শীতকালীন রোগ থেকে সাবধান!
প্রকাশিত : ১১:০৩, ১৬ নভেম্বর ২০১৯
তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে বাড়ে রোগব্যাধি। শীতের ঠাণ্ডা, শুষ্ক আবহাওয়া এবং ধূলাবালির আক্রমণে অনেকে নাজেহাল হন। এদের যদি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, জয়েন্ট পেন, সাইনোসাইটিস, নার্ভের সমস্যা থাকে তা আরও বেড়ে যায়। অর্থাৎ যাদের ক্রনিক অসুখ রয়েছে তাদেরকে শীতকালে থাকতে হবে সাবধানে।
তবে শীতকাল অনেকের প্রিয়। এরা এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়িয়ে এবং আনন্দ উৎসবে খাওয়া-দাওয়া করে থাকেন ফুরফুরে মেজাজে। তবে সমস্যায় পড়েন যারা সর্দি-কাশির মতো সাধারণ কিছু রোগে সহসাই কাবু হন। চিকিৎসকারা বলেন এ রকম লোকদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাই এরা অল্পতেই রোগে আক্রান্ত হন। আবার শীতের সময় কিছু রোগের প্রকোপ এমনিতেই বাড়ে। তাই এই সময়ে সাবধানে থাকাটা জরুরি।
এবার জেনে নেওয়া যাক কিভাবে সাবধানতা গ্রহণ করবেন, সে সম্পর্কে...
• তাপমাত্রা এবং বাতাসে ধূলিবালি বেশি থাকার কারণে শীতকালে অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যায়। বাক্সবন্দি লেপ-কম্বল, বইয়ের সংস্পর্শে এলে হাঁচি শুরু হয়ে গিয়ে শ্বাসে সমস্যা হতে পারে। এটি এক ধরনের অ্যালার্জি। এই অ্যালার্জি থেকে রেহাই পেতে ইনহেলার নেওয়া উচিত। ইনহেলার নিলে কম পরিমাণ ড্রাগ সরাসরি ফুসফুসে প্রবেশ করে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনহেলার ব্যবহার করুন।
• এ সময়ে মাথাচাড়া দিতে পা জয়েন্ট পেইন। রিউমাটয়েড এবং অস্টিয়ো এই দু’রকমের আর্থ্রাইটিস রোগীরা শীতে বেশি কষ্ট পান। তাপমাত্রা কমার ফলেই ব্যথা-যন্ত্রণা বাড়ে। এই যন্ত্রণায় গরম সেঁক বা হট ওয়াটার ব্যাগ নেওয়া যাবে না। বিশ্বজুড়ে চিকিৎসকরা এই পদ্ধতি নাকচ করে দিয়েছেন। এতে সাময়িক আরাম হলেও আসলে সমস্যা বেড়ে যায়। জয়েন্ট পেইনের ক্ষেত্রে নয়, তবে ঘুম থেকে উঠে ঘাড়ে ব্যথা মনে হলে গরম সেঁক নিতে পারেন।
• জয়েন্ট পেইন হলে অনেকে মনে করেন ক্যালশিয়াম কমে গিয়েছে। তখন ক্যালশিয়াম কিনে খেতে শুরু করেন। অতিরিক্ত ক্যালশিয়াম বা ভিটামিন-ডি শরীরের জন্য খারাপ। হার্টের সমস্যা হতে পারে। অনেক দিন ধরে ব্যথা চললে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
• শীতকালে অনেকে মাথার যন্ত্রণায় ভোগেন। মাথার কোন অংশে ব্যথা হচ্ছে, সেটা খেয়াল করতে হবে। দীর্ঘ সময় ধরে যদি মাথার পিছন দিকে ব্যথা হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সাধারণ মাইগ্রেনে চায়ের বদলে কফি খেতে পারেন। ক্যাফেইন মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করে।
• ঠাণ্ডায় পায়ের পেশিতে হঠাৎ করে টান ধরে যায়। শীতেও ডিহাইড্রেশন হয়। কম পানি খাওয়ার জন্যই মূলত ক্র্যাম্প ধরে। এ ছাড়া শরীরে খনিজ পদার্থের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে টান ধরার সমস্যা হয়। তাই পরিমাণ মতো পানি খাবেন।
* যাদের টনসিল ও ফ্যারেঞ্জাইটিসের সমস্যা রয়েছে, তারা শীতের শুরু থেকেই ব্যবস্থা নিন। হালকা গরম পানি খান, গলায় স্কার্ফ জড়ান এবং উষ্ণ গরম পানিতে গোসল করুন। এগুলো মেনে চললে শীতে ভাল থাকবেন।
• ঠাণ্ডা এবং দূষণের জন্য একবার কাশি হলে সহজে সারে না। আলাদা ধরনের কাশির জন্য আলাদা ওষুধ হয়। যেটা অধিকাংশ মানুষই জানেন না। ড্রাই, প্রোডাক্টিভ এবং টিনেশাস— সাধারণত এই তিন ধরনের কাশি দেখা যায়। প্রতিটিরই আলাদা ওষুধ। তাই নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তবে শীতকালের কিছু ভাল দিকও আছে। এ সময়ে ভাইরাস জনিত অসুখ কম হয়। আবার ডায়েটের জন্য শীত খুব ভাল সময়। প্রচুর টাটকা শাক-সবজি পাওয়া যায় এ সময়ে। পাশাপাশি শরীরচর্চার জন্যও শীত উপযুক্ত।
এএইচ/