খেতে পারেন, তাহলে দারুন উপকার মেলে।

নারকেল তেল

নারকেল তেলে উপস্থিত নিউরনের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকারক উপাদান যাতে মস্তিষ্কের ভিতরে কোনও ক্ষতি সাধন করতে না পারে, সে দিকেও খেয়াল রাখে। প্রসঙ্গত, নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মস্তিষ্কের মধ্যে তথ্যের আদান-প্রদান আরও দ্রুত গতিতে হতে থাকে। ফলে যে কোনও কাজ নিমেষে সম্পন্ন করতে কোনও কষ্টই করতে হয় না।

ডিম

এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় কোলিন এবং উপকারি কোলেস্টেরল, যা নিউরনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে ব্রেন পাওয়া বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ডিম খেলে দেহে বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন সেলের যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখে। ফলে নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে হ্রাস পায়।

মাছ

বেশি তেল রয়েছে এমন মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড নামে একটি উপাদান থাকে, যা মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে দারুন কাজে আসে। আসলে এই উপাদনটি ব্রেন সেলের ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কের যে অংশটা স্মৃতিশক্তির আঁধার, সেই অংশের ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। ফলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আর থাকে না বললেই চলে।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি