শীতে রোগমুক্ত থাকবেন যেভাবে
প্রকাশিত : ১১:৫৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯
কয়েক দিন ধরে শীতের প্রকোপ বেড়ে গেছে। সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। সর্বত্র কুয়াশাচ্ছন্ন। এ সময় কিন্তু শরীরে দেখা দেয় নানা রোগব্যাধি। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা শীতের রোগে সহজেই কাবু হয়ে যায়।
শীতের এই সময়টায় ঠাণ্ডাজনিত সমস্যাগুলোর মধ্যে সর্দি-কাশি, অ্যাজমার প্রকোপ বেড়ে যাওয়া, সাময়িক জ্বর, কোল্ড অ্যালার্জি বেশি হয়ে থাকে। এ সময় বাতাসে ধুলাবালি বেশি থাকায় অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা দেখা যায়। ঠাণ্ডার কারণে অনেকের টনসিল বেড়ে গিয়ে গলাব্যথার সৃষ্টি হয়।
যাদের ডায়াবেটিক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ রয়েছে, শীত তাদের জন্য বিশেষ সমস্যার কারণ। এছাড়া অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় শ্বাসনালীর সংক্রমণ এবং ঝুঁকিপ্রবণ ব্যক্তিদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে। শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধদের এ সংক্রান্ত ঝুঁকি বেশি। তাদের ক্ষেত্রে ঠাণ্ডা পরিহারে অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন।
শ্বাস নেওয়ার সময় শিশুদের বুকের নিচের অংশ ডেকে যাওয়া মারাত্মক শ্বাসনালী সংক্রমণের (নিউমোনিয়া) লক্ষণ। সে ক্ষেত্রে অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
শীত শিশুদের রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। ডায়রিয়া হলে বার বার খাবার স্যালাইন খাওয়ান, স্বাভাবিক খাবার চালু রাখুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
এছাড়া শীতের রোগ থেকে নিজেকে যেভাবে দূরে রাখা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক...
* শীতের ঠাণ্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে গরম কাপড় পড়তে হবে। কান ও হাত ডেকে রাখতে হবে, গলায় মাফলার ব্যবহার করতে হবে।
* ঠাণ্ডা একেবারে এড়িয়ে চলতে হলে গোসল বা হাতমুখ ধোয়া থেকে শুরু করে সবসময়ে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। খাবার পানির ক্ষেত্রে হালকা গরম পানি মিশিয়ে খেতে পারলে ভালো। এ সময় ঠাণ্ডা খাবার, যেমন আইসক্রিম, কোক ইত্যাদি এড়িয়ে চলা উচিত।
* শীতে আবহাওয়া থাকে শুষ্ক, বাতাসে থাকে ধুলাবালি তাই এগুলো এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করা যেতে পারে।
* প্রয়োজনে ত্বকের চাহিদা অনুযায়ী ক্রিম ব্যবহার করা করুন।
* শীতের সময়েও প্রচুর পানি পান করুন। এছাড়া ভিটামিন সি রয়েছে এমন খাবার যেমন জলপাই, কমলা, লেবু ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। এগুলো শীতের রোগের প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে।
* শিশুরা অনেক সময় শরীরে গরম কাপড় রাখে না বা খুলে ফেলে। তাই শিশুর দিকে সতর্ক নজর রাখা উচিত।
* শীতে শরীর সতেজ রাখতে অবশ্যই ব্যায়াম অব্যাহত রাখতে হবে।
* শীতে অনেক স্থানে মশার প্রকোপ বেড়ে যায়। মশাবাহিত নানা রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। তাই সতর্কতা গ্রহণ করুন। কাঁপুনি দিয়ে উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর আসা, বার বার জ্বর আসা, গিঁটে ব্যথা ইত্যাদির লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মোটকথা শীতকে কোনভাবেই অবহেলা করা যাবে না। নিজের জন্য যেমন সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি তেমনি শিশু ও বয়ঃবৃদ্ধের ক্ষেত্রে বাড়তি যত্ন নেওয়া আরও জরুরি।
এএইচ/