ডায়াবেটিস রোগীরা যে খাবার খেলে ভাল থাকবেন
প্রকাশিত : ১৩:১৬, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯
স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাবে শরীরে বাঁধতে পারে ডায়াবেটিসের মতো রোগ। যা আপনার জীবনকে নিয়ে যেতে পারে মৃত্যুর কাছাকাছিও। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিনের খাবারে স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার রাখতে পারেন, তা যেমন আপনার স্বাস্থ্য ভাল রাখবে তেমনি ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও হ্রাস করবে।
অনেক স্বাস্থ্যকর খাবার আছে যা ডায়াবেটিস রোগীকে সুস্থ্য থাকতে সহায়তা করে। আবার কিছু খাবার আছে যেগুলো ডায়াবেটিস প্রতিরোধও করে। ডায়াবেটিস রোগে যারা আক্রান্ত অথবা যারা এই রোগের ঝুঁকিতে আছেন তারা জেনে নিন সুস্থ থাকার জন্য কোন ধরনের খাদ্য নিয়মিত গ্রহণ করবেন :
সবুজ শাক সবজি
সবুজ শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ উপাদান এবং ফাইবার থাকে যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এমনকি ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। এগুলো হলো পালং শাক, পাতা কপি, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুস পাতা ইত্যাদি। এসব খাবারে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম। গবেষণায় বলা হয়, সবুজ শাক সবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
শস্য ও দানাদার জাতীয় খাদ্য
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শস্য ও দানাদার জাতীয় খাদ্য মানুষের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। কারণ এতে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ধীরে ধীরে রক্তে চিনির মাত্রা বাড়ায়। ফলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কমে। আবার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে শস্য দানা।
বাদাম
বাদাম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি প্রায় ২১ শতাংশ পর্যন্ত কমায় চীনাবাদাম। বাদামে প্রচুর আঁশ এবং হৃৎপিণ্ডের জন্য পুষ্টিকর উপাদান আছে। বাদামের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১০-২০ গ্রাম বাদাম রাখলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে বিস্ময়করভাবে কাজ করে। নিয়মিত বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
ডাল এবং বীজ জাতীয় খাদ্য
ডাল এবং বীজ জাতীয় খাদ্যও ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ এবং আমিষ থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর জন্য ছোলা বুট, বিভিন্ন রকমের কলাই বা ডাল, সূর্যমুখীর বীজ ও কুমড়ার বীজ অনেক উপকারী।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই সাদা আলুর পরিবর্তে মিষ্টি আলু খওয়াই উত্তম।
সবুজ চা বা গ্রিন টি
সবুজ চা মানুষের শরীরে ইনসুলিনের মতো কাজ করে, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে এটি। তবে চিনি ছাড়া খেতে হবে গ্রিন টি।
মাছ
মাছে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। তাছাড়া মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ইনসুলিনের সংবেদনশীলতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। এটি গ্লুকোজের ঘনত্ব কমিয়ে ডায়াবেটিস রোগের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে।
টক দই
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে টক দই সাহায্য করে। টক দইয়ে চিনির পরিমাণ খুব কম থাকে এবং এটি রক্তে চিনির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
ডিমের সাদা অংশ
ডিমের সাদা অংশে উচ্চমানের চর্বিহীন প্রোটিন এবং কম মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। যা ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। ডিম একটি পেশি গঠনকারী খাদ্য।
লেবু ও টক জাতীয় ফল
লেবু ও লেবু জাতীয় টক ফল ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কাজ করে। ভিটামিন সি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। টক জাতীয় ফল খেলে ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ হয়। জাম্বুরা, কমলা, লেবু এবং অন্যান্য টক জাতীয় ফল ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে ইনসুলিনের মতো কাজ করে।
দারুচিনি, রসুন ও মেথি
এসব মসলাতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান রয়েছে। যা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রান্নার পাশাপাশি এসব মসলা স্বাস্থ্য ভালো রাখার ওষুধ হিসেবেও কাজ করে।