অবহেলার কারণে উচ্চ রক্তচাপও হতে পারে প্রাণঘাতী!
প্রকাশিত : ১০:১৫, ২২ জানুয়ারি ২০২০
নিঃশব্দে আমাদের শরীরে বাসা বাঁধে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ। অনেকেই আছেন শরীরের এই সমস্যাকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু সময় মতো ব্যবস্থা না নিতে পারলে এই রোগও প্রাণঘাতী হতে পারে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, মানসিক চাপ এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ফলে ২০-৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেও বাড়ছে হাইপার টেনশনে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা। আর এই উচ্চ রক্তচাপের কারণে হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ড্যামেজের মতো নানা রোগে মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দেশের প্রতিটি পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের রোগী রয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপের রোগী। এরা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ওষুধ খেয়ে থাকেন। দেখা গেছে, বাংলাদেশের চিকিৎসকরা প্রেসক্রিপশনে যেসব ওষুধ বেশি লিখেন, তার মধ্যে গ্যাসট্রিকের পড়েই রয়েছে উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ।
চিকিৎসকদের মতে, শরীরে রক্তচাপ বাড়ার মূল কারণ অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন। জীবনযাত্রায় এবং খাদ্যতালিকায় কিছু
পরিবর্তন আনতে পারলে ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের সমস্যা। কিন্তু কী
ভাবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক...
লবণ কম খাওয়া
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে প্রথমেই রবণ খাওয়া কমাতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত লবণ রক্তে মিশে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়ায় এবং দেহে সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট করে। ফলে রক্তচাপ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। বাড়তে পারে কিডনির সমস্যাও। রান্নায় ছাড়া, খাবার পাতে কাঁচা লবণ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে, রান্নাতেও যতটা সম্ভব লবণ কম দিন।
মধু
আয়ুর্বেদ মতে, হাইপারটেনশন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবচেযে উপকারি হল মধু। এক কাপ উষ্ণ গরম পানিতে এক চামচ মধুর সঙ্গে ৫-১০ ফোটা অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে খেতে পারলে রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
কলা
কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম যা রক্তচাপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। দিনের যে কোনও সময়েই কলা খাবার চেষ্টা করুন।
সবুজ সবজি
অতিরিক্ত তেল আর মশলাদার খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। মশলাদার খাবারের বদলে বেশি করে সবুজ শাক-সবজি রাখুন খাবারে। সেদ্ধ বা বা সামান্য তেলে রান্না করা সবজি শরীরে ক্যালোরির মাত্রা ধরে রাখে। ফাইবার সমৃদ্ধ সবুজ সবজিতে থাকা প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, ফোলেট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
তরমুজ
তরমুজে রয়েছে লাইকোপিন, পটাসিয়াম, ভিটামিন এ এবং ফাইবার। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অ্যামিনো অ্যাসিড এল-সিট্রুলিন সমৃদ্ধ তরমুজ শুধু রক্তচাপ নয়, শরীরের নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
কমলালেবু ও ডাবের পানি
পুষ্টিবিদদের মতে, কমলালেবুর রসের সঙ্গে ডাবের পানি মিশিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করে দিনে ২ থেকে ৩ বার খাতে পারলে রক্তচাপ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
ওটমিল
ওজন কমাতে এবং এনার্জি বাড়াতে ওটসের কোনও বিকল্প নেই। ডায়েটিশিয়ানরা সকালে ওটস খাওয়ারই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ওটসে সোডিয়ামের মাত্রা খুব কম, তা ছাড়া রয়েছে উচ্চমাত্রায় ফাইবার যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও খেতে পারেন কালোজিরা। স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী কালোজিরা। নিয়মিত কালোজিরা খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
মনে রাখবেন, প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা নিরুপদ্রব ঘুম মানুষকে অনেক রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। যারা প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমান, তাদের উচ্চ রক্তচাপে ভোগার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
এএইচ/