ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দ্রুত ওজন কমাবে ​​​​​​​যেসব খাবার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৪, ১৮ আগস্ট ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

যাদের হাতে সময় নেই কিন্তু দ্রুত ওজন কমাতে চান, তাদের জন্য ভেরি লো ক্যালোরি ডায়েট বা ভিএলসিডির জুড়ি নেই। এ ডায়েটে থাকবে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনে ভরপুর ৬০০–৮০০ ক্যালোরি। পুষ্টিবিদরা  রোগীর বয়স ও অবস্থা বুঝে খুব হিসেব-নিকেশ করে এসব ডায়েট চার্ট বানান।

সাধারণ লো ক্যালোরি অর্থাৎ ১০০০–১৬০০ ক্যালোরি ডায়েটের বদলে এই ডায়েট খেলে ২ থেকে ৩ গুণ বেশি ওজন কমবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক থেকে দেড় কেজির মতো কমে আর ছেলেদের ক্ষেত্রে কমে দেড় থেকে দুই কেজি।

শুধু ওজন কমানোই নয় হার্টের অসুখ, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণসহ সবটাই এই ডায়েটের অন্যতম কাজ। অতিরিক্ত রক্তচাপ, সুগার, লিপিড কমতে শুরু করে ৩ সপ্তাহের মধ্যে৷ বিএমআই ৩৫–এর উপরে হলে এই ডায়েট খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

তবে শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হাই কোলেস্টেরল ইত্যাদি থাকলে বিএমআই ২৭–এর উপরে হলেও খাওয়া যায়। তবে এর কিছু বিপদও আছে। যেমন-

* ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ থাকলে কম খাবারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওষুধের মাত্রা না কমালে সুগার বা রক্তচাপ অনেক কমে গিয়ে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে।

* খাবারে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিনের মাপ ঠিক রাখতে না পারলে শরীরে কিটোন নামে এক ক্ষতিকর পদার্থের পরিমাণ বাড়ে (কিটোসিস) আর মাংসপেশি ক্ষয়ে যায়৷ এছাড়াও বেশ কিছু বিপদের আশঙ্কাও থাকে।

* ক্লান্তি, অপুষ্টি, পানিশূণ্যতা, হৃদস্পন্দনের ত্রুটিজনিত রোগ, গলস্টোন ইত্যাদির আশঙ্কা তো থাকেই।

কাজেই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এই ডায়েট শুরু করবেন না।

যাদের জন্য এই ডায়েট :

* যাদের বয়স ৬৫’র নীচে এবং বিএমআই ৩০-৩৫ এর মধ্যে তাদের যদি অত্যন্ত উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি থেকেও থাকে তাহলে এই ডায়েট খেতে বাধা নেই।

* ২-৪ মাস লো ক্যালোরি ডায়েট এবং ব্যায়াম করে যারা ওজন সেভাবে কমাতে পারেননি তারা এই ডায়েট খান।

* ওজন খানিকটা কমে যাওয়ার পর তা বজায় রাখার মতো মোটিভেশন থাকলেও এই ডায়েট খান।

কারা এই ডায়েট করবেন না :

* সম্প্রতি যাদের হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হয়েছে বা কার্ডিয়াক কনডাকশন ডিসর্ডার রয়েছে তাদের এ ধরনের ডায়েটে অভ্যস্ত না হওয়াই ভাল৷

* কিডনি, লিভার বা গলব্লাডারের অসুখ, ক্যান্সার ও এইডস আক্রান্তদের জন্য এই ডায়েট একদমই নয়।

* টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই ডায়েট নয়।

* জটিল মানসিক অসুস্থতা, অ্যালকোহলিজম বা অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসায় আক্রান্ত হলেও বাদ দিতে হবে এই ডায়েট।

সাবধানতাও অত্যন্ত জরুরি :

পুষ্টিবিদের কথা মতো খাবারের পরিমাণ আস্তে আস্তে কমিয়ে ও তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুষ্টি বাড়িয়ে শরীর যখন এই খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন শুরু হয় ভিএলসিডি। প্রথম দিকে যখন ওজন দ্রুত কমছে, প্রতি সপ্তাহে অবশ্যই ডাক্তার দেখান৷ কিছু পরীক্ষা করে রোগীর অবস্থা যাচাই করা এই সময় জরুরি৷ ৩ থেকে ৪ মাসের বেশি ভিএলসিডি চালানো উচিত নয় কখনওই।

পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এক পাও চলা যাবে না৷ ভিএলসিডির পর্ব শেষ হলে এলসিডিতে যেতে হবে অন্তত ৩ মাস সময় নিয়ে অর্থাৎ ধীরে ধীরে খাবারে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে হবে এই সময়।

এই সময় যা করা যাবে না :

* এই ডায়েট চলাকালীন সময়ে খুব বেশি দৌড়ঝাপের কাজ বা রোদে ঘোরাঘুরি চলবে না।

* অসহ্য ক্ষুধা পেলে এক-আধটা শশা বা অল্প ক্লিয়ার স্যুপ খেলে খুব একটা অসুবিধা হবে না।

* এদের প্রতিদিনের রান্নায় ১ চামচের বেশি তেল ব্যবহার করা যাবে না।

* ক্লান্ত লাগালে দুধ-চিনি ছাড়া কালো বা সবুজ চা মাঝে মধ্যে খেতে পারবেন।

* এক-আধকাপ চিনি ছাড়া কালো কফিও খেতে পারেন মাঝে মধ্যে।

এককাপ সব্জি বা টমেটো স্যুপও রাখুন ডায়েটে।

ডায়েট চার্ট :

এই ডায়েটের একটাই নীতি। হয় প্রায় সেদ্ধ, নয় তো তরল খাবার। এই খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট থাকবে ১০০ গ্রামের মতো৷ প্রোটিন ০.৮–১.৫ গ্রাম/কেজি- এমন ওজনের৷ মাছ, চর্বি ছাড়া মাংস, ডিমের সাদা, সয়াবিন বা দুধ হবে এই প্রোটিনের উৎস৷ ইলেকট্রোলাইট, ভিটামিন, মিনারেলও দিতে হতে পারে। ডাক্তারের পরামর্শ মতো পুষ্টিবিদ বানাবেন সময় অনুযায়ী ডায়েট চার্ট।

কী ধরনের খাবার দেওয়া হয় সচরাচর, তার একটা উদাহরণ রইল।

৬০০ ক্যালোরি সলিড ডায়েট :

সকালে মাখন বা জ্যাম ছাড়া ১টা টোস্ট, ২৫ গ্রাম ছানা অথবা ১টা ডিমের সাদা অংশ (সেদ্ধ বা পোচ করে), ১ কাপ চিনি ছাড়া চা।

বেলা ১০-১১টা নাগাদ মুসাম্বি, আপেল, পেয়ারা, পাকা পেঁপের মধ্যে যে কোন একটা ফল, তা হবে ১০০ গ্রাম।

দুপুর ১টায় আধাকাপ ভাত অথবা একটা ছোট রুটি (২৫ গ্রাম), আধাবাটি  ডাল (১৫ গ্রাম) অথবা আধাবাটি টক দই (১০০ গ্রাম), সঙ্গে ছোট মাছ অথবা এক-দু’ টুকরা চিকেন (৩০ গ্রাম), সবুজ তরিতরকারি এবং স্যালাড।

বিকেল ৩টা নাগাদ ১ কাপ চা (চিনি ছাড়া) ও একটা ক্রিম ক্র্যাকার বিস্কুট। সন্ধ্যায় মুসুর ডাল সেদ্ধ, সালাড, আর একটা সেদ্ধ বা পোচ করা ডিম।

রাত্রি ৮টা নাগাদ ১ কাপ ভেজ ক্লিয়ার স্যুপ, ১টা ছোট রুটি, সবুজ তরিতরকারি এবং সালাড৷ ঘুমনোর আধ ঘণ্টা আগে এককাপ মাখন তোলা দুধ থাকবে।

৬০০ ক্যালোরি লিকুইড ডায়েট :

এক্ষেত্রে সকাল ৬টায় এককাপ চা (চিনি ছাড়া)। সকাল ৮টায় এককাপ মাখন তোলা দুধ, সকাল ১০টায় ১ কাপ ফলের রস (তিনটে মুসাম্বি বা কমলালেবু দিয়ে বানানো)।

বেলা ১২টায় আধাকাপ পরিজ/ডালিয়া (২৫ গ্রাম), সঙ্গে ১ কাপ সব্জি বা টমেটো স্যুপ রাখুন ডায়েটে।

বিকেল ৩টায় ১ কাপ ফলের রস (তিনটে মুসাম্বিলেবু দিয়ে বানানো) সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ১ কাপ ভেজিটেবল বা টমেটো স্যুপ।

রাত ৮টা নাগাদ ছোট একবাটি পাতলা খিচুড়ি এবং ঘুমানোর আগে এক কাপ মাখন তোলা দুধ থাকবে।

সূত্র : আনন্দবাজার

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি