যেসব কারণে দাঁত হলুদ হয়
প্রকাশিত : ১১:১২, ২৯ জুন ২০১৯
অনেকের দাঁত যেমন মুক্তোর মতো সাদা তেমনি অনেকের দাঁত হলদেটে বা হাল্কা হলুদ রঙের। এজন্য মাঝে মাঝে লজ্জা পড়তে হয়। কিংবা বিব্রতবোধ করতে হয়। দাঁত হলুদের জন্য যেমন নিজের অবেহলাও দায়ী তেমনি চিকিৎসাজনিত কারণেও দাঁত হলদেটে ভাব হয়ে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার ডেন্টিস্ট ড. জাস্টিন ফিলিপ বলেন, দাঁত হলদেটে হবার পেছনে দায়ী হলো লাইফস্টাইল। ধূমপান, কফি ও চা পান এবং তামাক চিবিয়ে খাওয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে।
অনেক সময়ে বংশগত কারণেই কারও দাঁত হলদেটে, কারও দাঁত উজ্জ্বল সাদা হতে পারে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দাঁত ম্লান হয়ে পড়তে পারে। কম বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হলে দাঁত হলদে হতে পারে।
এ ছাড়া ছোটবেলায় খেলতে গিয়ে পড়ে গেলেও দাঁত বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটার কারণে দাঁত হলদেটে হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্করা অনেক সময়ে দাঁত কিড়মিড় করতে ওপরের স্তর ক্ষয়ে দাঁত হলদে দেখাতে পারে।
দাঁত দুই কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বহিরাগত কারণ ও অভ্যন্তরীণ কারণ। এবার বিস্তারিত জেনে নেই :
এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত যা বহিরাগত কারণ
দাঁত হলুদ হবার বহিরাগত কারণ হলো দাঁতের বাইরের স্তর অর্থাৎ এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা । দাঁতের এনামেলে সহজেই দাগ পড়ে, কিন্তু তা সহজে উঠেও যায়।
তামাকে থাকা নিকোটিন এবং টার সহজেই দাঁতে দাগ ফেলে। এ ছাড়া সহজ আরেকটি উদাহরণ হলো, যেসব খাদ্য ও পানীয় কাপড়ে দাগ ফেলে, সেগুলো দাঁতেও দাগ ফেলবে। এ ছাড়া টক বা এসিডিক খাবার দাঁতের এনামেল ক্ষয় করে এবং দ্রুতই তাকে হলদেটে করে ফেলে।
দাঁতের যথেষ্ট যত্ন না নিলেও দ্রুত দাঁত হলুদ হয়ে যায়। এর জন্য নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা, ফ্লস করা এবং নিয়মিত ডেন্টিস্ট দেখানো জরুরি।
ওষুধজনিত কারণ যা অভ্যন্তরীণ কারণ
দাঁতের ভেতরের একটি স্তর হলো ডেন্টিন। স্বাস্থ্যগত কারণে এতে হলদেটে দাগ পড়তে পারে। এসব দাগ দূর করা সহজ নয়। অনেক ওষুধও আছে যা দাঁত হলুদ করে দিতে পারে। বিশেষ করে টেট্রাসাইক্লিন অ্যান্টিবায়োটিকটি শিশুদের দাঁত হলদেটে করে দেয়।
অনেক সময়ে দাঁতের উপকার করতে গিয়েও দাগ পড়তে পারে। জিঞ্জিভাইটিসের চিকিৎসা করতে ক্লোরহেক্সিডিনযুক্ত মাউথওয়াশ দিতে পারেন ডাক্তার। তা ব্যবহারে দাঁতে বাদামী দাগ পড়তে পারে। এ ছাড়া ব্রণ দূর করার ওষুধ মিনোসাইক্লিন থেকেও দাঁত হলুদ হতে পারে। কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিসাইকোটিক এবং রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ দাঁত হলদেটে করে। দাঁতের ভেতরে সিলভার ফিলিং ব্যবহার করা হলে দাঁত নীলচে-ধুসর দেখাতে পারে। আবার কেমোথেরাপি বা মাথা ও ঘাড়ে রেডিয়েশন দিলেও দাঁতে দাগ পড়তে পারে।
হলুদাভ প্রতিরোধ ও প্রতিকার
অবশ্যই নিয়মিত দাঁত মাজা, ফ্লস করা এবং দাঁতের ডাক্তার দেখানো দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং দাঁত হলুদ হওয়া থেকে রোধ করে। এর পাশাপাশি পানীয় পান করার সময়ে স্ট্র ব্যবহার করলে দাঁতে দাগ হওয়া কমে। যেসব খাবার খেলে দাঁতে দাগ হবে, সেগুলো খাওয়ার পর ব্রাশ করা বা নিদেনপক্ষে কুলি করা জরুরি।
তথ্যসূত্র : প্রিয়. কম
এএইচ/