সকালের নাস্তা স্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ভালো?
প্রকাশিত : ০৮:২০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯
দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো সকালের নাস্তা বা ব্রেকফাস্ট । তবে প্রাতঃরাশ করলে সেটি শরীরের ওজন কমাতে খুব সহায়ক হবে না। গবেষণায় তাই বলা হচ্ছে।
আগের একটি গবেষণায় দেখা যায়, যারা প্রতিদিনের সকালের নাস্তায় ২৬০ ক্যালোরির বেশি খায়, তাদের ওজন যারা সকালে নাস্তা করে না তাদের তুলনায় অন্তত এক পাউন্ড বেশি হয়।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে স্বাস্থ্যসম্মত সকালের নাস্তা হতে পারে ক্যালসিয়াম এবং আঁশ জাতীয় খাবারের ভালো উৎস। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে সকালের ভালো নাস্তা মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রাতঃরাশ আপনাকে দেবে শক্তি। সকালে ভরপেট নাস্তা করলে দিনের পরের দিকে আপনার খুব বেশি ক্ষিদে লাগবে না। ফলে বার বার এটা-সেটা খাওয়ার দরকার পড়বে না। আর আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগানোর জন্য নাস্তা বেশ জরুরী।
এর আগে পর্যবেক্ষণ ভিত্তিক যেসব গবেষণা হয়েছে, তাতে বলা হচ্ছিল শরীরের সঠিক ওজন বজায় রাখার ক্ষেত্রে সকালের নাস্তা বেশ সাহায্য করে।
সকালের নাস্তা খাওয়ার সাথে ভালো ওজনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে। কিন্তু ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন অস্ট্রেলিয় গবেষণায় বলা হচ্ছে, সকালে নাস্তা খেলেই যে শরীরের ওজন স্বাস্থ্যসম্মত পর্যায়ে রাখা যাবে, তার প্রমাণ নেই।
সকালের নাস্তা নিয়ে মোট ১৩ টি গবেষণার পর্যালোচনা করেন অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা। মনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকদল তাদের পর্যবেক্ষণ থেকে বলছেন যে, সকালে নাস্তা করা বন্ধ করলে তা দৈনিক ক্যালোরির পরিমাণ হ্রাস করার ভালো একটি উপায় হতে পারে।
তারা গবেষণায় দেখতে পেয়েছে, নিয়মিত প্রাতঃরাশ গ্রহনকারীদের সার্বিক ওজন বাড়ে এবং অন্যদিকে যারা সকালের নাস্তা বর্জন করছে তাদের দুপুরে খুব বেশি খিদে পাচ্ছে না।
এবং তারা এও বলছে যে, বয়স্কদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে প্রাতঃরাশের সুপারিশ করার সময় সর্তক থাকা প্রয়োজন- কারণ এর বিপরীত প্রভাবও থাকতে পারে।
অবশ্য গবেষকরা এটিও স্বীকার করছেন, তাদের পরীক্ষার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এই গবেষণায় অংশগ্রহনকারীদের অল্প সময়ের জন্যে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়- মাত্র দুই থেকে ১৬ সপ্তাহের জন্য। সেই সাথে সকালের নাস্তা গ্রহনকারী বা বর্জনকারীদের শক্তিসঞ্চয়ের পরিমাণও অল্প সময়ের জন্যে তুলনা করা হয়।
দীর্ঘমেয়াদে ব্রেকফাস্ট করা এবং না করা ব্যক্তিদের নিয়ে আরো দীর্ঘমেয়াদে বিস্তারিত গবেষণা হওয়া উচিৎ বলে মত দেন এই গবেষকদল।
স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তা কোনটি?
- শক্তিসঞ্চয় করতে চাইলে- অ্যাপেল পাই খেয়ে দেখতে পারেন। সাথে চাই দারুচিনি ও সেদ্ধ করা মটরশুটি ও সেঁকা রুটি।
- আমিষের ঘাটতি মেটাতে চাইলে- সেঁকা রুটি বা টোস্টের সাথে থাকবে শাক-সবজী এবং ডিম ভুনা, অথবা কম চর্বিযুক্ত গ্রিক দৈ এর সাথে ফল ও বাদাম।
- হালকা কিছু- ফল, কলা এবং শাকপাতা দিয়ে ঘন সরবত বা থাকতে পারে সেঁকা রুটি বা টোস্টের সাথে ঘন করে অ্যাভোকাডো।
সূত্র: যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েব সাইট এসএইচএস
ভালোমত ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার পেতে হলে
লন্ডনের কিংস কলেজের পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান এবং পুষ্টিবিদ অধ্যাপক কেভিন ভেলান বলেন যে, ‘এই গবেষণা এটি বলছে না যে প্রাতঃরাশ করা শরীরের জন্যে খারাপ।’
‘স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে সকালের নাস্তা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষকরে দুধের সাথে সিরিয়াল ভালো উৎস্য হতে পারে ক্যালসিয়াম এবং আঁশের।’ কিন্তু বিএমজি`র গবেষকরা এই বিষয়টি নিয়ে সেভাবে কাজ করেননি। প্রফেসর কেভিনের মতে, তারা এটি বলছেন না যে ব্রেকফাস্ট করা বা সকালের নাস্তা করা স্থুলতার কারণ।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
এমএইচ/