ঢাকা, শনিবার   ০২ নভেম্বর ২০২৪

সন্তানের পরীক্ষা ভীতি কাটানোর উপায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:০৭, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বার্ষিক পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় চলছে। দুই মাস পরেই  শুরু হবে স্কুল পরীক্ষা। এই পরীক্ষা নিয়ে ভীতিতে  থাকে অনেক শিশু।  তবে এই ভীতি শুধু ছোটদের বেলায় নয়, একটু উঁচু ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরাও পরীক্ষা নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বেগে ভোগে।

তবে তাদের ভয়ের কারণ ও মাত্রা ছোটদের মতো নয়। আর এই ভয়ের জেরে ফলাফলও খারাপ হয়। যেটুকু সময় বাকি আছে, ভয়ের চোটে তাকেও ব্যবহার করা হয়ে ওঠে না। সিলেবাস শেষ হয়নি বা তেমন করে মন দেওয়া হয়নি সারাবছর, এমন সমস্যাও নতুন নয়।

কোন ভাবে যদি আপনার সন্তানও এমন সমস্যায় পড়ে, তাহলে সেই ভয় কী ভাবে দূর করবেন? হাতে যেটুকু সময় আছে, মন দিয়ে ও বুদ্ধি খাটিয়ে সেটুকু সময়কে কাজে লাগাতে পারলে কিন্তু অনেকটাই  সামলানো যায়৷ তাহলে তা কী ভাবে করবেন? এবার তা জেনে নিন-

* ঠাণ্ডা মাথায় বসে কয়েকটি জিনিস পর পর ভাবুন৷ অনেকেই নানা কারণে পরীক্ষার কয়েক মাস আগে পড়া শুরু করে এবং মোটের উপর ভালও করে৷ কাজেই অকারণে উদ্বিগ্ন হবেন না। সন্তানের ভয়ের জায়গাটাও দূর করতে হবে। এ সময় পাশে থাকতে হবে, যাতে মনে জোর পায় সন্তান। বাকি সময়টা ভালভাবে ব্যবহার করতে শেখান।

* ভাল করে রুটিন বানিয়ে দিন৷ কতক্ষণ পড়বে, গোসল–খাওয়া–ঘুমে কত সময় লাগবে, সব হিসেব করে নিন৷ তবে ঘুমের সময়টা ঠিক রাখবেন। কারণ ঠিক মতো না ঘুমলে পড়ায় মন বসবে না৷ পড়া মনে রাখতেও অসুবিধা হবে৷ আধ ঘণ্টা রাখুন আড্ডা, বেড়ানো ইত্যাদির জন্য৷ পড়া মনে রাখতে গেলে এটুকুর দরকার আছে৷

* কী ভাবে পড়বে তার প্ল্যান করে দিন৷ যেসব বিষয়ে সে দুর্বল সেগুলো বেশি করে পড়তে দিন৷ দরকারে কয়েক বছরের প্রশ্ন গেঁটে একটা সাজেশন করে দিন। সাজেশন ভিত্তিক পড়াশোনার অভ্যাস ভাল নয়, তবু দুরবস্থা কাটাতে কিছুটা হলেও কাজে আসবে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বার বার পড়তে বলুন৷ ওই সময় পড়ার বিষয়টি ছোট ছোট পয়েন্টে লিখে বা গল্পের ছলে আলোচনা করুন ওর সঙ্গে ৷ যে অধ্যায় পড়া হল সেটা পর দিন আবার পড়া এবং সেই সংক্রান্ত প্রশ্ন সমাধান করাও জরুরি৷

* টেনশন–স্থিরতার অভাবে প্রথম দিকে মন বসাতে অসুবিধা হবে৷ কাজেই উত্তেজনা না বাড়িয়ে স্থির থাকুন। সন্তানকে সাহস দিন এবং কিছু পারলে ধন্যবাদও দিন।

* টেনশন কমাতে খাওয়া-দাওয়ার দু’-চারটে নিয়ম মেনে চলুন৷ যেমন, উঁচু ক্লাসে পড়লেও কফি বেশি খাবেন না৷ কোল্ড ড্রিঙ্কও না খাওয়াই ভাল৷ চা খেতে পারেন। হালকা খাবার আর দিনে অন্তত ৭–৮ গ্লাস পানি খান৷  সুরের প্রভাবেও মন শান্ত হয় আমাদের৷ কাজেই পড়ার ফাঁকে ফাঁকে গান শোনা যায়।

* হঠাৎ টেনশন মূলত একটু উঁচু ক্লাসে হয়। উদ্বেগ বাড়লে মন অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন৷ অনেক সময় পড়তে বসে দেখা যায়, কিছুই মাথায় ঢুকছে না৷ মনে হয় নির্ঘাত ফেল করবেন৷ তৎক্ষণাৎ পড়া ছেড়ে উঠে সিনেমা দেখে আসুন বা যা করলে ভাল লাগবে তাই করুন৷ অশান্তি কেটে যাওয়ার পর আবার বই নিয়ে বসবেন৷

মৌখিক পরীক্ষার ভয় কাটাতে কয়েকটি পদ্ধতি মেনে দেখুন, কাজ হতে পারে৷ যেমন—

* প্রশ্ন এবং উত্তর কথ্য ভাষায় লিখে আয়নার সামনে বলুন৷

* কাউকে বলুন প্রশ্ন করতে আর আপনি উত্তর দিন খাতা না দেখে৷

* পরের ধাপে বাড়ির কয়েকজনকে প্রশ্নোত্তর পর্বে থাকতে বলুন।

* বিষয়ের বাইরেও কিছু প্রশ্ন করতে বলুন৷ ভেবে-চিন্তে উত্তর দেওয়া ও অজানা প্রশ্ন মোকাবিলা করা সহজ হবে৷

* কোন বিষয়ে দু’-তিন মিনিট বলা অভ্যাস করুন৷ প্রথমে লিখে আয়নার সামনে, তারপর না দেখে কয়েক জনের সামনে৷ কোন কোর্সে ভর্তি হতে পারেন৷

এগুলো মানলে ভয়ভীতি কাটবে পরীক্ষার ফলাফলও ভালো হবে। পরের বছরের জন্য এই নিয়মগুলো প্রথম থেকেই ফলো করুন।

এএইচ/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি