বেলোয়ারী ঝাড়
প্রকাশিত : ১৭:০৪, ২৫ জুন ২০২০ | আপডেট: ১৭:০৬, ২৫ জুন ২০২০
গ্রামের আলপথ ধরে হেঁটে কলেজে যেতাম
পথের ধারেই ছিল চৌধুরীদের বাড়ি;
পোড়োবাড়ি, শুনেছি অনেক আগেই সব লোকজন
বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে কলকাতায়।
মাঝে মাঝে কলেজ ফাঁকি দিয়ে ঘুরে বেড়াতাম
বিকেল অব্দি বসে থাকতাম চৌধুরীদের সান-বাঁধানো ঘাটে,
কখনো বা রঙালয়ে বাবু সেজে মখমল আসনে হেলান দিয়ে বসে
ভাবতাম, বেলোয়ারি ঝাড়ের আড়ালে দাসীহাট থেকে কিনে আনা
পারসিক রমণীদের কষ্ট,অনন্ত কারাগার হতে সূর্যালোকিত ঘরে ফেরার ব্যাকুলতা।
অত্যাচার আর নির্মমতায় বেশ বদনাম ছিল চৌধুরীদের
গাঁয়ের লোকেরা বলতো, ওখানে যাসনে হতভাগা
নির্ঘাত মারা পড়বি,
নিদেন অশরীরী আত্মার ভয়ে দাঁতে কপাটিও লাগতে পারে !
জলসাঘরের দেয়ালে টানোনো নৃত্যরত সলজ্জ নর্তকীর ছবি
দেখে,মনের কোণে জেগে উঠতো কাব্যিক দ্যোতনা
নারী, তুমি মত্ত হাওয়ায় ভেসে চলা মৌসুমী প্রেমিক
আমি ক্লান্ত মরুচারী,
ভীষণ দস্যি ঘূর্ণি অশ্বারূঢ় ;
কখনোবা হৃদয় গহীনে গুমরে কেঁদে উঠতো বীণার ঝঙ্কার
ঘুঙুরের শব্দ কিংবা কলাবতী রাগিনীর বিরহী সুর।
মনে হতো, রাতের জলসায় শেষ নৃপতি আমি
ক্লান্তিহীন এক আগন্তুক, ছুটে চলেছি নিরন্তর পৃথিবীর পথে
কোন এক কামনাসুন্দরীরকে ভালোবাসবো বলে।
লেখক- শিক্ষক, সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ