বয়স বাড়লেও পিছু ছাড়ছে না ব্রণ, কারণ কী জানেন?
প্রকাশিত : ০৯:২৮, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
পরিণত বয়সেও অনেকে ব্রণের সমস্যায় ভুগেন। শীত হোক কিংবা গরম, কোনও ঋতুতেই পিছু ছাড়ছে না এই সমস্যা। কেবল তাই নয়, ব্রণ চলে গেলেও রয়ে যাচ্ছে কালচে দাগ। কিন্তু এই বয়েসেও ত্বকে ব্রণ হয় বা কেন, এত যত্ন নেওয়ার পরেও কেনই বা ত্বক থেকে ব্রণর সমস্যা রোধ হয় না তা অনেকেরই প্রশ্ন।
দৈনন্দিন জীবনে খাওয়া-দাওয়া, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, দূষণ-- সব কিছুর উপরই নির্ভর করে ত্বকের স্বাস্থ্য। তাই ত্বকের সুস্বাস্থ্য চাইলে আপনাকে
এখনই দৈনিক জীবনচর্যায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
এবার জেনে নেওয়া যাক কী কী কারণে ব্রণ হতে পারে ...
* আজকের কর্মব্যস্ত জীবনে অতিরিক্ত স্ট্রেসের কারণে অনিদ্রা সমস্যা খুব কমন। এই কারণেও ত্বকে ব্রণ হতে পারে। তাই চেষ্টা করুন স্ট্রেসমুক্ত থাকতে এবং প্রতিদিন অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমোতে।
* মোবাইল ছাড়া আমাদের জীবন এক কথায় অচল। কাজের সূত্রেই হোক কিংবা অন্য কারণে কানে ফোন দিয়ে কথা বলে যাচ্ছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আর তাতেই সমস্যা! ফোনে কথা বলার সময় ত্বকে চাপ পড়ে। ফোনে ও হাতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া, যা খালি চোখে দেখা যায় না। এদের কারণেও ত্বকে ব্রণ হয়ে থাকে। তাই ফোনে কথা বলার সময় ব্যবহার করুন হোডফোন। তাতে কিছুটা হলেও সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে।
* নিয়মিত মেকআপ করেন? শেষ কবে মেকআপ ব্রাশ ও স্পঞ্জ পরিষ্কার করেছেন মনে আছে? মেকআপ সামগ্রীগুলো বার বার ব্যবহারের ফলে এতে জন্মায় প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া। এসব ব্যাকটেরিয়া থেকেও হতে পারে ব্রণ। তাই মেকআপ সামগ্রী সব সময়ে পরিষ্কার রাখুন। অন্যের মেকআপ সামগ্রী ব্যবহার না করাই শ্রেয়।
* ত্বকে ব্রণ হওয়ার আর একটি কারণ হতে পারে ঘন ঘন মুখ ধোয়া। ত্বক পরিষ্কার রাখলে ব্রণ হবে না, এই ভেবে অনেকেই কিছুক্ষণ পর পর মুখ ধুয়ে থাকেন। এতে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। তাতেও কিন্তু বাড়তে পারে অ্যাকনের সমস্যা।
* মেয়েদের মেনোপজ, মাসিক ঋতুচক্রের আগে ও পরেও অনেকের ব্রণ হয়। যারা নিয়মিত জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য হরমোনের ওষুধ খান, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে বুঝতে হবে দেহে হরমোনের সমস্যার কারণেই ব্রণ হচ্ছে। এ ব্যাপারগুলো নিয়ে অবশ্যই একবার আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নেবেন।
* কারোর পলিসিস্টিক ওভারি থাকলে তার সিন্ড্রোম হিসেবে ব্রণ হতে পারে। এই ধরনের ব্রণকে 'অ্যাডাল্ট ব্রণ' বলে।
এসব ক্ষেত্রে তেল বা মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। দুগ্ধজাত দ্রব্য ডায়েটে না রাখাই ভাল। ত্বকে তেলবিহীন প্রসাধনী ব্যবহার করুন। এতে ব্রণ
অনেকটা আয়ত্তে আসবে। ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের(পিসিওএস) জন্য। নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। কিছু কিছু খাবার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করার কারণে অ্যাকনে হয়। সম্ভব হলে এই তিন রকমের খাবার এড়িয়ে চলুন।
• ত্বক ভাল রাখার জন্য ডায়েটে যদি বদল আনতে চান তা হলে প্রথমেই ডায়েট থেকে বাদ দিন প্রসেসড সুগারযুক্ত খাবার। প্রসেসড সুগার রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি টেস্টোস্টেরনের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলে ডিপ সিস্টিক অ্যাকনে দেখা দেয় মুখের ত্বকে। যা বেশ যন্ত্রণাদায়ক, তেমনই দাগ রেখে যায় অনেক সময়।
• যদি আপনার ল্যাকটোজে অ্যালার্জি না থাকে, তাহলেও ডেয়ারি প্রডাক্ট ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। কেন ডেয়ারি প্রডাক্টের প্রভাবে অ্যাকনে হয় তা স্পষ্ট না জানা গেলেও, অনেক ক্ষেত্রেই ডায়েট থেকে দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার বাদ দিয়ে অ্যাকনে-সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
• দুধের মতো ডিমও অনেক সময় ত্বকের সমস্যার কারণ হতে পারে। ডিম থেকে অ্যাকনে, একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো সসমস্যা দেখা যায়।
ত্বকের যত্ন নিতে ডায়েটে আনপ্রসেসড খাবার ও প্রচুর জল থাকতে হবে। তবে যদি ডায়েটে বদল আনতে চান, তাহলে এক সঙ্গে পুরো ডায়েট বদলে না ফেলে একে একে বদল আনুন। ব্রণ কখনওই খুঁটবেন না, তাতে ইনফেকশন বাড়বে। টি-ট্রি অয়েল ডাইলিউট করে ব্রণর উপর লাগালে সুরাহা হতে পারে। হাতের কাছে অ্যাপেল সিডার ভিনিগার থাকলেও কাজ চলবে।
এএইচ/